ঘড়ির কাটা ঠিক যখন বারটা ছুঁই ছুঁই। মধ্যরাতের নীরবতা ভেঙ্গে জেগে উঠলো পুরো চট্টগ্রাম নগরী। মুহু-মুহু বাজির শব্দে-আলোতে আলোকিত হয়ে উঠে রাতের আকাশ। নগরীর প্রতিটি বাড়ির ছাদ হয়ে উঠে উৎসবের মঞ্চ। আলো-আর বাজির শব্দে অন্যরুপ ধারণ করে রাতের নগরী। অপর দিকে নগর জুড়ো কঠোর নিরাপত্তা বলয় সৃষ্টি করেছে পুলিশ। বারটার আগেই হোটেল-মোটেল বন্ধ করে দেওয়া হয়। পর্যটন কেন্দ্রগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয় সৃর্য ডুবার আগেই।
এদিকে আরেকটা নতুন সকালের অপেক্ষায় নগরীর মানুষ। নতুন সূর্য উঁকি দিচ্ছে পুরাতনের গ্লানি ভুলে। হাসি-কান্না, আনন্দ-বেদনায় কেটে গেলো আরও একটি বছর। স্বাগত আসছে ২০২২। ৩৬৫ দিনের এই হিসেব-নিকেশ চলবে অনন্তকাল। শুভ নববর্ষ।
কথায় বলে, ‘যায় দিন ভালো; আসে দিন মন্দ’। যেদিন গেছে; তা হোক সফলতার কিংবা ব্যর্থতার। অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে আগামী দিনগুলো আলোকিত হবে নির্ভুলভাবে। অনেক উত্থান-পতন পেরিয়ে অতীতের খাতায় জমা হচ্ছে ২০২১ সাল। বিগত সময়ের সব দুঃখ, কষ্ট, হতাশা, গ্লানি ভুলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশও বরণ করে নিচ্ছে ২০২২ সালকে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন, মুজিব শতবর্ষ উদযাপন, করোনা মহামারিসহ নানা কারণে আলোচিত-সমালোচিত ২০২১ বিদায় নিয়েছে। পাশাপাশি পদ্মা সেতু, মেট্রো রেলের মতো প্রকল্প চালু হওয়াসহ নানা কারণে ২০২২ সাল খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বছর। নতুন বছরে অগ্রগতির পথে সব জটিলতা দূর হবে এটাই সবার প্রত্যাশা। মহামারির ধাক্কা সামলে নিয়ে বাংলাদেশ দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাক।
রাজনৈতিক যোগ-বিয়োগ, ধর্মীয় সম্প্রীতি-সহিংসতা, আন্তর্জাতিক শুভ-মন্দ দৃষ্টি বারবার হোঁচট খেলেও আবারও উঠে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। বিপদসংকুল পথেই দীপ্ত পায়ে হেঁটেছে। সংস্কৃতির ওপর থাবা আসলেও থমকে যায়নি দেশ।
আজ বাংলার মানুষ স্বাগত জানাচ্ছে নতুন সূর্যকে। বাংলার সর্বস্তরের মানুষের জন্য শুভময় সফলতম বছর আসুক- এ প্রার্থনা করবে সব ধর্মের মানুষ।
সবশেষেও বলতে হয়, ‘মুকুলিত সব আশা,/ স্নেহ, প্রেম, ভালবাসা,/ জীবনে চির স্মৃতি হয়ে রয়। পুরাতন বর্ষ বিদায় লয়।/নববর্ষের আগমন হয়।’ সব আশা-স্নেহ-ভালোবাসা স্মৃতি হয়ে থাকুক। আগামী আসুক পুষ্পশোভিত হয়ে। প্রজ্বলিত সূর্যের আলোকচ্ছটায় আলোকিত হোক বিশ্ব। বিশ্বের যাবতীয় মানুষের কল্যাণ হোক। বাংলাদেশ উত্তরোত্তর সফলতার দিকে এগিয়ে যাক। স্বাগত ২০২২।