বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’-এ রূপ নিয়েছে। সিত্রাং মোকবেলায় সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলা প্রশাসন। উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন ও দু'টি পৌর এলাকায় প্রশাসনের উদ্যোগে লোকজন নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে মাইকিং করা হয়েছে। সোমবার (২৪ অক্টোবর) উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এক জরুরী সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রাত থেকে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বৃষ্টি ও বাতাসের গতি বাড়ছে। সিত্রাং মোকাবেলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে প্রশাসন। সভায় উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান এম আলা উদ্দিন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিনহাজুর রহমান, মিরসরাই থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কবির হোসেন, উপজেলা সিপিপি টিম লিডার এম সাইফুল্লাহ দিদার, করেরহাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এনায়েত হোনে নয়ন, জোরারগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রেজাউল করিম মাষ্টার, উপজেলার সকল দপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ, ইউপি চেয়ারম্যানরা উপস্থিত ছিলেন। এ বিষয়ে মিরসরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিনহাজুর রহমান বলেন, সিত্রাং মোকাবেলায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকল ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। চট্টগ্রামে ৬ নং সতর্কতা সংকেত থাকায় উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন ও দুই পৌরসভা ঝুঁকিপূর্ণ। তবে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ধরা হয়েছে উপকূলীয় ওচমানপুর ইউনিয়ন আংশিক, ইছাখালী, কাটাছরা আংশিক, মিঠানালা, মঘাদিয়া, মায়ানী আংশিক ও সাহেরখালী ইউনিয়নকে। উপজেলায় মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে ৪৬টি সাইক্লোন সেন্টার প্রস্তুত রয়েছে। পুলিশ, আনসার, কোস্টগার্ড, সিপিপি, ফায়ার সার্ভিস টিম কাজ করছে। পুরো উপজেলাজুড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে মাইকিং করা হয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার নেতৃত্বে ১৬টি মেডিকেল টিম গঠন করা করা হয়। এদিকে বৃষ্টিতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে গাড়ি চলাচল কমে গেছে। এতে করে সকাল থেকে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে কর্মস্থলমুখী মানুষদের। অনেক মানুষ গাড়ির জন্য ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। সিপিপি মিরসরাই উপজেলার টিম লিডার এম সাইফুল্লাহ দিদার বলেন, ১৬ ইউনিয়ন ও দুই পৌরসভায় আমাদের ৮০ টিম মাঠে থাকবে। ৮০ টিমে এক হাজার ছয় শত স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রয়েছে। যারা নিজ নিজ ইউনিটে প্রচারনার কাজ করছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রঘুনাথ নাহা বলেন, উপজেলায় অধিকাংশ আমন ধান প্রায় পেকে গেছে। দূর্যোগ পরিস্থিতির কারণে দ্রুত ফসকে কেটে ঘরে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কোস্টগার্ড মিরসরাই ষ্টেশনের কন্টিজেন্ট কমান্ডার জহিরুল ইসলাম জানান, মিরসরাইয়ের উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষকে সাবধান করতে মাইকিং করা হচ্ছে। তাদের নিরাপদে থাকতে অনুরোধ করা হচ্ছে। উপকূলে ঝুঁকির মধ্যে থাকা বাসিন্দাদের স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে সতর্ক করা হয়েছে। যদি ঘূর্ণিঝড় আমাদের এলাকায় আঘাত হানে তাহলে তাদের ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে অনুরোধ করা হয়েছে।