আজ সোমবার ৬ মে ২০২৪, ২২শে বৈশাখ ১৪৩১
ওয়ার্ল্ডফিশ-ওয়াইসিসি এর যৌথ আয়োজন

ইনানী সমুদ্র সৈকতে পরিচ্ছন্নতা অভিযান, ৩০০ কেজি বর্জ্য অপসারণ

ইমাম খাইর, কক্সবাজার : | প্রকাশের সময় : বুধবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০২:১৫:০০ অপরাহ্ন | কক্সবাজার প্রতিদিন

প্লাস্টিক বর্জ্যে বিপন্ন সমুদ্রের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে সচেতনতা তৈরির লক্ষে কক্সবাজারের অন্যতম পর্যটনস্থান ইনানী নারিকেল বাগান সংলগ্ন সমুদ্রসৈকতে পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালিত হয়েছে। ঘন্টাখানেকের পরিচ্ছন্নতা অভিযানে প্রায় ৩০০ কেজি বর্জ্য অপসারণ করেছে স্বেচ্ছাসেবীরা।

 

১৯ সেপ্টেম্বর “আন্তর্জাতিক উপকূল পরিচ্ছন্নতা দিবস ২০২৩” উপলক্ষ্যে পরিচ্ছন্নতা অভিযানের পাশাপাশি জনসচেতনতামূলক র‍্যালি, বৃক্ষ রোপন ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। 

380204152_747760967115387_6665705495107673736_n

ইউএসএআইডির অর্থায়নে ওয়ার্ল্ডফিশের ইকোফিশ-২ প্রকল্প এবং ইয়ুথ কনজারভেশন করপস (ওয়াইসিসি) এর যৌথ আয়োজনে এই কর্মসূচি স্থানীয় বাসিন্দাদের পাশাপাশি আগত পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।

 

ইকোফিশ-এর রিসার্চ এসোশিয়েট এসকে মোঃ সাইফ উল হক চিশতী‘র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন উখিয়া উপজেলা ফিশারিজ অফিসার মোঃ সৌরভ মাহমুদ এবং ওয়াইসিসি ফিল্ড কো-অরডিনেটর মোঃ রফিকুল ইসলাম।

380263201_833677095057277_266537713380055616_n

ওয়াইসিসি’র ৪০ জন প্রশিক্ষণার্থীদের মৌন র‍্যালির মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়।

 

চলতি পথে “সাগর-পাহাড়-বন-পরিবেশ, আমরা বাঁচালেই সাজবে দেশ” প্ল্যাকার্ড সম্বলিত র‍্যালিটি ইনানী বাজার এবং ইনানী সমুদ্র সৈকত ঘুরে নারিকেল বাগান সংলগ্ন সমুদ্র সৈকতে মিলিত হয়।

 

এরপর ইকোফিশ-২ প্রকল্পের ১৪ জন ব্লু গার্ড সদস্য, ওয়াইসিসি’এ ৪০ জন তরুণ প্রশিক্ষণার্থী, সোনারপাড়া ঘাট কমিটির সদস্যবৃন্দ, স্থানীয় ৩৫ জন জেলে, ইকোফিশ-২ কর্মকর্তাগণ এবং ওয়াইসিসি’র কর্মকর্তাগণের উপস্থিতিতে শুরু হয় প্রাণবন্ত আলোচনা অনুষ্ঠান। 

379512773_297853056202253_8079445120028564608_n

অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী সকলে সমুদ্রে জীব বৈচিত্র্য রক্ষা ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় ইকোফিশ-২ প্রকল্পের সাথে একযোগে কাজ করতে এবং সমুদ্রে প্লাস্টিক বর্জ্য ফেলে পরিবেশের ক্ষতি না করতে অঙ্গিকার করেন।

 

সভায় বক্তারা বলেন, সমুদ্র আমাদের সম্পদ, অথচ আমাদের কারণেই সমুদ্র এবং সামুদ্রিক সম্পদগুলো আজ বিপন্ন। দিন দিন সমুদ্রে বাড়ছে প্লাস্টিক বর্জ্যের পরিমাণ, যা বিপন্ন করছে এর জীববৈচিত্র্যকে, এতে দুষিত হচ্ছে আমাদের বিশাল সমুদ্র উপকূল। এসব ক্ষেত্রে সমুদ্রে বেড়াতে আসা পর্যটক এবং গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়া জেলেদের সচেতনতার কোনো বিকল্প নেই। তাদের ফেলে আসা প্লাস্টিক, জাল ইত্যাদি অপচনশীল বর্জ্য পুরো ইকো সিস্টেমকে হুমকির মুখে ফেলছে। উপকূলীয় এলাকায় জেলেরা যত বেশি সচেতন হবে, সমুদ্র সম্পদ সংরক্ষণ ততটাই উপযোগী হবে।

 

আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে সভায় উপস্থিত সবার মধ্যে উপকূল পরিচ্ছন্নতা দিবস কুইজে বিজয়ী ১০ জনকে পুরস্কৃত করা হয়। 

 

সভার শেষ পর্যায়ে স্থানীয় জেলেদের মধ্যে ইকোফিশ-২ কর্মকর্তাগণ নিম গাছের চারা বিতরণ করেন।

 

ইনানী সমুদ্র সৈকতের এক কিলোমিটার সমুদ্র সৈকতজুড়ে প্লাস্টিক বর্জ্য, জেলেদের ফেলে যাওয়া প্লাটিকের জাল এবং অন্যান্য বর্জ্য – এই তিন ধরণের বর্জ্য আলাদাভাবে পরিষ্কার করা হয়। 

 

এক ঘন্টার এই পরিচ্ছন্নতা অভিযানে প্রায় ৩০০ কেজি বর্জ্য সৈকত থেকে অপসারণ করে ওয়াইসিসি প্রশিক্ষণার্থী এবং ব্লু গার্ডের সদস্যরা।

 

ইকোফিশের এই আয়োজনকে স্বাগত জানিয়েছে পরিবেশ সংরক্ষণ নিয়ে কাজ করা ওয়াইসিসি প্রশিক্ষণার্থীরা। এমন অনুষ্ঠানের সঙ্গে আগামীতেও থাকার আগ্রহ জানিয়েছে তারা।

 

উল্লেখ্য, ইউএস ফরেস্ট সার্ভিস এবং ইউএসএইড এর যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত কমিউনিটি পার্টনারশিপ টু স্ট্রেনদেন সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট (কম্পাস) প্রকল্পের আওতায় ওয়াইসিসি কক্সবাজার এবং বান্দরবানের তরুণ-তরুণীদের নিয়ে কাজ করছে। গত তিন বছর ধরে (ওয়াইসিসি) স্থানীয় সংস্থা ইপসা, এআইটি কক্সবাজার, তাজিংডং এবং গ্রিণ সেভার্স এর সহযোগিতায় প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণসহ কারিগরি দক্ষতা উন্নয়নের জন্য প্রশিক্ষণ প্রদান করছে। সাধারণত ১৮-২৪ বছর বয়সী সুবিধাবঞ্চিত এবং পড়াশোনাবঞ্চিত তরুণ-তরুণী ওয়াইসিসির এই প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণের সুযোগ পায়।