কক্সবাজার জেলার সর্ববৃহৎ বেসরকারি মেধা যাচাই পরীক্ষা আইডিয়াল ট্রাস্ট পিইসি মেধাবৃত্তি পেয়েছে ২০৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৪৩৫ শিক্ষার্থী।
বৃহস্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর) দুপুরে সদরের পিএমখালীর বাংলাবাজার আইডিয়াল ইনস্টিটিউট স্কুল এন্ড কলেজ প্রাঙ্গণ বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে। বিজয়ের মাসের শেষান্তে স্কুল আঙ্গিনায় ফুলপাখিদের মিলনমেলা বেশ দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সন্তানদের সঙ্গী হন মা-বাবা, আত্মীয়-স্বজনেরাও। সংবর্ধনার পাশাপাশি বৃত্তিপ্রাপ্তরা পেয়েছে নগদ টাকা, ক্রেস্ট ও সনদপত্র।
বর্ণাঢ্য আয়োজনে প্রধান অতিথি ছিলেন কক্সবাজার জেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ নাসির উদ্দীন।
তিনি বলেন, বাচ্চাদের বইয়ের পোকা বানিয়ে লাভ নাই। জীবনটাকে সাজাতে হবে। সন্তানদের নৈতিক, যোগ্য ও দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়তে পারলে পড়ালেখার সার্থকতা।
জেলা শিক্ষা অফিসার বলেন, উন্নত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি করালে যে ছাত্র ভালো হবে, এমন কথা নেই। ভালো-মন্দ পুরোপুরি প্রতিষ্ঠানের উপর নির্ভরশীল নয়। মা-বাবা সঠিক যত্ন না পেলে অনেক সন্তান বিপথে চলে যায়।
অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, সন্তানকে ১ নং হওয়ার জন্য চাপ দিবেন না। পড়ার প্রতি উৎসাহ যোগাবেন। ভালো কাজের কথা স্মরণ করিয়ে দিবেন। ধর্মীয় অনুশাসন পালনে উৎসাহ দিবেন।
বেশি শাসন নয়, বাচ্চাদের সঙ্গে বন্ধুসুলভ আচরণের আহবান জানান মোঃ নাসির উদ্দীন।
সরকারের নতুন কারিকুলামের বিষয়ে শিক্ষা অফিসার বলেন, এই কারিকুলামে পরিপূর্ণ শিক্ষা রয়েছে। একজন শিক্ষার্থীকে কিভাবে মানবিক ও দক্ষ করা যায়, সেই শিক্ষা নতুন কারিকুলামে রয়েছে। কর্মমুখী ও দক্ষতামূলক শিক্ষার কারণে কেউ বেকার থাকবে না।
অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন আইডিয়াল ট্রাস্টের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান।
বৃত্তি পরীক্ষার সমন্বয়ক জিল্লুর রহমানের সঞ্চালনায় পুরস্কার বিতরণের পূর্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন, কক্সবাজার আদালতের স্পেশাল পিপি এডভোকেট সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউর রহমান, পিএমখালি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিম, মেম্বার সাইফুল ইসলাম সোহাগ, সমাজ সেবক জাফর সাদেক।
অনুষ্ঠানে আইডিয়ালের প্রাক্তন কৃতি শিক্ষার্থীরা অনুভূতি প্রকাশ করে বক্তব্য দেন।
এ সময় বৃত্তি পরীক্ষার সচিব উম্মে সাঈদা সালমা, যুগ্ম সচিব এম.দেলোয়ার হোসেন, শিক্ষক আবুল বশর, জহিরুল মোস্তফা, নাজিবুল্লাহ, হাশেম রিয়াদ, সালাহ উদ্দিন আইযুবি, এমরান রহমান, মোশাররফ হোসেন, মোহাম্মদ তারেক, আবদুল মাবুদসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানগণ উপস্থিত ছিলেন।
বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানে অতিথিসহ যারা উপস্থিত ছিলেন, নানাভাবে সহযোগিতা ও পরামর্শ দিয়েছেন, সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান। সেই সঙ্গে শিক্ষক ও পরিচালনা পর্ষদের সদস্যসহ সবাইকে ধন্যবাদ জানান।
আইডিয়াল ইনস্টিটিউটের রয়েছে সুপরিসর নিজস্ব ক্যাম্পাস ও শিক্ষার মনোরম পরিবেশ। বিষয়ভিত্তিক দক্ষ ও অভিজ্ঞ শিক্ষক মন্ডলী এবং সুযোগ্য পরিচালনা পর্ষদের কারণে আইডিয়াল ইনস্টিটিউট বর্তমানে জেলার অন্যতম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরিচিতি লাভ করেছে।
উল্লেখ্য, ২০০৮ সালে মাত্র ১৩ জন ছাত্র দিয়ে আইডিয়াল ইনস্টিটিউটের যাত্রা। বর্তমানে প্রায় ১ হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে। ২০১৫ সালে চালু হয় জেলার সর্ববৃহৎ বেসরকারি বৃত্তি পরীক্ষা আইডিয়াল ট্রাস্ট পিইসি মেধাবৃত্তি। এই বৃত্তি মেধাবী শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের নিকট অন্যতম আকর্ষণে পরিণত হয়েছে। শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে এই ধারা অব্যাহত থাকুক, এমনটি প্রত্যাশা সবার।