আজ বৃহস্পতিবার ২ মে ২০২৪, ১৮ই বৈশাখ ১৪৩১

ওদের চোখে এখন শুধুই ‘অন্ধকার’

নিজস্ব প্রতিবেদক : | প্রকাশের সময় : শনিবার ১১ জুন ২০২২ ০৮:৪২:০০ অপরাহ্ন | জাতীয়

ট্রাকচালক রজব মণ্ডলের বাড়ি ফরিদপুর জেলার ভাসানচর গ্রামে। হা-মিম গ্রুপের কাভার্ডভ্যান চালাতেন রজব। সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণের দিন ঢাকা থেকে তৈরি পোশাক নিয়ে এসেছিলেন ডিপোতে। ওইদিন রাতে বিস্ফোরণের সময় ছিলেন ঘটনাস্থলেই। বিস্ফোরণে চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি কানের পর্দাও ফেটেছে তার। এখন কানে যেমন শুনছেন না, ঝাপসা দেখছেন চোখেও। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের ৩১নং ওয়ার্ডে চিকিৎসা নিচ্ছেন তিনি।

হাসপাতালেই কথা হয় রজবের সঙ্গে। তিনি বলেন, বিএম ডিপোতে হা-মিম গ্রুপের চারটি কাভার্ডভ্যানে পণ্য আসে ওইদিন। দুটি আনলোড হয়েছিল। বাকি দুটি রাতে আনলোড হওয়ার কথা ছিল। এর মধ্যে আগুন লাগে। আমি দূর থেকে দেখছিলাম। আধঘণ্টা পর ফায়ার সার্ভিস আসে। ফায়ার সার্ভিস পানি দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আগুন বাড়তে থাকে। একপর্যায়ে বিস্ফোরণ হয়। আমি প্রাণে বেঁচে গেলেও আমার সঙ্গে থাকা একজন পুড়ে ছাই হয়ে গেছেন। আরেকজন আইসিইউতে।

রজব বলেন, বিস্ফোরণের বিকট শব্দের পর থেকে আমি কানে শুনছি না। আবার চোখেও ঝাপসা দেখছি। শুধু কান কিংবা চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তা নয়, শরীরের কিছু অংশ পুড়েও গেছে।

খুলনার দৌলতপুর থানার নওশাপাশা মানিকতলা গ্রামের মো. আমির হোসেন পেশায় ট্রাকচালক। খুলনা থেকে পাটপণ্য নিয়ে এসেছিলেন বিএম কনটেইনার ডিপোতে। বিস্ফোরণে তার শরীরও পুড়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে চোখ।

চমেক হাসপাতালের বেডে শুয়ে আমির হোসেন বলেন, আগুন লাগার পর আমরা দূর থেকে দেখছিলাম। একপর্যায়ে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ হয়। আগুনের ঝলকানিতে আমার শরীর পুড়ে যায়। এরপর থেকে খোলা চোখে দেখতে পাচ্ছি না। হাসপাতাল থেকে কালো চশমা দেওয়া হয়েছে।

শুধু রজব কিংবা আমির নন, সীতাকুণ্ডের অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ৩৩ জন চোখের সমস্যা নিয়ে চমেক হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। শরীরের অন্য অংশ পুড়েছে, পাশাপাশি চোখও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের। তবে হাসপাতালের চিকিৎসকেন্দ্রের আন্তরিকতায় অনেকে ধীরে ধীরে সেরে উঠছেন। আবার কারও চোখের কর্নিয়া ঘোলাটে হয়ে আসছে।

শনিবার (১১ জুন) বেলা ১১টা থেকে হাসপাতালে থাকা সীতাকুণ্ডের ঘটনায় আহত রোগীদের দেখছিলেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চক্ষু বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. তনুজা তানজিন। হাসপাতালের ৩১নং ওয়ার্ডে দুপুরে কথা হয় এ চিকিৎসকের সঙ্গে।