রাঙ্গুনিয়ায় স্ত্রী'র পরকীয়া সন্দেহে ঘরে আগুন লাগিয়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। এতে পাশের ঘরের এক কন্যা শিশু দগ্ধ হয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেলে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এই ঘটনায় স্বামীর বিরুদ্ধে স্ত্রী ও প্রতিবেশী পরিবারের পক্ষ থেকে পৃথক দুটি অভিযোগ দায়ের হয় দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়া থানায়। রোববার দিনগত রাত ২ টার দিকে উপজেলার পদুয়া ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড পূর্ব খুরুশিয়া ফকির টিলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, স্ত্রীর পরকীয়া সন্দেহে পূর্ব খুরুশিয়া এলাকার বাসিন্দা মৃত আনু মিয়ার ছেলে মো. জানে আলমের (৫৫) সাথে তার স্ত্রী শারমিন বেগমের (২৮) বিরোধ চলছিল। এই নিয়ে দুজনের মধ্যে জগড়া-বিবাদ লেগেই থাকতো। এরজেরে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় গত রোববার রাতে নিজের ঘরে আগুন লাগিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায় জানে আলম। এই আগুন ছড়িয়ে পড়ে পাশের বাড়ির মৃত আবদুর রহমান চৌকিদারের ছেলে মো. হারুনের (৩৯) ঘরেও। এতে তার দুই বছর বয়সী শিশুকন্যা মোতাহের আক্তার দগ্ধ হয়। এ সময় পুড়ে যায় জানে আলম ও হারুনের বসতঘর দুটিও।
স্থানীয় ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম বলেন, 'স্ত্রীকে সন্দেহ করার বিষয়ে জানে আলম ঘর ছেড়ে চলে যাওয়ার কথা বলেছিল। গত রোববার রাত ১২টার দিকে স্ত্রী'র বাপের বাড়ি থাকার সুযোগে ঘর খালি পেয়ে প্রথমে ঘর থেকে টেলিভিশনসহ মূল্যবান সামগ্রী সড়িয়ে নেন। পরে রাত ২টার দিকে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় আগুন লাগিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায় জানে আলম। আগুন লাগার আগে পড়ে তাকে সন্দেহজনক অবস্থায় দেখেছিল বলে জানান স্থানীয়রা। তার স্ত্রীও স্বামীর বিরুদ্ধে আগুন লাগিয়ে দেয়ার অভিযোগ করেন।''
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী মো. হারুন জানান, আগুনে তার পুরো বসতঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। দগ্ধ হয়েছে তার দুই বছরের শিশু কন্যা মোতাহের আক্তার। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে চট্টগ্রাম মেডিকেলে ভর্তি করা হয়। আগুনে তার শিশুকন্যার হাত, পা ও মাথাসহ শরীরের ৫০ শতাংশ পুড়ে গেছে। এছাড়া ঘর পুড়ে গিয়ে অন্তত ৫ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে তার। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত জানে আলম পলাতক রয়েছে। তবে জানে আলম ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বলে জানান তিনি।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়া থানার ওসি ওবাইদুল ইসলাম বলেন, "অভিযুক্ত জানে আলম তার স্ত্রীকে সন্দেহ করতো এবং নেশাগ্রস্ত বলে জানা গেছে। এর জেরে আগুন লাগিয়ে দেয়ার বিষয়ে প্রাথমিক সত্যতা মিলেছে। ঘটনায় ভুক্তভোগী হারুন ও জানে আলমের স্ত্রী শারমিন বেগম পৃথক দুটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। শিশু দগ্ধের ঘটনায় তদন্তপূর্বক প্রয়োজনে এ বিষয়ে মামলা নেয়া হবে।❞