উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হয়েছে। সারাদেশের বিভিন্ন কেন্দ্রে একযোগে বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টায় এ পরীক্ষা শুরু হয়েছে। করোনা মহামারির কারণে নির্ধারিত সময়ের প্রায় ৮ মাস পর শুরু হলো এই পরীক্ষা। এইচএসসিতে ৫টি এবং আলিমে একটি বিষয়ের মাধ্যমে আজ শিক্ষার্থীরা এই পরীক্ষায় বসেছে। করোনা পরিস্থিতির কারণে গত বছর পরীক্ষাটি হয়নি। শিক্ষার্থীদের দেওয়া হয়েছিল ‘অটোপাশ’।
পরীক্ষার সময় তিন ঘণ্টার পরিবর্তে দেড় ঘণ্টা। অটিস্টিক ও প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থীরা অতিরিক্ত ১৫ মিনিট সময় বেশি পাচ্ছে।
সাধারণত প্রতিবছর এপ্রিলে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। সেই হিসাবে ৮ মাস পরে পরীক্ষা শুরু হলো। অন্যান্য বছর পরীক্ষা শেষ হওয়ার ৬০ দিনের মধ্যে ফল দেওয়া হলেও এবার এক মাস পর দেওয়া হবে বলে জানা গেছে। পরীক্ষার্থীদের সুরক্ষা নিশ্চিতে ইতোমধ্যে টিকা দেওয়া হয়েছে। এরপরও স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে।
পরীক্ষা উপলক্ষ্যে ৩ জানুয়ারি পর্যন্ত দেশের সব কোচিং সেন্টার বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এবারের পরীক্ষায় সর্বমোট ১৩ লাখ ৯৯ হাজার ৬৩০ জন অংশ নিচ্ছে। তাদের মধ্যে ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এইচএসসিতে অংশ নিচ্ছে ১১ লাখ ৩৮ হাজার ১৭ জন। এর মধ্যে ছাত্র ৫ লাখ ৬৩ হাজার ১১৩ এবং ছাত্রী ৫ লাখ ৭৪ হাজার ৯০৪ জন।
মাদ্রাসা বোর্ডের অধীনে আলিম পরীক্ষা দিচ্ছে ১ লাখ ১৩ হাজার ১৪৪ জন। এর মধ্যে ছাত্র ৬১ হাজার ৭৩৮ এবং ছাত্রী ৫১ হাজার ৪০৬ জন। এছাড়া এইচএসসি (বিএম/ ভোকেশনাল) পরীক্ষা দিচ্ছে ১ লাখ ৪৮ হাজার ৪৬৯ জন। এতে ছাত্র ১ লাখ ৪ হাজার ৮২৭ এবং ছাত্রী ৪৩ হাজার ৬৪২ জন।
করোনা পরিস্থিতির বাস্তবতায় এইচএসসিতে বিজ্ঞান, মানবিক ও বিজনেস স্টাডিজসহ বিভিন্ন বিভাগে তিনটি করে নৈর্বাচনিক বিষয়ে পরীক্ষা হচ্ছে। বাংলা-ইংরেজির মতো আবশ্যিক বিষয়ে পরীক্ষা হবে না। মাদ্রাসায় আলিমে অবশ্য কিছু আবশ্যিক বিষয়েও পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে। একই প্রক্রিয়া এইচএসসির (বিএম) ক্ষেত্রেও নেওয়া হয়েছে। এই পরীক্ষা নিচ্ছে কারিগরি শিক্ষা বোর্ড।মাদ্রাসায় আজ সকালে কুরআন মাজিদ পরীক্ষা হলেও এইচএসসিতে উভয় বেলা পরীক্ষা আছে। এতে সকালে পদার্থবিজ্ঞান প্রথম পত্র আর বিকালে সাধারণবিজ্ঞান এবং খাদ্য ও পুষ্টিবিজ্ঞান (রসায়ন-তত্ত্বীয়) প্রথম পত্র, সাধারণবিজ্ঞান এবং খাদ্য ও পুষ্টিবিজ্ঞান (জীববিজ্ঞান-তত্ত্বীয়) প্রথমপত্র, খাদ্য ও পুষ্টি প্রথম পত্র, লঘু সংগীত (তত্ত্বীয়) প্রথম পত্র।
এসএসসির মতোই এই পরীক্ষাও হচ্ছে সংক্ষিপ্ত (কাস্টমাইজড) সিলেবাসে। অনুরূপভাবে ১০০-এর পরিবর্তে ৫০ নম্বরে নেওয়া হচ্ছে পরীক্ষা। তবে পরীক্ষায় প্রশ্নের বিকল্পসংখ্যা আগের মতোই থাকছে। যেমন: বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীদের আগে ৮টি সৃজনশীল প্রশ্নের মধ্যে ৫টির উত্তর দিতে হতো। এখন ৮টির মধ্যে ২টির উত্তর দিতে হবে। মানবিক এবং বিজনেস স্টাডিজে ১১টির মধ্যে উত্তর করতে হবে ৩টি। এমসিকিউ-এর ক্ষেত্রে মানবিক ও বিজনেস স্টাডিজে ৩০টির মধ্যে ১৫টি আর বিজ্ঞানে ২৫টির মধ্যে ১২টির উত্তর করতে হবে।