আজ বৃহস্পতিবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০শে কার্তিক ১৪৩১

হাটহাজারীতে দেড় মাসের শিশু সন্তানকে জুয়া খেলার টাকার জন্য বিক্রি করেছে বাবা!

মাহমুদ আল আজাদ হাটহাজারী প্রতিনিধি: | প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার ১৫ ডিসেম্বর ২০২২ ০৭:৩০:০০ অপরাহ্ন | উত্তর চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে জুয়ার টাকা জোগান দিতে দেড় মাসের এক শিশু সন্তানকে বিক্রি করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে এক পাষন্ড পিতা বিরুদ্ধে। পরে স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপে শিশুটি উদ্ধার করে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। বুধবার (১৪ ডিসেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রামের হাটহাজারী পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ড আলীপুর গ্রামে মদিনা আবাসিকের সামনে মোঃ হুমায়ুন তার দেড় মাস বয়সী মাসুম নামের ছেলে সন্তানকে বিক্রি করার ঘটনাটি ঘটে। তিনি একজন ভাঙ্গারী ব্যবসায়ী ও পেশাদার জুয়ারি।তবে তারা নেত্রকোনার বাসিন্দা। বুধবার রাতে ওই গ্রামে গিয়ে এর সত্যতা পাওয়া গেছে। ওই বাড়িতে সাংবাদিকদের উপস্থিত দেখে সন্তানকে ফিরে পেতে বুকফাটা আর্তনাদে ফেটে পড়েন ওই হতভাগা ছেলের মা মর্জিনা বেগম (৩২)। ওই মায়ের আহাজারিতে আকাশবিদীর্ণ আওয়াজ কোনোভাবেই বন্ধ হচ্ছেনা। পরেদিন বৃহস্পতিবার সকালে স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপে শিশুটিকে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। মর্জিনা বেগম বলেন,আমার দেড় মাস বয়সী ছেলে সন্তানকে আমার স্বামী জুয়ার টাকার জন্য ১ লাখ ১০ হাজার টাকায় বিক্রয় করে দিয়েছে। এর আগেও তিনি তাঁর আরেক বউয়ের শিশু সন্তানকে ১ লাখ ৪৫ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেয়। আজ সকালে স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপে আজ আমার কলিজার ধনকে ফিরে পেয়েছি।ঘটনাটি বিবরণ করতে বারবার অজ্ঞান হচ্ছেন তিনি। স্থানীয়রা জানান, জুয়ার টাকা জোগান দিতে যে বাবা তাঁর সন্তানকে বিক্রি করতে পারে, সে অন্যের বাচ্চাকেও বিক্রি করতে দ্বিধাবোধ করবেনা। এনিয়ে এলাকায় আতঙ্ক ও তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। আশপাশের বাবা মায়েরা তাদের সন্তান নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে জানান তাঁরা। হাটহাজারী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রুহুল আমিন সবুজ বলেন, বাচ্চা বিক্রির ঘটনাটি কেউ আমাকে জানায়নি! তবে মাসুম শিশুকে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিতে খুবই ভালো লাগছে। এরকম ঘটনা যেন আর না ঘটে সে বিষয়ে আমরা কাজ করছি। হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর- প্রশাসক মোঃ শাহিদুল আলম বলেন, নিজের বাবা তাঁর সন্তানকে টাকা জন্য বিক্রি করা এটা আসলে খুবই দুঃখজনক। বিষয়টি নিয়ে আমরা অনেক কাজ করেছি। পৌরসভাও কাজ করেছে। বাচ্চাটি তার মায়ের কোল ফিরে পাওয়ায় আমরা সকলেই আনন্দিত।