টেকনাফে মাদরাসা বন্ধের সুযোগে দূুর সম্পর্কের ভাগ্নিকে পিতার অফিসে নিয়ে গিয়ে ধর্ষনের পর হত্যা করেছে মামা।
ঘটনাটি ঘটেছে টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের দারুস সুন্নাহ মাদরাসার ২২ নং কক্ষে। এঘটনায় জড়িত ইরফান নামে এক যুবককে আটক করা হয়েছে। সে মাদরাসার সহকারি পরিচালক মাও. আলী আহমদের ছেলে এবং নিহত শিশু হ্নীলা ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড মৌলভী বাজারের ছানা উল্লাহ’র মেয়ে ফারিহা আক্তার (৮)। দু"জনই ওই মাদরাসার ছাত্র ছিল।
শুক্রবার (২৮ জুলাই) ওই মাদরাসার নালা থেকে মৃতদেহটি উদ্ধার করে র্যাব।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নিজ বাড়ির সামনের রাস্তা থেকে শিশু ফারিহা জান্নাতকে তুলে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। তারপর বিভিন্ন জায়গায় খোঁজখবর নিয়ে কোথাও তার সন্ধান পাওয়া যায়নি। রাতে হঠাৎ অপহৃত নিকাটাত্ময়দের মোবাইল নম্বরে একটা অপরিচিত কল আসে। সে নম্বর থেকে মেয়ের মুক্তিপণ হিসেবে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করে। এঘটনায় নিহত শিশুর মা জেসমিন আক্তার গত বৃহস্পতিবার রাতে টেকনাফ মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
এদিকে, অপহরণের বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে র্যাবের নজরে আসে। এরপর থেকে র্যাব কয়েকটি দলে বিভক্ত হয়ে তদন্ত চালায়। এক পর্যায়ে ইরফানকে সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ চালালে এক পর্যায়ে স্বীকার করে। তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী গত বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) সন্ধ্যায় হ্নীলা দারুস সুন্নাহ মাদ্রাসার নূরানী বিভাগের তৃতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থী এবং হ্নীলা ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড মৌলভী বাজারের ছানা উল্লাহ’র মেয়ে ফারিহা আক্তার (৮) বাড়ির পাশের দোকানে যায়। সেখানে তাকে খাবারের লোভ দেখিয়ে দুর সম্পর্কের মামা আটককৃত ইরফান মাদরাসায় তার পিতার ২২ নং কক্ষে নিয়ে গিয়ে ধর্ষন করে। এর ফলে অতিরিক্ত রক্ত ক্ষরণ হলে নাইলন রশি দিয়ে তাকে হত্যা করা হয়। এক পর্যায়ে তার কাপড় খুলে ফেলে পলথিনে করে একটি জায়গায় পুঁতে রাখে এবং শিশুর মৃতদেহটি মাদরাসা পিছনের নালায় ফেলে দেয়। পবিত্র আশুরা উপলক্ষে মাদরাসাটি বন্ধ রয়েছে। এ সুযোগে এই নৃশংস ঘটনাটি নিভৃতে তার পিতার অফিসে ঘটিয়েছে। পরে ধৃত ব্যক্তির স্বীকারোক্তিতে উক্ত মাদ্রাসার নালায় মাদ্রাসা ছাত্রী ফারিহার মৃতদেহ পাওয়া যায়। বিষয়টি টেকনাফ থানা পুলিশকে অবহিত করা হলে টেকনাফ মডেল থানার অফিসার্স ইনচার্জ মোহাম্মদ জোবাইর সৈয়দ এর নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে আসেন। পরে র্যাব-পুলিশের উপস্থিতিতে ঘাতক ইরফান মেয়ে শিশুর লুকিয়ে রাখা কাপড় উদ্ধার করে দেন। রাত সাড়ে ৯টারদিকে পুলিশ সুরতহাল রিপোর্ট তৈরীর পর মৃতদেহ পোস্টমর্টেমের জন্য নিয়ে যায়।
রাতেই গনমাধ্যকর্মীদের কক্সবাজার র্যাব-১৫ অধিনায়ক ভারপ্রাপ্ত মেজর সৈয়দ শাফিকুল হক সংবাদ সম্মেলন করে এই লোমহর্ষক ঘটনার বিবরণ দেন।
তিনি আরো জানান- ঘটনার সাথে আর কেউ জড়িত কিনা খতিয়ে দেখা হবে।
তবে কি কারণে এই ধরণের লোমহর্ষক ঘটনার সুত্রপাত তা নিয়ে জনমনে ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও সমালোচনা চলছে। হৃদয় বিদারক এই ঘটনার পর সাধারণ অভিভাবকদের মধ্যে চরম উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা চলছে।