সৌদি আরবে অবস্থানরত প্রায় তিন লাখ রোহিঙ্গাকে পাসপোর্ট দিতে বা নবায়ন করতে অনুরোধ জানানো হয়েছে বাংলাদেশকে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ জানিয়েছে, বিদ্যমান আইন অনুযায়ী এনআইডিসহ যা যা লাগবে, সেগুলো দেখিয়ে যারা পাসপোর্ট পেয়েছে ও নবায়নের যোগ্য, তাদের সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।
আজ রোববার সৌদি আরবের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী ড. নাসের বিন আব্দুল আজিজ আল দাউদের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করে। এ সময় এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।
বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘সৌদিতে রোহিঙ্গারা তিন প্রজন্ম ধরে অবস্থান করছেন। পাকিস্তান আমল থেকে তারা সেখানে আছেন। বাংলাদেশ থেকে যেসব রোহিঙ্গা বিশেষ বিবেচনায় সেখানে গিয়েছিলেন তাদের বিষয়ে কী করা যায় সেটা খতিয়ে দেখা হবে। একইসঙ্গে রোহিঙ্গাদের তাদের দেশে ফেরত পাঠানোর বিষয়টি জোরদার করতে সৌদির সহযোগিতা চেয়েছি আমরা।’
তিনি আরও বলেন, ‘উভয় দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে তথ্য আদান-প্রদান বাড়াতে ‘নিরাপত্তা সহযোগিতা’ এবং হজযাত্রীদের সুযোগ সুবিধা বাড়াতে বৈঠকে ‘রোড টু মক্কা’ নামে দুটি সমঝোতা স্মারক চুক্তি সই হয়েছে। সৌদি প্রতিনিধি দল তাদের দেশে দক্ষ শ্রমিক পাঠানোর ওপর জোর দিয়েছে। আমরা জানিয়েছি, শ্রমিকদের দক্ষ করে তুলতে বাংলাদেশ ট্রেনিং ইনস্টিটিউট গড়ে তুলেছে। একইসঙ্গে বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা ব্যবস্থা সহজ করার অনুরোধ করা হয়েছে।’
বর্তমানে সৌদিতে প্রায় ২৭ লাখ ৬০ হাজার বাংলাদেশি নাগরিক চাকরি ও ব্যবসাসহ বিভিন্ন পেশায় কাজ করছেন। বৈঠকে সাইবার সিকিউরিটি নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ সাইবার চ্যালেঞ্জ। সৌদি কর্তৃপক্ষও এটা মনে করে। সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় যৌথভাবে কীভাবে কাজ করা যায় সেটা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’
এ সময় তার সঙ্গে সৌদি আরবে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী উপস্থিত ছিলেন। সৌদি স্বরাষ্ট্র উপমন্ত্রী ড. নাসের বিন আব্দুল আজিজ আল দাউদের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলের সদস্যরা দুই দিনের সফরে গতকাল শনিবার বাংলাদেশে আসেন। প্রথম দিন তারা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।
এর আগে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করে সৌদি স্বরাষ্ট্র উপমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধি দলটি। প্রধানমন্ত্রী পরে অর্থ পরিশোধ করার শর্তে সৌদির কাছে তেল চেয়েছেন। এ সময় রোহিঙ্গা সংকট সমাধানেও দেশটির সহায়তা চেয়েছেন শেখ হাসিনা।