কক্সবাজারের চকরিয়ায় অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের অব্যাহত হুমকির মুখে আওয়ামী লীগ নেতার পরিবার জিন্মিদশায় চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বর্তমানে হত্যা মামলার আসামির নেতৃত্বে স্থানীয় একটি দখলবাজ সন্ত্রাসী চক্র ওই আওয়ামী লীগ নেতার ভোগদলীয় পৈত্রিক জমি দখলে নিতে এলাকায় অস্ত্রের মহড়া দিচ্ছে। এ অবস্থায় ভুক্তভোগী আওয়ামী লীগ নেতার পরিবার সদস্যরা জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন বলে সাংবাদিক সম্মেলনে অভিযোগ করেছেন ।
মঙ্গলবার ১৭ জানুয়ারি দুপুরে চকরিয়া পৌরসদরে একটি রেস্টুরেন্টে সাংবাদিক সম্মেলন করে পৈত্রিক জমি রক্ষা ও পরিবার সদস্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করণে পুলিশ প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ চেয়েছেন ভুক্তভোগী পরিবারের গৃহকর্তা চকরিয়া পৌরসভা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি আবু তালেব।
সাংবাদিক সম্মেলনে আওয়ামী লীগ নেতা আবু তালেব বলেন, আমার পিতা জীবিত অবস্থায় চাচা শফিকুর রহমানের কাছ থেকে উপজেলার মাছঘাটস্থ পালাকাটা মৌজা এরিয়ায় ২০ শতক জমি ক্রয় করেন। পরে ওই জমির খতিয়ান সৃজনকালে সীটে কম থাকায় ১৬ শতক বা ৪৮ কড়া জমি নিয়ে ২৭৭৪ নং জমাভাগ খতিয়ান সৃজন করা হয়। রেকর্ডীয় মালিক হিসেবে খতিয়ানের ৫০৭/৫১৫ বিএস দাগে আমরা চার ভাই আবু তালেব, আবুল বশর, আবু জাফর, আবু জাহেদ, দুই বোন ছাবেকুন্নাহার, সায়মা সুলতানা রেখা এবং আমাদের মাতা ছেনুয়ারা বেগমের নাম লিপি আছে।
ভুক্তভোগী আবু তালেব বলেন, পৈত্রিক ৪৮ কড়া জমির মধ্যে বর্তমানে নির্মাণাধীন রেললাইন প্রকল্পের কাজের জন্য ২১ কড়া জমি অধিগ্রহণ করে নিয়েছে। আমরা ওই জমির বিপরীতে ক্ষতিপূরণের টাকা এখনো পায়নি। আর অবশিষ্ট থাকা ২৭ কড়া জমি রেকর্ডীয় মালিক হিসেবে ভাই বোন ও আমাদের মাতা বৈধভাবে ভোগদখলে ছিলাম। তদমধ্যে বোন ছাবেকুন্নাহার তার অংশে আড়াই কড়া জমির মালিক হন।
সাংবাদিক সম্মেলনে আওয়ামী লীগ নেতা আবু তালেব বলেন, আমার বোন ছাবেকুন্নাহার সৃজিত খতিয়ানে পৈত্রিক অংশের মাত্র আড়াই কড়া জমির মালিক হলেও সম্প্রতি আমার অপর ভাই বোন ও মায়ের অংশের পুরো জমি দখলে নিতে মরিয়া হয়ে উঠে। তার এইধরনের অন্যায় কাজে আমি বাঁধা দিই। তাতেও নিবারণ না হলে বিষয়টি নিয়ে আমি বাদি হয়ে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, কক্সবাজারে একটি এমআর মামলা (১০১/২৩) দায়ের করি। আমার আবেদন আমলে নিয়ে আদালত উল্লেখিত জমির বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে চকরিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনারকে (ভুমি) ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চকরিয়া থানার ওসিকে নির্দেশ দেন।
ভুক্তভোগী আওয়ামী লীগ নেতা আবু তালেব বলেন, জমি নিয়ে আদালতে মামলা করার জেরে আমার বোন ছাবেকুন্নাহার ও তার ছেলে রিপন আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তারা স্থানীয় দখলবাজ প্রকৃতির সন্ত্রাসী চক্রকে দিয়ে আমাদের পুরো জমি নিতে কয়েকদিন আগে হামলা চালিয়েছে। ওইসময় আমাকে মাটিতে ফেলে গলাচেপে ধরে হত্যার উদ্দেশ্যে আক্রমণ করে। পরিবার সদস্যদের এগিয়ে আসলে তারা পালিয়ে যায়।
তিনি দাবি করেন, পেকুয়া উপজেলার একসঙ্গে দুইজনকে খুনের মামলার অন্যতম আসামি চকরিয়ার পালাকাটা এলাকার নুরুল কবিরের ছেলে মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে অস্ত্রধারীরা বর্তমানে জমি দখলে নিতে এলাকায় অস্ত্রের মহড়া দিচ্ছে।
এখন এসব ভাড়াটে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের অব্যাহত হুমকির মুখে আমার পরিবার সদস্যরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। আমরা জমিতে গেলে প্রকাশ্যে হত্যা করবে বলে হুমকি ধমকি দিচ্ছে। পাশাপাশি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সদ্য পাশ করা আমার ছেলে আবুছালেহ মোহাম্মদ নাছিম, আমার মেয়ে নাজমা সুলতানা, মেয়ের জামাতা আনোয়ারুল ইসলাম কাজলসহ পরিবার সদস্যদের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে মিথ্যাচার ছড়িয়ে সম্মানহাণি করছে। এ ঘটনায় ১৬ জানুয়ারি চকরিয়া থানায় একটি জিডি রুজু করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগ নেতা আবু তালেব বলেন, আমি প্যারালাইজড রোগী। শারিরীকভাবে চলাচলে অক্ষম। এই মুহুর্তে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের হুমকির কারণে নিজের এবং পরিবার সদস্যদের জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত আছি। এ অবস্থায় আপনাদের (সাংবাদিক) মাধ্যমে পৈত্রিক জমি রক্ষা ও পরিবার সদস্যদের নিরাপত্তা চেয়ে প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
সাংবাদিক সম্মেলনে আওয়ামী লীগ নেতা আবু তালেব ছাড়াও তার বৃদ্ধা মাতা ছেনুয়ারা বেগম, ছোটভাই আবুল বশরের স্ত্রী নিলুফার জেসমিন, জমির ওয়ারিশ মৃত দেলোয়ার হোসেনের মেয়ে রেজুতআরা বেগম ও আবু তালেবের পরিবার সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। ##