- নিয়মনীতি মানা হচ্ছেনা
- প্রসাশনের তদারকি নেই
- নোংরা ও স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে তৈরি হচ্ছে খাবার
ফটিকছড়ি উপজেলায় নামে বেনামে গড়ে উঠা হোটেল ও রেস্তোরাঁয় অবাধে বিক্রয় হচ্ছে নোংরা ও অপরিচ্ছন্ন খাবার। নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে এসব হোটেলে পঁচা-বাসি খাবারও দেদার বিক্রি হচ্ছে । অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার বিক্রি হলেও নজরদারি নেই সংশ্লিষ্ট প্রসাশনের। ফলে বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি। এতে উদ্বিগ্ন সচেতন মহল।
জানা যায়, হোটেলগুলোর বাইরের দৃশ্য সজ্জিত ও চাকচিক্যে ভরপুর। ভেতরের দৃশ্য নোংরা ও স্যাঁতসেঁতে। অস্বাস্থ্যকর স্থানে তৈরি হচ্ছে বিভিন্ন রকমের মুখরোচক খাবার। সংরক্ষণও করা হচ্ছে খোলা পরিবেশে। এসব খাবারে ব্যবহার করা হচ্ছে অপরিস্কার পানি। স্বাদ বাড়াতে মেশানো হচ্ছে ক্ষতিকর উপকরণ(কেমিক্যাল)। যা মানবদেহের জন্য অত্যন্ত স্বাস্থ্যহানীকারক।
স্থানীয়দের অভিযোগ, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার বিক্রি করা অধিকাংশ হোটেলের কোনো লাইসেন্স বা সরকারি অনুমোদন নেই। কোনো প্রকার নিয়মনীতির তোয়াক্কা করছেনা। এসব খাবার দোকানের মালিকরা মানছেনা কোন স্বাস্থ্যবিধি।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার বিবিরহাট, নাজিরহাট, নানুপুর বাজার, আজাদী বাজার, হেয়াঁকোসহ যেকোন ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা এবং বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মার্কেট, শপিংমলের আশপাশে গড়ে উঠা হোটেলে অবাধে বিক্রি হচ্ছে অস্বাস্থ্যকর খাবার। ছোট-বড় রেস্তোরাঁ ও ভাসমান দোকানগুলোয় ধুলিবালুর মিশ্রিত খাবার প্রস্তুত ও বিকিকিনি হচ্ছে। এসব দোকান, হোটেলে কোনো প্রকার স্বাস্থ্যবিধি মানার বালাই নেই। নানুপুর বাজারের সোনার গাঁও হোটেলে দেখা যায়, স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে তৈরিকৃত খাবার রাখা হয়েছে খোলা অবস্থায়। এতে উড়ে পড়ছে ধুলাবালি। এসব ধুলাবালি মিশ্রিত ও নিম্নমানের খাবার পরিবেশিত হচ্ছে ক্রেতাদের কাছে। এতে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছে ভোক্তারা। একইভাবে নাজিরহাটের ক্যাফে আল হারুন হোটেল, বিবিরহাটের খানপিনা হোটেল ও ভাতঘর, আজাদী বাজারের সোনার গাঁও হোটেল, হেয়াঁকো বাজারের ক্যাফে মা হোটেলে গিয়ে একই দৃশ্যের দেখা মিলে। এসব অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বিক্রিত খাবার রিকশা ও ভ্যানচালকসহ মধ্য ও নিম্ন-আয়ের মানুষের নিত্যদিনের পছন্দের খাবার।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, এসব খাবার হোটেল ও ভাসমান দোকানে রান্নার কাজে ব্যবহার হচ্ছে অত্যন্ত নিম্নমানের ভোজ্যতেল। বিভিন্ন খাদ্য উৎপাদনকারী কারখানার তেলের ড্রামের ময়লা ও উচ্ছিষ্ট থেকে সংগ্রহ করা তেলও এসব খাবার তৈরিতে ব্যবহার করা হয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আরেফিন আজিম বলেন, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে প্রকাশ্যে খোলা খাবার খাওয়া, বিক্রি ও পরিবশেন করা কতটা যে স্বাস্থ্যঝুঁকি, সে সম্পর্কে আমরা চিন্তা করি না। অকপটে খেয়ে ফেলি। অথচ এসব খোলা খাবার খাওয়ার কারণে জন্ডিস, কিডনি, লিভার, ডায়াবেটিসসহ নানা রোগ হতে পারে। তিনি বলেন, মানুষের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে যাতে পথে-ঘাটে কেউ খোলা খাবার না খান। এছাড়া স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের নোংরা পরিবেশে হোটেল পরিচালনাকারীদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিতে হবে। অনেকে বাসি-পচা খাবারও বিক্রি করছে-এদেরও শাস্তির আওতায় আনতে হবে।