রংপুরের মহাসমাবেশে আগামী নির্বাচনে নৌকা মার্কার জন্য ভোট চেয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি আওয়ামী লীগকে আবারও দেশ সেবার সুযোগ দেওয়ার আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, নৌকা মার্কা ক্ষমতায় এলে দেশের উন্নতি হয়, কৃষকের ভাগ্য পরিবর্তন হয়। নৌকা মার্কা ক্ষমতায় আছে বলেই ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ গেছে। নৌকা মার্কা ক্ষমতায় আছে বলেই আজকে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে আবারও আপনাদের সেবা করার সুযোগ দেবেন, সেটাই আমি আপনাদের কাছে চাই।
বুধবার (২ আগস্ট) বিকেলে রংপুর জিলা স্কুল মাঠে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত বিভাগীয় মহাসমাবেশে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ মানুষের কল্যাণে কাজ করে। রংপুরের ভাগ্য পরিবর্তনে কেউ কাজ করেনি। নৌকা মার্কা ক্ষমতায় এলেই কাজ হয়। নৌকা ছাড়া হয় না। নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আজকে দারিদ্র্য বিমোচন হচ্ছে। আজকে হতদরিদ্র বলতে তেমন কেউ নেই, মাত্র পাঁচ শতাংশ। আল্লাহর রহমতে সেটুকুও থাকবে না। কোনো মানুষ হতদরিদ্র থাকবে না।
বিদেশ থেকে পুরাতন কাপড় আনতে বা পরতে হয় না জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রত্যেক মানুষের কাপড় কেনার আর্থিক সচ্ছলতা এসে গেছে। আগে এক বেলা ভাত পেত না, এখন দুই বেলা, তিন বেলা খাবারের সুযোগ হয়ে গেছে। সেই ব্যবস্থা আমরা করেছি। এদেশের কৃষক, এদেশের শ্রমিক, এদেশের মেহনতি মানুষ, প্রত্যেক মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য আওয়ামী লীগ সরকার কাজ করে যাচ্ছে। যার সুফল আপনারা পাচ্ছেন, দেশের মানুষ পাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের মানুষ, বাংলাদেশের জনগণ আমার আপনজন, আমার সংসার। আপনাদের মাঝে খুঁজে পাই আমার বাবার স্নেহ, ভাইয়ের স্নেহ, বোনের স্নেহ। আপনাদের জন্য যদি প্রয়োজন হয় বাবার মতো জীবন দিতেও প্রস্তুত আছি। মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য জীবন দিতে প্রস্তুত আমি।
সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে আর বিদ্যুতের সমস্যা থাকবে না। আমরা ওয়াদা দিয়েছিলাম ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দেব, আজকে আমরা ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দিতে পেরেছি। কয়লা ও গ্যাসের দাম বেড়ে যাওয়ায় বিদ্যুৎ নিয়ে কয়েকদিন কষ্ট হয়েছে। এখন আমরা বিদ্যুৎ উৎপাদন আরও বৃদ্ধি করেছি। ভারত থেকে কিনে এনেছি। নেপাল থেকেও কিনে আনব।
তিনি আরও বলেন, গাইবান্ধায় বিশাল সোলার তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। ২০০ মেগাওয়ার্ড বিদ্যুৎ সেখান থেকে আসবে। আমি খালি হাতে আসিনি, আপনাদের জন্য উপহার নিয়ে এসেছি। কিছুক্ষণ আগে আমি কতগুলো প্রকল্প উদ্বোধন করেছি। যাতে প্রত্যেকটা উন্নয়ন তরান্বিত হয় তার ব্যবস্থা করেছি। একইসঙ্গে এত প্রকল্প কেউ করে দিয়েছে কি না আমি জানি না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগের আমলে রংপুরে কোনো মঙ্গা হয়নি। হয়েছে? না। আওয়ামী লীগ সরকারে আসলে ও নৌকা মার্কায় ভোট দিলে দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন হয়। সেটা আমরা প্রমাণ করেছি।
তিনি বলেন, জাতির পিতাকে হত্যা করার পর অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল, হত্যা, ক্যু ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতি শুরু হয়েছিল। মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলা শুরু হয়েছিল। ১৯৮১ সালে বাংলাদেশে এসে এই রংপুর বিভাগের প্রতিটি জেলা, বলতে গেলে বিভিন্ন প্রত্যন্ত অঞ্চলে আমি ঘুরেছি। দেখেছি মানুষের হাহাকার। একসময় মিটিংয়ে আসলে দেখতাম, ছিন্ন, বস্ত্র, পেটে খাবার নেই, দরিদ্র মানুষ দেখেছি। আমাদের প্রতিজ্ঞা ছিল, যখনই সরকার গঠন করতে পারব, এই মানুষের ভাগ্য আমরা পরিবর্তন করব। দেশের মানুষের জীবনমান উন্নত করব। আজকে অন্তত এটুকু বলতে পারি- আজকের বাংলাদেশে দরিদ্রতার হার কমাতে পেরেছি, ক্ষুধামুক্ত বাংলাদেশ করতে পেরেছি।
রংপুর মহানগর আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ডা. দেলোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ এইচ এন আশিকুর রহমান। সমাবেশে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক একে এম শাহাদাত হোসেন।