মিরসরাইয়ে মাদক ব্যবসায়ীদের তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে র্যাব সদস্যের উপর হামলার ঘটনায় ১৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এসময় ২ হাজার পিস ইয়াবা, ৫২ বোতল ফেন্সিডিল ও ১ কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় র্যাব-৭ মাদক ব্যবসায়ী ও দুস্কৃতিকারীদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার (২৬ মে) সারাদিন চট্টগ্রাম জেলার জোরারগঞ্জ এবং ফেনী জেলার ছাগলনাইয়া থানাধীন বিভিন্ন এলাকায় সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করে। এসময় সাইদুর রহমান সাঈদ (৩৩), আনোয়ার হোসেন (৪৫), এস এম শাফায়েত হোসেন (৩৮), মিনহাজুল ইসলাম ওরফে মিঠু (৩৬), শহিদুল ইসলাম @ আকাশ (২৫), সোয়েব উদ্দিন আবির (২৯), মোঃ সাইদুল ইসলাম সুমন (৩০), নাহিদ উদ্দিন (৩৩), মোঃ আবু সাঈদ (২৮), মোঃ নাসির উদ্দিন (৩৮), মোঃ মাঈন উদ্দিন (৩২), ইমাম হোসেন (৩৩), ফাহাদ প্রকাশ ফরহাদ (২৬) আটক করে।
পরবর্তীতে আটককৃত আসামী ফাহাদ প্রকাশ ফরহাদ এর প্যান্টের পকেট থেকে ২,০০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট এবং তার দেখানো ও শনাক্ত মতে একটি বস্তার ভিতর হতে ৫২ বোতল ফেন্সিডিল ও ০১ কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়।
ডাকাত আখ্যা দিয়ে র্যাবের উপর হামলার ঘটনার সাথে আটককৃত আসামীরা সকলে সরাসরি সম্পৃক্ত এবং এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী ও দুস্কৃতিকারী বলে অকপটে স্বীকার করেছে বলে দাবী করেছে র্যাব।
এদিকে ঘটনাস্থানের সিসি টিভির ফুটেজ এবং গোপন তথ্যের ভিত্তিতে দুস্কৃতিকারীদের পরিচয় শনাক্ত করে উপরোক্ত আসামীদের গ্রেফতার করা হয় এবং সিসি টিভির ফুটেজ পর্যালোচনা করে আসামী সাইদুর রহমান সাঈদ ঘটস্থান থেকে একজন র্যাব সদস্যের নিকট হতে একটি অস্ত্র ছিনিয়ে নিয়ে যায় বলে প্রমাণ পাওয়া যায়। পরবর্তীতে সাঈদের দেয়া তথ্য মতে আসামী এস এম শাফায়েত হোসেন এর নিকট হতে উক্ত ছিনিয়ে অস্ত্রটি উদ্ধার করা হয়। এছাড়াও উল্লেখিত ঘটনায় সাথে সারাসরি জড়িত এমন আরো কিছু দুস্কৃতিকারীদের শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে তাদের’কে গ্রেফতারের কার্যক্রম অব্যহত আছে বলে জানানো হয়।
র্যাবের উপর হামলার বিষয়ে জানানো হয়, একটি বিশেষ তথ্যের ভিত্তিতে কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী মাদকদ্রব্য ক্রয়-বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে মাদকদ্রব্যসহ চট্টগ্রাম জেলার জোরারগঞ্জ থানাধীন ধুমঘাট এলাকার ঢাকা-চট্টগ্রাম হাইওয়ের পার্শ্বে অবস্থান করছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে গত ২৫ মে রাত সাড়ে ৭টায় র্যাব-৭, চট্টগ্রাম এর একটি আভিযানিক দল বর্ণিত এলাকায় পৌছালে র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে উক্ত মাদক ব্যবসায়ীরা কয়েকটি দল একত্রিত হয়ে ও কিছু দুস্কৃতিকারীরা র্যাবের গাড়ীকে বেরিকেট দেওয়ার চেষ্ঠা করে। সেখানা তারা বেরিকেট দিতে ব্যার্থ হলে পরবর্তীতে বারইয়ারহাট পৌরবাজারের ফ্রুটওভার ব্রীজের নিচে ০২টি কার্ভাডভ্যান রেখে রাস্তা বন্ধ করে ডাকাত ডাকাত বলে চিৎকার করে গুজব ছড়িয়ে আতংক সৃষ্টি করে ও দুস্কৃতিকারীরা পূর্ব-পরিকল্পিতভাবে র্যাবের উপর অতর্কিত সশস্ত্র হামলা করে। উক্ত হামলায় দুস্কৃতিকারীরা র্যাবের ব্যবহিত একটি প্রাইভেটকার ভাংচুর এবং ০২ জন র্যাব সদস্যকে গুরুতর আহত করে। আহত র্যাব সদস্যের অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য র্যাবের হেলিকপ্টার যোগে ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসাপাতালে প্রেরণ করা হয়। যেখানে তারা বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
র্যাব-৭ এর সিনিঃ সহকারী পরিচালক(মিডিয়া) মোঃ নূরুল আবছার বলেন, গ্রেপ্তারকৃত আসামীদের’কে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা দলবদ্ধভাবে দীর্ঘদিন যাবৎ তাদের অন্যান্য সহযোগীদের সহায়তায় অবৈধভাবে মাদকদ্রব্য ইয়াবা ট্যাবলেট, ফেন্সিডিল এবং গাঁজা কুমিল্লা ও ফেনী জেলার সীমান্তবর্তী এলাকা হতে সংগ্রহ পূর্বক বিভিন্ন কৌশলে তা চট্টগ্রাম জেলার জোরারগঞ্জ ও ফেনী জেলার ছাগলনাইয়া থানা এলাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গার মাদক সেবনকারী ও বিক্রেতাদের নিকট খুচরা ও পাইকারী বিক্রয় করে আসছে। গ্রেফতারকৃত আসামী এবং উদ্ধারকৃত মাদকদ্রব্য সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য জোরারগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।