মিরসরাইয়ের খৈয়াছড়া ঝরণা রেলক্রসিংয়ে ট্রেনের ধাক্কায় ১১ জন নিহতের ঘটনায় গেইটম্যান সাদ্দাম হোসেনকে আসামী করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যা ৬ টায় তাকে ঘটনাস্থল থেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়। একইদিন রাতে সীতাকুণ্ড রেলওয়ে পুলিশ পাঁড়ির উপ সহকারী পরিদর্শক জহিরুল ইসলাম বাদী হয়ে সাদ্দাম হোসেনকে একমাত্র আাসামী করে মামলা (নং-৩) দায়ের করেন। শনিবার (৩০ জুলাই) দুপুরে তাকে আদালতে নেওয়া হবে।
এদিকে শুক্রবার রাতে ১০টা থেকে ময়নাতদন্ত ছাড়াই মিরসরাইয়ে ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহত ১১ জনের লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করেছে চট্টগ্রাম রেলওয়ে পুলিশ। নিহতদের স্বজনদের লিখিত আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পলিশ এ ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম রেলওয়ে পুলিশ সুপার (এসপি) মো. হাসান চৌধুরী। তিনি বলেন, এটি যেহেতু সড়ক দুর্ঘটনা। সেহেতু ওসি তার ক্ষমতাবলে নিহতদের লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করেছেন।
এর আগে, মিরসরাইয়ে দুর্ঘটনায় নিহত ১১ জনের লাশ ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম
রেলওয়ে থানায় আনা হয়।
নিহত ১১ জনের মধ্যে রয়েছেন মোছহাব আহমেদ হিসাম, ওয়াহিদুল আলম জিসান, সাজ্জাত হোসেন, শান্ত শীল, সমীরুল ইসলাম হাসান, মোস্তফা মাসুদ রাকিব, রিদুয়ান চৌধুরী, জিয়াউল হক সজিব, গোলাম মোস্তফা নিরু, ওয়াহিদুল আলম, ইকবাল হোসেন মারুফ।
লাশ হস্তান্তরের সময় চট্টগ্রাম রেলওয়ে থানায় ছিলেন, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এমএ সালাম, চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন মো. ইলিয়াছ চৌধুরী, রেলওয়ে পুলিশ সুপার মো. হাসান চৌধুরীসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
এদিকে লাশ হস্তান্তরের সময় রেলওয়ে থানা এলাকায় এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণ হয়। কান্নায় ভেঙে পড়েন স্বজনরা। একে একে ১১টি অ্যাম্বুলেন্সে করে এসব লাশ বাড়িতে নিয়ে যান স্বজনরা।
এরআগে, শুক্রবার (২৯ জুলাই) দুপুরে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা মহানগর প্রভাতী ট্রেন মিরসরাইয়ে পর্যটক বহনকারী একটি মাইক্রোবাসকে ধাক্কা দেয়। হাটহাজারীর আমান বাজার এলাকায় অবস্থিত আর অ্যান্ড কোচিং সেন্টার থেকে মিরসরাইয়ে মাইক্রোবাসে করে বেড়াতে গিয়েছিলেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনায় আহত সাত জন চমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
দুর্ঘটনায় আহত জুনায়েদ কায়সার ইমন বলেন, গাড়িটিতে চালক- হেলপারসহ ১৮ জন ছিলাম। তার মধ্যে ৪ জন কোচিংয়ের শিক্ষক, ১২ জন শিক্ষার্থী ও ২ জন চালক ও সহযোগী ছিল।
আহত ইমন চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ২৪ নম্বর সার্জারি ওয়ার্ডের ১১ নম্বর সিটে চিকিৎসাধীন আছেন।
সীতাকুণ্ড রেলওয়ে পুলিশ পাঁড়ির ইনচার্জ ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই খোরশেদ আলম বলেন, ট্রেন দুর্ঘটনার সময় সাদ্দাম হোসেন সেখানে ছিলো না ও গেইটবার না ফেলার বিষয়টি প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে। শনিবার দুপুরে তাকে আদালতে নেওয়া হবে।