আজ বৃহস্পতিবার ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ঠা আশ্বিন ১৪৩১

মহিউদ্দিন চৌধুরীর মৃত্যুবার্ষিকী বুধবার

নিজস্ব প্রতিবেদক : | প্রকাশের সময় : সোমবার ১৩ ডিসেম্বর ২০২১ ০৮:৪১:০০ অপরাহ্ন | চট্টমেট্টো

নগর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মুক্তিযোদ্ধা এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী  বুধবার (১৫ ডিসেম্বর)। ২০১৭ সালের ১৫ ডিসেম্বর নগরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে নগর আওয়ামী লীগ ও তার পরিবার।

কর্মসূচির শুরুতে বুধবার (১৫ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় নগরের চশমা হিল কবরস্থানে মরহুমের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও চশমাহিলস্থ জামে মসজিদে খতমে কোরআন, দোয়া ও মিলাদ মাহফিল আয়োজন করা হয়েছে। সকাল ১০টায় চট্টগ্রাম ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবউল আলম হানিফ। সভাপতিত্ব করবেন মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী।

দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে উত্থান-পতন ও নানা ঘটনাপ্রবাহে ‘চট্টলবীর’-এ পরিণত হয়েছিলেন এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী। সাংসারিক জীবনে দুই ছেলে ও চার কন্যা সন্তানের জনক মহিউদ্দিন চৌধুরী শারীরিকভাবে নানা ঘাত-প্রতিঘাত মোকাবিলা করলেও জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত তার মনোবল ও সাহস ছিল অটুট। চট্টগ্রামবাসীর বিপদে অনেকটা সুস্থ মানুষের মতোই ছুটে গেছেন অকুস্থলে। চট্টগ্রামের প্রগতিশীল চেতনার বাতিঘর এ রাজনীতিক প্রয়াত হলেও তার নাম উচ্চারিত হলেই এখনও দুর্বার গতিতে দেশ ও জনগণের অধিকারের সংগ্রামে ছুটে যান দলীয় নেতাকর্মী ও অনুসারীরা। কলেজ পড়ুয়া ছাত্রনেতা থেকে শুরু করে প্রবীণ রাজনীতিক সকলের আস্থায় আজও দেদীপ্যমান মহিউদ্দিন চৌধুরী।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ১৯৪৪ সালের ১ ডিসেম্বর চট্টলার রাজনীতির উর্বরভূমি হিসেবে পরিচিত রাউজানের গহিরার বক্স আলী চৌধুরী বাড়িতে জন্ম মহিউদ্দিন চৌধুরীর। বাবা হোসেন আহমদ চৌধুরী ছিলেন রেলওয়ে কর্মকর্তা। মা বেদুরা বেগম। ছাত্রজীবন থেকেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের আদর্শ বুকে ধারণ করে পা বাড়ান ছাত্রলীগের রাজনীতিতে। ১৯৬২ সালে এসএসসি, ১৯৬৫ সালে এইচএসসি এবং পরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ থেকে অনার্স ডিগ্রি লাভ করেন মহিউদ্দিন চৌধুরী। ১৯৬৮ ও ১৯৬৯ সালে তিনি নগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।

মুক্তিযুদ্ধ শুরুর দ্বিতীয় দিনে নুর আহাম্মদ সড়কের নেভাল অ্যাভিনিউ মোড়ে লড়াই করতে গিয়ে গ্রেফতার হন। এরপর ভারতে গিয়ে প্রশিক্ষণ শেষে পাহাড়ি এলাকা দিয়েই সদলবলে ঢুকে পড়েন দেশে। প্রাণপণ লড়াই করেন দেশমাতৃকার জন্য। মুক্তিযুদ্ধের পর ক্রমেই শ্রমিক লীগের রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন।

পঁচাত্তরে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিশোধ নিতে ভারতে গিয়ে সামরিক প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন এ নেতা। ফিরে এসে চট্টগ্রামকে সারাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিশোধ নিতে এসে হারিয়ে ফেলেন ঘনিষ্ঠ বন্ধু মৌলভী সৈয়দকে। পরবর্তী দীর্ঘ সামরিক শাসনের সময় মহিউদ্দিনকে বেশ কয়েকবার কারাবরণ করতে হয়েছিল। স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন, চট্টগ্রাম বন্দর রক্ষা আন্দোলন, অসহযোগ আন্দোলনসহ চট্টগ্রামের মাটি ও মানুষের স্বার্থরক্ষার আন্দোলন করেছেন তিনি।  

বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী মহিউদ্দিন চৌধুরী ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচিত মেয়র। টানা ১৭ বছর এ সংস্থাকে সফলভাবে পরিচালনা করে নগরবাসীকে একটি আধুনিক ও পরিচ্ছন্ন নগর উপহার দিতে সক্ষম হন।

 

 

 

 



সবচেয়ে জনপ্রিয়