ছিনতাইয়ের আগে অটোরিকশা চলে গ্যাসে। ছিনতাইয়ের পর দ্রুত সটকে পড়ার জন্য সেটি চলে পেট্রলে। আবার গাড়িটির নম্বর প্লেটও থাকে স্কচটেপে মোড়ানো। বিশেষ এই অটোরিকশাটি দিয়ে চট্টগ্রাম নগরজুড়ে ছিনতাই করে বেড়ায় একটি চক্র।
বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) দিনগত রাতে নগরের বায়েজিদ বোস্তামী থানা এলাকা থেকে দুই ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ সময় ওই অটোরিকশাটি জব্দ করা হয়।
গ্রেফতাররা হলেন- মো. ইউসুফ ওরফে ইলিয়াছ (৩২) ও সুমন মিয়া (২৭)। তাদের মধ্যে ইউসুফের বাড়ি বোয়ালখালী উপজেলার পূর্ব চরণদ্বীপ এলাকায়। তার বাবার নাম মো. ইসমাইল। সুমন মিয়া হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলার মৃত আবদুল খালেকের সন্তান।
পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার রাতে বায়েজিদ বোস্তামী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আজহারুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি টিম নিয়মিত টহল দিচ্ছিল। এ সময় বিএসআরএম মোড়ে তারা লক্ষ্য করেন- ছিনতাইকারীরা এক পথচারীর ব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে অটোরিকশা যোগে পালানোর চেষ্টা করছেন। সঙ্গে সঙ্গে অটোরিকশাটি ধাওয়া করে শেরশাহ মোড় থেকে আটক করা হয়। এরপর অটোরিকশায় থাকা দুই ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করা হয়। একই সঙ্গে তাদের কাছ থেকে দুটি দেশীয় অস্ত্র জব্দ করা হয়। পরে দেখা যায়, পালানোর সময় অটোরিকশাটি পেট্রল দিয়ে চলছিল এবং নম্বরপ্লেট স্কচটেপ দিয়ে মুছে দেওয়া হয়েছে।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতাররা জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে তারা বিশেষ এ অটোরিকশাটি দিয়ে ছিনতাই করে আসছেন। তাদের মধ্যে ইউসুফ পেশাদার ছিনতাইকারী। তিনি ২০০৫ সালে চট্টগ্রাম নগরে ছিনতাই শুরু করেন। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ২২টি মামলা রয়েছে। ২০১৮ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি ইউসুফ খুলশী থানার জাকির হোসেন রোডে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনের শিক্ষক ও বৃটিশ নাগরিক জুলিয়া ডেভিসের ব্যাগ ছিনতাই করেন। এ ঘটনার পুলিশের সঙ্গে বন্ধুকযুদ্ধে বাম হাতে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় গ্রেফতার হন তিনি। পরে মুক্তি পান।
বায়েজিদ বোস্তামী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামারুজ্জামান বলেন, রাতে সড়কে যানবাহন চলাচল কমে গেলে ছিনতাই শুরু করে চক্রটি। ছিনতাইয়ের সময় তাদের লক্ষ্য থাকে রিকশা বা রাস্তায় থাকা ব্যাগসহ নারীদের। বৃহস্পতিবার রাতে গ্রেফতার দুই ছিনতাইকারীর বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। তাদেরকে আজ (শুক্রবার) ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হচ্ছে।