চট্টগ্রামের শহর রেঞ্জের সাবেক সহযোগী রেঞ্জ কর্মকর্তা মো: নাজমুল হাসানের একের পর এক কেলেংকারী ফাঁস হচ্ছে। কিন্তু তার পরেও ঠনক নড়ছে না বনবিভাগের । দৈনিক সাঙ্গুসহ বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় নাজমুল হাসানের চাঁদাবাজি ও অপকর্ম নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হলেও তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বরঞ্চ চট্টগ্রাম অঞ্চলের বন সংরক্ষক বিপুল কৃষ্ণ দাসেকে ম্যানেজের কথা বলে কৌশলে চাঁদাবাজি করে চলছে নাজমুল।
এদিকে মো: নাজমুল হাসানের একটি অডিও দৈনিক সাঙ্গুর হাতে এসেছে। কাঠ আটকের পর ব্যবসায়ী ও জব্দ কাঠ ছাড়তে আড়াই লাখ টাকা দাবী করেন তিনি। অডিও এক প্রান্ত থেকে রহমান নামে এক ব্যক্তির সাথে কথা বলতে শুনা যায় নাজমুলকে। রহমান আটক কাঠসহ ব্যবসায়ীকে ছেঁড়ে দিতে নাজমুলকে ২০ হাজার টাকা দেওয়ার প্রস্তাব দেন। এতে রেগে উঠে নাজমুলকে বলতে শুনা যায় আসামীকে ছাঁড়তে ৫০ হাজার এবং আটক কাঠের গাড়ি ছাড়াতে ২লাখ টাকা দিতে হবে। এই বিষয়ে দুই জনকে অনেক বিতন্ডা করতে শুনা যায়। পওে নাজমুল টাকা নিয়ে রহমাকে চট্টগ্রামে আসতে বলেন। ৩ মিনিট ৩৯ সেকেন্ডের এই অডিও ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোচিত হচ্ছে। তবে এই বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে জানান নাজমুল। তাকে কন্ঠ শুনানো হলে তিনি কথা না বলে ফোন কেটে দেন।
এবিষয়ে বিভাগীয় বন সংরক্ষক বিপুল কৃষ্ণ দাস নাজমুলের সাথে কোন সংখ্যা নেই বলে দাবী করেন। তিনি বলেন অপরাধী যেহোক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
https://www.youtube.com/watch?v=-8tiOuvxDzI
এই বিষয়ে বক্তব্য নেওয়ার জন্য বান্দরবান বিভাগীয় বনকর্মকর্তা হক মাহাবুব মোর্শেদকে কল করা হলে তিনি রিসিভ করেনি। ক্ষুদে বার্তা প্রেরণ করা হলে জবাব দেননি।
নাজমুলের পোষ্টিং এখন বান্দরবানে হলেও এখনো তিনি প্রতিরাতে বান্দরবান-রাজস্থলী-অক্সিজেন এলাকায় ডিউটি করে প্রতিরাতেই বৈধ-অবৈধ কাঠের ট্রাক আটকিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।
এদিকে নাজমুলের বিরুদ্ধে ক্রয় সম্পত্তি অবৈধ ভাবে দখল করে দোকান র্নিমান করে জোরপূবক ভাড়া আদায়ের অভিযোগ এনে মোঃ আব্দুল আল মামুন নামে এক ব্যাক্তি দুদকে অভিযোগ করেন। গত ২০ই অক্টোবর এই অভিযোগ করেন।
কয়েকজন ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন ফেনীর বেলায়েত হোসেনের সাথে ফরেষ্ট কর্র্মকতা নাজমুলের ভাল সর্ম্পক ছিল। জায়গার দেখাশুনার দায়িত্ব দেওয়া হয় নাজমুলকে। বেলায়েত হোসেনের সরলতার সুযোগ নিয়ে বন কর্মকর্তা নিজের দখলে নিয়ে দোকানঘর নির্মাণ করে।,প্রতি মাসে দোকান ভাড়াবাবদ প্রায় দুইলক্ষ টাকা ৫/৬ বছরে দোকান ভাড়া, ৩০টি দোকানের এককালীর নেওয়া প্রায় ৫০লক্ষ টাকাসহ তিনি প্রায় ৬ কোটি হাতিয়ে নেন।
অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, নাজমুল একজন সরকারী কর্মকর্তা হয়েও আইন অমান্যকারী , দখলবাজ , ভূমিদস্যু ও অসম্ভব খারাপ প্রকৃতির লোক । বায়েজীদ থানাধীন জামতলা এলাকায় মোঃ আব্দুল আল মামুন এর বাবা ও চাচার ক্রয়কৃত সম্পত্তির আর.এস খতিয়ান নং -৬৬৯ আর.এস দাগ নং -২৪১৩ খতিয়ান বি.এস. বি.এস.নামজারী দাগ নং ৮৩৮/৮৩৯ , আন্দরে ২০ শতক সম্পত্তির মালিক হন । বেলায়েত হোসেন এর মৃত্যুর পর এই জায়গা দেখাশোনা করেন তারই সন্তান মোঃ আব্দুল আল মামুন । জায়গার পার্শ্বে বন বিভাগের জায়গা থাকায় বন বিভাগের অফিসার মোঃ নাজমুল হাসান ,বাবুল , রফিক , নুর ইসলামসহ আরো ৪ / ৫ জন বাংলাবাজার ডেবারপাড় ফরেষ্ট জোরপূর্বক জায়গা দখল করে নেয় । রাতারাতি ৩০ টি দোকান ঘর তুলে মাসিক ভাড়ায় লাগিয়ত করে । এবং সেখান থেকে প্রতি মাসে দোকান থেকে প্রায় দুইলক্ষ টাকা ভাড়া উত্তোলন করেন । গত ৫/৬ বছর যাবত আমি এবং আমার চাচা আমাদের পিতৃক সম্পত্তিতে গেলে সেই জায়গা ছেড়ে দিবে , দিচ্ছে বলে বিভিন্ন ধরনের তাল বাহানা করতে থাকে । তার এইসব ছল ছাতুরী দেখে গত ১৮ই অক্টোবর সার্ভেয়ার ও কিছু শ্রমিক নিয়ে গেলে নাজমুল হাসান , বাবুল , রফিক , নুর ইসলামসহ আরো ৪ / ৫ জন লোক সাথে নিয়ে সার্ভেয়ার ও শ্রমিকদের মারধর করে। সার্ভেয়ার ও শ্রমিকদের বন বিভাগের আনসার এনে বন বিভাগের গাড়ি করে নিয়ে যায় এবং তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনে কোটে মামলা দেয় এবং আমাদেরকে হয়রানি করে । একজন সরকারী কর্মকর্তা হয়ে আমার মালিকানা জায়গা দখল করে আমার লেবারদের উপর মিথ্যা মামলা ও আমার জায়গায় দোকান ঘর নির্মান করে অবৈধ ভাবে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়ার পায়তারা করে । সুষ্ট তদন্তের মাধ্যমে বিচার প্রার্থনা করেন।