কক্সবাজার সদরের ঝিলংজা বীজ উৎপাদন খামার (বিএডিসি) এর দক্ষিণে বিস্তীর্ণ পাহাড়জুড়ে আগাছা, ঝোপঝাড়। ছেয়ে গেছে বনজঙ্গল। যেখানে কিশোরগ্যাং ও টার্মিনাল শ্রমিকদের আড্ডা বসতো। আশ্রয় নিতো বখাটে, ছিনতাইকারীসহ বিভিন্ন অপরাধীচক্র। মাদকসেবীদের ‘নিরাপদ আস্তানায়’ পরিণত হয় সরকারি অনাবাদি জমিটি। জঙ্গল ও পাহাড় বেষ্টিত হওয়ায় প্রায় ১০ একর জমি এতদিন দৃষ্টিসীমার বাইরে ছিল। যে কারণে মাদকসেবী, অপরাধীদের তাড়ানো যায় নি। তাদের ধরা কিংবা শনাক্ত করাও কঠিন হয়ে পড়ে। অবশেষে একটি উদ্যোগেই পাল্টে গেছে সেই আগের চিত্র। অপরাধীচক্রের আনাগোনা বন্ধ হয়ে গেছে। মাদকসেবীদের আস্তানা ‘নাস্তানাবুদ’। বিএডিসি পাহাড়ের ঝোপঝাড় কেটে পরিস্কার। রুপন করা হয়েছে প্রায় ৩ হাজার ফলজ গাছ। দীর্ঘদিনের পতিত ভূমিতে শোভা পাচ্ছে আম, পেয়ারা, মাল্টা ও কলাসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ। রুপন করা হয়েছে শাক সবজি। ‘পরিত্যক্ত জমি’ এখন ‘আবাদ ভূমি’তে পরিণত হয়েছে। আগামী ২/৩ বছরের মধ্যে যার সুফল পাবে এলাকাবাসী। ফলন দেখে মুগ্ধ হবে অপরাধীরাও। ঝিলংজা বীজ উৎপাদন খামার (বিএডিসি) এর সিনিয়র সহকারি পরিচালক শাহ্ মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন বলেন, দেশের মধ্যে অন্যমত একটি ‘ভিত্তি বীজ’ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ঝিলংজা বীজ উৎপাদন খামার (বিএডিসি)। পাকিস্তান আমল থেকেই প্রতিষ্ঠানটি ‘ভিত্তি বীজ’ উৎপাদন করে আসছে। ‘প্রত্যায়িত বীজ’ উৎপাদনের মাধ্যমে খাদ্য উৎপাদনের জন্য কৃষকদের মাঝে তা পৌঁছিয়ে দেওয়া হয়। কক্সবাজার কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল সংলগ্ন ঝোপঝাড়, অনাবাদি জায়গাটি নানা জাতের অপরাধীচক্রের আড্ডায় পরিণত হচ্ছিল। রাস্তায় ছিনতাই করে জঙ্গলে ঢুকে যেত। মাদক সেবীরা অনেকটা ‘নিরাপদ স্থান’ হিসেবে বেছে নেয় পরিত্যক্ত এই জমি। তিনি বলেন, বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ ও স্থানীয়দের সঠিক তথ্যের ভিত্তিতে জঙ্গল পরিস্কার করে বনায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করি। ‘এক ইঞ্চি জায়গাও যাতে অনাবাদি না থাকে’ প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণাকে বাস্তবায়নের পরিকল্পনা নিয়েছি। বিএডিসি অফিস সংলগ্ন প্রায় সাড়ে ১০ একর অনাবাদি জায়গা রয়ে গেছে। ইতোমধ্যে ৫ একর মতো চাষাবাদের আওতায় নিয়ে এসেছি। সেখানে আম, পেয়ারা, মাল্টা ও কলা গাছসহ বিভিন্ন প্রজাতির ফলজ গাছ রুপন করেছি। মাত্র শুরু করলাম। দেখতে খুব সুন্দর লাগছে। ২/৩ বছরের মাথায় পরিত্যক্ত জায়গাটি একটি দর্শনীয় স্থানে পরিণত হবে। ফলফলাদির সুফল ভোগ করবে সবাই। উপকৃত হবে এলাকাবাসী। পরিবর্তনের ছোয়ায় মুগ্ধ হবে অপরাধীরাও।