পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) বিরুদ্ধে পুলিশের সাবেক এসপি বাবুল আক্তারের অভিযোগ প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, বাবুল আক্তার যে অভিযোগ করেছেন সেগুলো বাস্তবসম্মত কি না, তা তদন্ত হলেই বোঝা যাবে। পিবিআইর ওপর আমাদের ভরসা আছে।
শনিবার (১০ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরে আয়োজিত এক সেমিনার শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
মন্ত্রী বলেন, পিবিআই যতগুলো অনুসন্ধান করেছে সবগুলোই বাস্তবসম্মত এবং অত্যন্ত সূক্ষ্মভাবে তারা অনুসন্ধান করেছে। ৩০ বছর আগের খুনের মামলারও তারা আসামি চিহ্নিত করেছে এবং আসামি গ্রেপ্তার করেছে। পিবিআই যা করবে সেটা ভুল করবে না বলে আমার বিশ্বাস। বাবুল আক্তার যে প্রশ্নগুলো তুলেছেন আমার মনে হয় তদন্তের পর আপনারা সব প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন।
তিনি বলেন, ‘বাবুল আক্তারের বিষয়টা যেহেতু পিবিআইর কাছে তদন্তাধীন, তাই তদন্ত শেষ করার আগে আমি কোনো মন্তব্য করতে চাই না। বাবুল আক্তার যে কথা বলেছেন সেগুলো বাস্তবসম্মত কি না সেটা তদন্ত হলেই বোঝা যাবে।’
যারা তদন্ত করছেন তাদের প্রধানের বিরুদ্ধেই অভিযোগ, সেক্ষেত্রে তদন্তে গাফিলতির সম্ভাবনা আছে কি না জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, বাবুল আক্তার অত্যন্ত চতুর মানুষ। কাজেই সে কখন কি বলে সেটা তার ব্যাপার। এখানে আমার মন্তব্য নেই। তদন্তের পরেই সব চলে আসবে।
গুম বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অনেকে গুমের কথা বলে হাজার হাজার, তখন আমি বললাম লিস্ট দেন। এরপর মানবাধিকার সংস্থা থেকে লিস্ট এলো ৭৬ জনের। পরে দেখা গেলো এরমধ্যে ১০ জন বিএনপির অ্যাক্টিভিস্ট, যারা বিভিন্নস্থানে অবস্থান করছেন। এরমধ্যে ৩৫ জনকে আমরা নিজেরাই খুঁজছি, যারা জ্বালাও-পোড়াওয়ের সঙ্গে জড়িত, আবার একজনকে দেখা গেলো জেলে রয়েছেন। আরেকবার শুনলাম ৬০০ জন গুম, তাই আমি এর ডিটেইল চাই।
বাংলাদেশের মিয়ানমার সীমান্তে একাধিকবার গোলা এসে পড়েছে, এ বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, মিয়ানমার সীমান্ত ক্রস করে দু'একটি গোলা আমাদের সীমান্তের কাছাকাছি এসে পড়েছে। আমরা প্রতিবাদ করেছি। আমাদের বিজিবি তাদের বিজিপির কাছে প্রতিবাদ করেছে। রাষ্ট্রদূতকে আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে মেসেজ দেওয়া হয়েছে, সবকিছু বলা হয়েছে। রাষ্ট্রীয় পর্যায় থেকে সব পর্যায়ে প্রতিবাদ করেছি। আমরা মনে করি খুব শিগগিরই তারা সংযত হবে। তাদের গোলাগুলি যেন এদিকে না আসে সেদিকে খেয়াল রাখার জন্য আমরা তাদেরকে বলেছি।
নির্বাচনকে কেন্দ্র করে থানায় থানায় বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে তালিকা করা হচ্ছে, এমন কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তারা অনেক সময় অনেক কথা বলেন। এগুলো বিএনপির আরেকটা কৌশল।
উল্লেখ্য, পিবিআই হেফাজতে থাকার সময় নির্যাতনের শিকার হয়েছেন দাবি করে পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদারসহ ৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নির্যাতন এবং হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে মামলার আবেদন করেছেন সাবেক এসপি বাবুল আক্তার। গত ৮ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ ড. বেগম জেবুন্নেছার আদালতে মামলার আবেদন করেন তিনি।
মামলায় আসামি করা হয়েছে- পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার, সংস্থাটির চট্টগ্রাম জেলা ইউনিটের এসপি নাজমুল হাসান, চট্টগ্রাম মেট্রো ইউনিটের এসপি নাঈমা সুলতানা, পিবিআইয়ের সাবেক পরিদর্শক সন্তোষ কুমার চাকমা ও এ কে এম মহিউদ্দিন সেলিম এবং সংস্থাটির চট্টগ্রাম জেলা ইউনিটের পুলিশ পরিদর্শক কাজী এনায়েত কবিরকে।