কারো ফসলের ক্ষেত গরু দিয়ে নষ্ট করে দিচ্ছেন। তার প্রতিবাদ জানালে ক্ষেতের ফসল উপড়ে ফেলছেন বা কেটে দিচ্ছেন। প্রায় ৩ একর তিনফসলী জমির চাষাবাদ করা ২৫ জন কৃষক তার কাছে জিম্মি। সাধারণত ফসলের ক্ষতিকারক হিসেবে কৃষকরা পোকামাকড় বা পশু-পাখিকেই বুঝে কিন্তু ভিন্ন চিত্র মিরসরাইয়ের ১ নং করেরহাট ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের জয়পুর পূর্ব জোয়ার গ্রামের নতুন চর এলাকায়। এখানে ফসলের ক্ষতিকারক হিসেবে কৃষকরা চেনে মীর্জা মোহাম্মদকে। মীর্জা মোহাম্মদ ১০-১২ টি গরু দিয়ে এখানকার ফসলী জমির ফসল নষ্ট করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। স্থানীয়ভাবে কোন প্রতিকার না পেয়ে অবশেষে কৃষকরা মানববন্ধন করতে বাধ্য হয়েছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মিরসরাই উপজেলার করেরহাট ইউনিয়নের জয়পুর পূর্ব জোয়ার গ্রামের নতুন চর এলাকায় কৃষকরা সসিন্দা, করলা, বরবটি, ঢেড়স, জিঙ্গা, শসা, মরিচ, বেগুন, আলুসহ নানা ফসল আবাদ করেছেন। এখানকার তিনফসলী জমিতে ২৫ জন কৃষক ভিন্ন ভিন্ন মৌসুমে ফসল আবাদ করে থাকেন। পাশে ফেনী নদী থাকায় পানির সমস্যার সম্মুক্ষীন হতে হয় না এখানকার কৃষকদের। এসব উর্বর জমিতে ফসল উৎপন্ন করে জীবিকা নির্বাহ করেন এখানকার কৃষকরা। বিগত কয়েকবছর যাবত স্থানীয় মীর্জা মোহাম্মদ কৃষকদের উৎপন্ন ফসলের ক্ষতি করে আসছে। মীর্জা মোহাম্মদের ১০-১২ টি গরু রয়েছে। এসব গরু ছাড়া অবস্থায় থাকায় ফসল নষ্ট করে থাকে। কেউ এসব কাজে বাঁধা দিলে তাকে গালমন্দ করেন, ক্ষেতের ফসল উপড়ে ফেলে বা ফসল কেটে দেয়। এতে ক্ষতির সম্মুক্ষীন হচ্ছেন কৃষকরা। স্থানীয়ভাবে কৃষকরা মীর্জা মোহাম্মদের বিচার চেয়ে প্রতিকার না পাওয়ায় সর্বশেষ তারা মানববন্ধন করেছেন।
কৃষক নিতাই ভৌমিক বলেন, ‘আমি ৬ শতক জমিতে বরবটির আবাদ করি। ওই বরবটি মীর্জা মোহাম্মদ গরু দিয়ে ৪ বার খাইয়েছেন। এর প্রতিবাদ করায় আমার করলা ক্ষেতের বেশকিছু উপড়ে ফেলে। অথচ করলা ক্ষেত ফল আসার উপযুক্ত। এখন নতুনভাবে সেখানে আবাদ করলে নূন্যতম আড়াই মাস সময় লাগবে। তার অত্যাচারে আমরা অতিষ্ঠ। আমরা এর একটা সমাধান চাই।’
কৃষক সাদেক হোসেন বলেন, ‘মীর্জা মোহাম্মদ আমার মরিচ, বেগুন ও মিষ্টি আলুর ক্ষেত নানা সময় নষ্ট করেছে। সে দাম্ভিকতার সাথে বলেন আমার বিচার করার মতো কেউ নেই। আমরা তার কাছে অসহায়। তাকে ফসল নষ্ট করার বিষয়ে বললে সে গালমন্দ করে, সে রাগে ক্ষোভে নিজেও ফসল নষ্ট করে গরু দিয়েও নষ্ট করায়। আমরা এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণ চাই।’
শুধু কৃষক নিতাই ভৌমিক বা সাদেক হোসেন নয় এমন কৃষক রফিক আলম, শিবু ভৌমিক, দেলোয়ার হোসেন, মোহাম্মদ মোস্তফা, জানে আলম, ইকবাল হোসেন, রাসেল, এনামুল হক, জাহেদুল ইসলামও একই সমস্যায় পড়েছেন। তাদের দাবী অচিরেই মীর্জা মোহাম্মদের ফসলের ক্ষতি করা থেকে মুক্তি।
এ বিষয়ে জানতে মীর্জা মোহাম্মদের মোবাইলে একাধিকবার কল দিয়েও বন্ধ পাওয়া গেছে।
করেরহাট ইউনিয়ন পরিষদের ২ নং ওয়ার্ডের সদস্য মাইন উদ্দিন বলেন, সাদেক নামে এক কৃষক আমাকের অভিযোগ দিয়েছিল। আমি তখন সমাধান করে দিয়েছি। অন্য কোন কৃষক কোন অভিযোগ দেয়নি।