দক্ষিণ ফটিকছড়িতে জামায়াতের প্রীতি সমাবেশে কেন্দ্রীয় জামায়াত নেতা ও সাবেক সাংসদ আলহাজ্ব শাহাজাহান চৌধুরী বলেছেন, ফটিকছড়িতে অস্ত্রের ঝনঝনানি কারা দেখিয়েছে তার বিচার জনগন করবে।তিনি বলেন, দীর্ঘ ৩৬ বছর এই ময়দানে আমরা আসতে পারিনি। ৯ বছর কারাবরণ করেছি। এখানে ফটিকছড়ির অনেক ভাই আমার সাথে কারাগারের সঙ্গী ছিলেন। আমাদেরকে কেন আপনারা ভূল বুঝেছেন? আমরা তো মারামারি চাই নাই, কাটাকাটি চাই নাই। আমরা তো এখানে অস্ত্রের ঝনঝনানি চাই নাই। আমরা চেয়েছিলাম একটি শান্ত ফটিকছড়ি। আমরা তো চেয়েছিলেন ঐতিহ্যবাহী ফটিকছড়িতে সবাই একসাথে মিলেমিশে বসবাস করবো। রাজনীতি যার যার। কিন্তু দন্ধ সংঘাত কারা বাঁধালো আপনারাই এর বিচার করবেন।
শনিবার (১৬ নভেম্বর) বিকেলে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলায় জামায়াতের দক্ষিণ ফটিকছড়ি শাখার উদ্যোগে আয়োজিত প্রীতি সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য শাহজাহান চৌধুরী আরো বলেন, ফটিকছড়ির মানুষ হৃদয় দিয়ে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামীকে বরণ করে নিয়েছে। আগামীতে এই ফটিকছড়ির মাটিতে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী জনগণের ভূলুণ্ঠিত অধিকার ফিরিয়ে দিতে গণতান্ত্রিক পন্থায় ভূমিকা রাখবে, ইনশাআল্লাহ।
তিনি বলেন, ফটিকছড়ির মাটি ইসলামী আন্দোলনের উর্বর ময়দান। এ মাটির সন্তানেরা ইসলামী আন্দোলনের জন্য জীবন দিয়েছে। শহীদের রক্তস্নাত ফটিকছড়িতে আজ ইসলামী সমাজ বিনির্মাণের পথ সুগম হয়েছে। সামনের দিনগুলোতে এই ফটিকছড়ির জনপদে কোনো হত্যাকাণ্ড, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, রাহাজানি, মাদক চলবে না। এই ফটিকছড়িতে কোনো নাগরিকের অধিকার আর লুট করার সুযোগ কেউ পাবে না। বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী আজকের এই প্রীতি সম্মেলন থেকে এই ঘোষণা দিতে চায়।
ফটিকছড়ি দক্ষিণ জামায়াতের উপদেষ্টা অধ্যক্ষ আ. ন. ম আবদুশ শাকুর এর সভাপতিত্বে প্রীতি সম্মেলনে প্রধান বক্তার বক্তব্যে শাহজাহান চৌধুরী আরোও বলেন, বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী আজকের এই বাংলাদেশে জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে প্রস্তুত রয়েছে। এই দেশের জনগণ মানব রচিত মতবাদের উপর প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দলগুলোর নেতৃত্ব দেখে বারবার হতাশ হয়েছে। এই মতবাদগুলো মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার বদলে অধিকার ছিনিয়ে নেওয়ার আয়োজন করেছে। বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী আল্লাহ'র আইন ও সৎ লোকের শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে জনগণের সার্বিক কল্যাণের যে ঘোষণা দিয়েছে, তা আজকে বাস্তবে তা প্রমাণ দিতেও প্রস্তুত রয়েছে। দেশের জনগণ বিগত ১৬ বছর ধরে যে হত্যা, বঞ্চনা, নির্যাতন, নিষ্পেষন, লুটপাট প্রত্যক্ষ করেছে, তার হাত থেকে নিজেদের রক্ষা করতে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামীকেই ভ্যানগার্ডের ভূমিকায় দেখতে চায়। আগামীতে এই ফটিকছড়ির মাটিতে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী জনগণের ভূলুণ্ঠিত অধিকার ফিরিয়ে দিতে গণতান্ত্রিক পন্থায় ভূমিকা রাখবে, ইনশাআল্লাহ। আজকের এই বিশাল জমায়েতের মাধ্যমে ফটিকছড়ির মানুষ হৃদয় দিয়ে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামীকে বরণ করে নিয়েছে। এখন শুধু গণতান্ত্রিক আনুষ্ঠানিকতা বাকি।
উপজেলার ধর্মপুর আজাদী বাজার ঈদগাহ ময়দানে ৩৬ বছর পর আয়োজিত সম্মেলনে প্রধান বক্তা ছিলেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আমীর মুহাম্মদ আলাউদ্দিন সিকদার। বিশেষ অতিথি ছিলেন সাবেক উত্তর জেলা আমীর অধ্যাপক নুরুল আমীন চৌধুরী, খাগড়াছড়ি জেলা জামায়াতের আমীর সৈয়দ আবদুল মোমেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরার সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগরী জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যক্ষ নুরুল আমিন, উপজেলা আমীর নাজিম উদ্দিন সিকদার।
ফটিকছড়ি পেশাজীবি ইউনিটের থানা সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার ইমামুল হক ও ফটিকছড়ি দক্ষিণ জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যাপক সেলিম উদ্দিনের যৌথ সঞ্চালনায় প্রীতি সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা জামায়াতের সহ-সেক্রেটারি অধ্যাপক ফজলুল করিম, জেলা শুরার সদস্য আব্দুল জব্বার, এডভোকেট ইসমাইল গণি, ইউসুফ বিন সিরাজ, অধ্যাপক শোয়াইব চৌধুরী, মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, এজহারুল ইসলাম, বায়েজিদ হাসান মুরাদ, শামসুল আরেফিন আরিফ, শফিউল আলম নূরী। মোহাম্মদ আব্দুর রহিম, অধ্যাপক সেলিম উদ্দিন, মাওলানা তৈয়ব আলী নুরী, মাস্টার নজরুল ইসলাম, খোরশেদুল আলম ফিরোজ, আবু জাফর মোহাম্মদ আলম, শিবির নেতা রাশেদুল ইসলাম প্রমূখ।