আজ শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ই আশ্বিন ১৪৩১

ফটিকছড়িতে বিদ্যালয়ের ভিটে থেকে মাটি কেটে নেয়ার অভিযোগ মাল্টা ইউনুচের বিরুদ্ধে

ফটিকছড়ি প্রতিনিধি : | প্রকাশের সময় : সোমবার ১৩ জুন ২০২২ ০৭:১৬:০০ অপরাহ্ন | উত্তর চট্টগ্রাম

ফটিকছড়ির দাঁতমারা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাট থেকে মাটি কেটে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে সাবেক এক বন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।  স্কুলের সাবেক ও বর্তমান দুই  প্রধান শিক্ষকের যোগসাজসে দাঁতমারা বনবিটের সদ্য সাবেক বিট কর্মকর্তা ইউনুচ ফরেষ্টার প্রকাশ মাল্টা ইউনুচ এসব মাটি কেটে নিয়ে যায়।  সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায় স্কুলের পুরাতন ভবনের ভিটে থেকে প্রায় তিন ফুট গভীর গর্ত করে প্রায় ৩০ গাড়ী মাটি কেটে লুট করে নিয়ে গেছে ইউনুচ ফরেষ্টার । স্থানীয় জনতার প্রতিরোধে গত ২৯ মে মাটি কাটা বন্ধ হলেও এখনো পর্যন্ত এ ব্যাপারে আইনি কোন পদক্ষেপ নেয়নি সংশ্লিষ্ট প্রশাসন।  বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে একাধিকবার জানানো হয়।  উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিষয়টি নিয়ে আইনি ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিলেও এখনো কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।  উল্টো মাল্টা ইউনুচকে বাঁচাতে দায়সারা তদন্তের নামে ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহের চেষ্টা করছে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হাসানুল কবির।  তিনি সাবেক ও বর্তমান দুই প্রধান শিক্ষকের সাথে গোপন আতাঁত করে ইউনুচ ফরেষ্টারকে বাঁচাতে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের নামে জিডি করার পাঁয়তারা করছে। 

এদিকে মাটি কাটার বিষয়ে জেলা প্রশাসক, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও পরিবেশ অধিদপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন বিদ্যালয়ের এসএমসির সাবেক অভিভাবক সদস্য ও বিদ্যালয়ের জমি দাতার ওয়ারিশ আবু মুছা।  এর আগে গত ২৯ মে এবং ৬ জুন তিনি  বিষয়টি মৌখিকভাবে উপজেলা প্রশাসন এবং জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে জানিয়েছিলেন।  বিষয়টি নিয়ে তাঁরা ব্যবস্থা নেয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও গত ১৫ দিনেও কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় সর্বশেষ গত ১২ জুন তিনি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।  এদিকে এ ব্যাপারে প্রতিবাদ এবং লিখিত অভিযোগ দায়ের করায় অভিযোগকারী আবু মুছাকে স্থানীয় একটি সিন্ডিকেট নানাভাবে সামাজিক চাপ প্রয়োগ করাসহ হুমকি ধমকি দিয়ে যাচ্ছে। অভিযোগকারী আবু মুছা জানান, বিষয়টি নিয়ে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার জন্য উপজেলা প্রশাসনসহ উপজেলা ও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে সবধরনের তথ্য উপাত্ত সরবরাহ করার পরেও তারা কোন ব্যবস্থা না নিয়ে পক্ষপাত মূলক আচরন করছে। বর্তমানে এ বিষয়ে অভিযোগ এবং প্রতিবাদ করে উল্টো হয়রানির মুখে পড়েছেন তিনি।

 

স্থানীয়রা জানান, বিদ্যালয়ের পুরাতন ভবন ভাঙ্গার জন্য দরপত্র দেয়া হয়। মেরাজ ট্রেডার্স নামে একটি প্রতিষ্ঠান পুরাতন ভাঙ্গার কার্যাদেশ পায়।  ৭ কার্যদিবসের মধ্যে পুরাতন ভবন ভেঙ্গে ভবনের সরঞ্জামাদি নিয়ে যাওয়ার জন্য সময় বেঁধে দেয়া হয়।    নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সরঞ্জামাদি নিয়ে যায়।  এর পর সাবেক ও বর্তমান দুই প্রধান শিক্ষকের যোগসাজসে ইউনুচ ফরেষ্টার স্কুলের ভিটের মাটি কেটে নিয়ে যায়। এ বিষয়ে ইউনুচ ফরেষ্টার প্রথমে মাটি কিনে নিয়েছে দাবি করলেও পরবর্তীতে তা অস্বিকার করেন। কি মুলে মাটি কেটেছেন এমন প্রশ্নের কোন সদুত্তর দিতে না পারলেও ২০ গাড়ী মাটি নেয়ার কথা স্বীকার করে তিনি সাংবাদিকদের জানান সাবেক প্রধান শিক্ষক আবু তালেবের মধ্যস্ততায় এসব মাটি কেটে নিয়ে গেছেন তিনি।

স্কুলের সাবেক প্রধান শিক্ষক আবু তালেব এবং বর্তমান প্রধান শিক্ষক রহিমা বেগম বিষয়টি অবগত নন বলে জানান।  তবে বর্তমান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক  রহিমা বেগম  বলেন,  উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে এ বিষয়ে প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়েছে। 

এদিকে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ শহিদুল ইসলাম বলেন বিষয়টি তদন্ত করে আইনি পদক্ষেপ নেয়া হবে।  

স্থানীয় সুত্র জানায়, মাটি কাটার বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করার পর স্থানীয় একটি মহলের পরামর্শে গত রোববার রাতে ইউনুচ ফরেষ্টার পিকাপ ভর্তি এক গাড়ী মাটি অন্য এলাকা থেকে এনে স্কুলের ভিটের মাটি কেটে নেয়ার স্থানে ফেলে। এ বিষয়ে রাতে দাঁতমারা  তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশকে জানানো হলেও তারা রহস্যজনক কারনে কোন ব্যবস্থা নেয়নি। পরবর্তীতে  ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর স্থানীয়দের প্রতিরোধে তা বন্ধ হয়ে যায়।