আজ সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

হাটহাজারীতে বালুর বদলে পাহাড়ের মাটি দিয়েই এলজিইডি’র রাস্তা!

মাহমুদ আল আজাদ হাটহাজারী : | প্রকাশের সময় : রবিবার ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৯:২৭:০০ অপরাহ্ন | উত্তর চট্টগ্রাম

হাটহাজারী উপজেলায় রাস্তা নির্মাণকাজে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। এতে বালুর বদলে মাটি ব্যবহার করে খুবই নিম্নমানের কাজ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।তারা রাস্তা থেকে পুরাতন ইটের সলিং তুলে সেগুলো ভেঙেই খোয়া হিসেবে ব্যবহার করছে। আর রাস্তা নির্মাণ কাজে বালু ব্যবহার না করে সড়কের দিচ্ছে পাহাড়ী লাল বালু। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স আলিফ এন্টারপ্রাইজের নামে ওই প্রতিষ্ঠানের কাজটি করছেন ঠিকাদার ইয়াকুব।

 

 

উপজেলা প্রকৌশলী কার্যালয় (এলজিইডি)সূত্রে জানা যায়, গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নের আওতায় উপজেলার মির্জাপুর  ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড সফর আলী সড়কের আনিস প্যারারাল খাল থেকে গলাচিপা পর্যন্ত ১০৬৮মিটার পিচ ঢালাই কাজ শুরু হয়েছে।কাজের বেশির ভাগ ভাল করলেও শেষ অংশের বেশ কিছু অংশে গিয়ে নয় ছয় পরিনত হয়েছে।রাস্তায় বালুর বদলে পাহাড়ী মাটি ব্যবহার করে নির্মাণ কাজ চালালে স্থানীয়রা বাঁধা দেয়।পরে উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী জয়শ্রী দে অনিয়নের সংবাদ পেয়ে দ্রুত কাজ বন্ধ করে দেয়।প্রায় তিনদিন পর রাস্তা থেকে মাটি সরিয়ে বালু দেয়ার পর কাজ শুরু করে।এ কাজের প্রাক্কলিত ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ১কোটি ১৫লক্ষ ১৫ হাজার টাকা। কাজটি করছে মেসার্স আলিফ এন্টারপ্রাইজ।

এ বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষুব্দ হয়ে প্রতিবেদক্ষে জানান রাস্তাতে প্রায়ই দীর্ঘ ১৫ বছর পর সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে।আমরা দীর্ঘ এত বছর অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে এই রাস্তাটি নিয়ে।হাজার হাজার জনগণ শত শত স্কুল কলেজ মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রী এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে হয়।বর্ষাকাল আসলেই দুর্ভোগ যেন আরো বেড়ে যাই।স্থানে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এবং উপজেলা প্রকৌশলীকে বারবার অনুরোধ করা হলে শেষ পর্যায়ে রাস্তাটির কাজ শুরু হয়।রাস্তার কাজ শুরু হওয়া থেকে ঠিকাদার দিকে যত রকমের সহযোগিতা করা দরকার আমরা এলাকাবাসী তা করে যাচ্ছি।প্রথমদিকে কাজ সুন্দরভাবে শুরু করলেও শেষ পর্যায়ে এসে বালুর জায়গায় পাহাড়ী মাটি দিয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।আমরা এলাকাবাসীরা একাধিকবার অভিযোগ জানালেও কোন সুরহা মেলেনি।ঠিকাদাররা আমাদেরকে বলেন মাঠে দিয়ে রাস্তা করার উপরের নির্দেশ আছে।এটি পরীক্ষামূলকভাবে দেওয়া হচ্ছে।এলাকাবাসী আরো বলেন এভাবেই রাস্তার কাজ চললে অতি শীঘ্রই আমরা আরো বড় দুর্ভোগে পড়ব।

 

এ বিষয়ে ঠিকাদার ইয়াকুব কনট্রাকটারের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তিনি প্রতিবেদককে এড়িয়ে চলেন।

 

৩ নং মির্জাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আক্তার হোসেন খান সুমন বলেন,ওই এলাকার বাসিন্দারা আমাকে ফোন করে এরকম একটি অভিযোগ দিয়েছে।আমি ঠিকাদারের সাথে কথা বলেছি উনি বলেছেন আমি এগুলো উঠিয়ে বালি ফেলে দিয়েছি।চেয়ারম্যান বলেন আমার সময় স্বল্পতার কারণে ওইদিকে যাওয়া হয়নি।

 

এ বিষয়ে হাটহাজার উপজেলা প্রকৌশলী জয়শ্রী দে বলেন, আমি আসলে এই বিষয়ে আগে অবগত ছিলাম না।আপনি যখন স্পট থেকে আমাকে ফোন দিয়ে বক্তব্যের জন্য বললেন তখন আমি অবগত হই।সাথে সাথে আমি ঠিকাদারের সাথে যোগাযোগ করে রাস্তার কাজ বন্ধ করে দিয়েছি।তিনদিন পর রাস্তা থেকে মাটিগুলো সরিয়ে আবার কাজগুলো বালু দিয়ে শুরু করেছি।তারপরেও আমি প্রতিদিন এই বিষয়টা নিয়ে খবরা-খবর রাখছি।সড়ক উন্নয়নে কোন অনিয়ম করলে ছাড় দেওয়া হবে না।