ফটিকছড়ির দাঁতমারায় হেয়াঁকো রহমানিয়া দাখিল মাদ্রাসা ১৯৭৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠার ৪৮ বছর পেরিয়ে গেলেও স্থানীয়দের অনুদানের টাকায় নির্মিত দুইতলা জরাজীর্ণ টিনশেড ঘরেই চলছে শিক্ষা কার্যক্রম। সামান্য গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠে উপরের তলার শ্রেণি কক্ষের শিক্ষার্থীরা। এতে হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে অনেকে হাসপাতালে শয্যাশায়ী হয়। এ নিয়ে বিপাকে আছেন মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা, অভিভাবক-অভিভাবিকারা। জানা গেছে, মাদ্রাসাটিতে বর্তমান শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৬০৩ জন। গড়ে প্রতিদিন উপস্থিত থাকে ৩৫০ থেকে ৪০০ জন। মাদ্রাসায় প্রতিবছর নতুন করে ভর্তি হয় ১৫০ জনের মতো শিক্ষার্থী। প্রতিবছর দাখিল ও আলিম পরীক্ষায় অংশ নেয় ১০০ জনের অধিক শিক্ষার্থী। এসব শিক্ষার্থী বছরের পর বছর চরম দুর্ভোগ নিয়ে লেখাপড়া করছে প্রতিষ্ঠানটিতে। ১৯৭৫ সালে মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ৪৮ বছর পেরিয়ে গেলেও সেই জরাজীর্ণ টিনশেড ঘরসহ সরকারি কোন অনুদান মিলেনি বলে দাবী তুলেছে মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটি। সরেজমিনে দেখা যায়, মাদ্রাসায় একটি দুইতলা ভবন রয়েছে। যা স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তি, সামাজিক সংগঠনসহ বিভিন্ন জনের অনুদানের টাকায় নির্মিত। ভবনের নিচের তলায় মাদ্রাসা প্রধানের অফিস, শিক্ষকের কমনরুম, বঙ্গবন্ধু কর্ণার, বাকি চারটি কক্ষে শ্রেনীর কার্যাক্রম চলে। উপরে তলায় জরাজীর্ণ সেমিপাকা ভবন। খোলা ভবনে বাঁশ বেত আর টিনের বেড়া দিয়ে কয়েকটি শ্রেণীকক্ষ করা হলেও তা কোনভাবেই পর্যাপ্ত নয়। নতুন ভবন যেন সময়ের দাবী। শিক্ষক ও পরিচালনা কমিটির সদস্যরা জানায়, ২০২২ সালের ঘোষিত দাখিল পরিক্ষার ফলাফলের তালিকায় ফটিকছড়ি উপজেলার মাদ্রাসাগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। এভাবে প্রতিবারই সেরা পাঁচের তালিকায় থাকে এই মাদ্রাসাটি। তবে তারা দাবী করেন স্বাধীনতার ৫১ বছরেও এই মাদ্রাসায় সরকারি কোন বড় অনুদান মিলেনি। ভবনের সংকটে ও শ্রেণীকক্ষের অভাবে পাঠ্যশিক্ষা ব্যাহত হচ্ছে। তারা সরকারি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করে বলেন, এলাকায় দ্বীনি শিক্ষা প্রচার ও প্রসারে মাদ্রাসায় একটি বহুতল ভবনের প্রয়োজন। এতে শিক্ষারমান আরোও উন্নত হবে। মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার ফয়জুন্নেসা বলেন, লেখাপড়ার দিক থেকে প্রতিবছরই সুনাম অর্জন করে এই মাদ্রাসা। কিন্তু অধিক ছাত্র ছাত্রী থাকলেও তাদের পর্যাপ্ত ক্লাসরুম না থাকায় পাঠদানে খুবই কষ্ট হয়। শিক্ষার আরোও মানোন্নয়ন করতে হলে একটি আইসিটি ভবন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ ব্যাপারে পরিচালনা কমিটির সভাপতি,স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান জানে আলম বলেন, এই মাদ্রাসায় সরকারি ছোট বড় কোন ধরনের অনুদান মিলেনি। শ্রেনি কক্ষের পাশাপাশি এই মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীদের কমনরুম, টিপিনরুম, পর্যাপ্ত টয়লেট, মহিলাদের নামাজের ঘরসহ প্রয়োজনীয় আসবাবপত্রের চরম অভাব রয়েছে। জীর্ণশীর্ণ এই মাদ্রাসায় একটি আইসিটি ভবন নির্মান করা খুবই জরুরি। তিনি স্থানীয় এমপি, জেলা-উপজেলা চেয়ারম্যান, এলজিইডিসহ সরকারি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ড.সেলিম রেজা বলেন, উপজেলার অবহেলিত কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে এটি একটি। যে পরিমাণ ছাত্র ছাত্রী ওই প্রতিষ্ঠানে পড়ালেখা করে তার তুলনায় ক্লাসরুম অতিব সংকট। আমি সহযোগিতা করছি। পরিচালনা কমিটি আন্তরিক হলে সরকারি সহযোগিতা অবশ্যই মিলবে।