রাঙ্গুনিয়ায় ১৫ দিন ধরে খোঁজ মিলছে না এক প্রবাসীর। ঘর থেকে বেরিয়ে বুধবার (২৩ নভেম্বর) রাত ৯টায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তার খোঁজ পাওয়া যায়নি। তিনি আত্মগোপন নাকি নিখোঁজ, নাকি তাকে পরিকল্পিতভাবে অপহরণ করা হয়েছেন সেই প্রশ্নই এখন তার স্বজনদের। নিখোঁজ প্রবাসীর নাম মো. নাছের উদ্দিন (৪০)। তিনি উপজেলার মরিয়মনগর ইউনিয়নের মাইজপাড়া গ্রামের আবুল কাশেম চৌধুরীর ছেলে। এই ব্যাপারে থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন তার মা ছখিনা বেগম। পারিবারিক সুত্রে জানা যায়, গত আড়াই মাস আগে দেশে আসা প্রবাসী নাছের ৮ নভেম্বর দুপুরে মরিয়মনগর ফুলগাজি পাড়া তার নতুন বাড়ি থেকে বের হয়েছিল। এরপর থেকে তার আর খোঁজ পাওয়া যায়নি। এমনকি তার ব্যবহৃত মোবাইলটিও বন্ধ পাওয়া গেছে। থানায় লিখিত নিখোঁজ ডায়েরিতে তাঁর মা উল্লেখ করেন, বিভিন্ন আত্মিয়ের বাড়ি ও সম্ভাব্য স্থানে খোঁজ নেওয়ার পরও তার সন্তানের খোঁজ পাওয়া যায়নি। এমনকি সন্তানের নিখোজের ব্যাপারে পুত্রবধূ শেলি আকতারকে জিজ্ঞেস করলে তিনি উদাসিনতা প্রকাশ করেন বলে জিডিতে উল্লেখ করেন তার মা। এই ব্যাপারে তার ভাই মো. মনছুর আলী বলেন, "আমার ভাই তার স্ত্রীর বোন জামাইয়ের কাছে টাকা পাওনা রয়েছেন। সেগুলো নেওয়ার উদ্দেশ্যেই ঘর থেকে বের হয়েছিল বলে জেনেছি। কিন্তু এরপর থেকে তার আর খোঁজ পাওয়া যায়নি। তার সাথে স্ত্রীর মনোমালিন্য চলছিল। এমনকি তার স্ত্রী একবার তার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগও করেছিল। পরে সামাজিকভাবে বৈঠক করে এর সুরাহা করা হয়েছে। আমার ভাই ১৮ বছর ধরে প্রবাস জীবন কাটিয়েছেন। তার ১৮ বছরের সংসার। এসময় নিজের শেলককে বিদেশও পাঠিয়েছেন। সে কখনো এভাবে নিখোঁজ ছিলেন না। আমার ভাইয়ের খোঁজে বিভিন্ন জায়গায় ধর্ণা দিয়েও পাওয়া যাচ্ছে না। তাকে পরিকল্পিতভাবে অপহরণ করা হয়েছে বলে আমরা সন্দেহ করছি।" তবে এই ব্যাপারে তার স্ত্রী শেলি আকতার বলেন, "স্বামী নিখোঁজ হওয়ায় আমি মানসিকভাবে অসুস্থ। আমার সংসার ভাঙার জন্য মিথ্যা অপবাদ দিয়ে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। আমার স্বামী নিখোঁজের ব্যাপারে থানায় জিডি করতে গিয়ে শুনি আমার শ্বাশুড়ি ডায়েরি করেছেন। তাই পুলিশ আর নেয়নি। আমার স্বামীর মোবাইল থেকে ফোনও আসছিল। আমার স্বামীকে নিরাপদ ও অক্ষত অবস্থায় ফেরত চাই।" স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মুজিবুল হক হিরু বলেন, "নিখোঁজ প্রবাসী নাছের উদ্দিন আগেও ঘর থেকে বেরিয়ে এরকম বেশ কিছুদিন সকলের অগোচরে ছিলেন বলে তার স্ত্রী জানিয়েছেন। সে সংসার জীবনে মা ও স্ত্রীর মধ্যকার বিরোধ জনিত মানসিক সমস্যায় আছেন। তাই তিনি নিখোঁজ নাকি আত্মগোপনে, সেটি বলা যাচ্ছে না। এই ব্যাপারে রাঙ্গুনিয়া থানার ওসি (তদন্ত) খান নুরুল ইসলাম বলেন, "নিখোঁজ প্রবাসী নাছেরকে উদ্ধারে আমরা সচেষ্ট রয়েছি। তাকে উদ্ধার করা গেলে তাকে ঘিরে রহস্য উন্মোচিত হবে।"