টেকনাফে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) দু'টি পৃথক অভিযানে সাড়ে ১০ কোটি টাকার ২ কেজি ১১৯ গ্রাম ক্রিস্টাল মেথ আইস এবং ১১৮ বোতল বিদেশী মদ উদ্ধার করেছে।
তবে এসময় কোন পাচারকারীকে আটক করা সম্ভব হয়নি।
২৩ মে সোমবার ভোর রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এসব অভিযান পরিচালনা করা হয়।
টেকনাফ ব্যাটালিয়ন ২ বিজিবির অধিনায়ক লেঃ কর্নেল শেখ খালিদ মোহাম্মদ ইফতেখার জানান,
টেকনাফ উপজেলার হ্নীলার দমদমিয়া বিওপি'র বিআরএম -১০ থেকে আনুমানিক ৬০০ গজ দক্ষিণ-পূর্ব দিকে কামালের জোড়া নামক এলাকা দিয়ে মাদকের একটি বড় চালান মায়ানমার হতে বাংলাদেশে পাচার হতে পারে। ওই সংবাদের ভিত্তিতে টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (২ বিজিবি ) এর ব্যাটালিয়ন সদর এবং দমদমিয়া বিওপি হতে দুইটি চোরাচালান প্রতিরোধ টহলদল কয়েকটি উপদলে বিভক্ত হয়ে দ্রুত ওই এলাকায় কৌশলে অবস্থান করে। একপর্যায়ে আনুমানিক রাত সাড়ে তিনটার দিকে আরো ২০০ গজ দক্ষিণ-পূর্ব দিকে মানুষের পায়ের আওয়াজ বুঝতে পেরে পূর্ব থেকেই কৌশলগত অবস্থানে থাকা বিজিবি টহলদল তাদেরকে চ্যালেঞ্জ ও ধাওয়া করে। এসময় পাচারকারী দুইজন ব্যক্তি বিজিবি'র উপস্থিতি টের পেয়ে কেওড়া বাগানের গহীনে কিছু গোপনে লুকিয়ে রেখে অন্ধকারের সুযোগে পালিয়ে যায়। বিজিবি তাদের পিছু ধাওয়া করেও আটক করতে ব্যর্থ হয় । পরে টহলদল ওই কেওড়া বাগানের সম্ভাব্য স্থানে ব্যাপক তল্লাশী অভিযান পরিচালনাকালে চোরাকারবারী কর্তৃক কৌশলগতভাবে গাছের ঝোপে লুকানো অবস্থায় কয়েকটি স্থানে কালো পলিথিনের পোটলা দেখতে পায়। এর মধ্যে একটি পোটলায় মোড়ানো ৫ কোটি ২৮ লাখ টাকার ১ কেজি ৫৬ গ্রাম ক্রিস্টাল মেথ আইস জব্দ করতে সক্ষম হয় ।
অপরদিকে, একইদিন ভোর রাতে অপর একটি অভিযানে শাহপরীরদ্বীপ বিওপি'র বিআরএম- ৪ হতে আনুমানিক ১ কিলোমিটার দক্ষিণ দিকে ওবিএম পোষ্টের সামনে নাফ নদীর কিনারা দিয়ে মাদকদ্রব্যের একটি বড় চালান মায়ানমার হতে বাংলাদেশে পাচারের সংবাদে শাহপরীরদ্বীপ বিওপি'র একটি চোরাচালান প্রতিরোধ টহলদল বেড়ী বাঁধের আঁড় নিয়ে কৌশলগত অবস্থান গ্রহণ করে । আনুমানিক তিনটার দিকে টহলদল উক্ত স্থান হতে আনুমানিক ৩০০ গজ পূর্ব দিকে ২-৩ জন ব্যক্তিকে কয়েকটি বস্তা মাথায় করে নাফ নদী হতে বেড়ী বাঁধের উপরে উঠতে দেখে । টহলদল তাদের চ্যালেঞ্জ ও ধাওয়া করলে পাচারকারীরা বহনকৃত বস্তাগুলো ফেলে দিয়ে রাতের অন্ধকারের সুযোগ নিয়ে দ্রুত পার্শ্ববর্তী গ্রামের দিকে পালিয়ে যায় । পরে বিজিবি টহলদল চোরাকারবারীদের ফেলে যাওয়া বস্তার ভিতর হতে ৫ কোটি ৩৩ লাখ ২৭ হাজার টাকার ১ কেজি ৬৩ গ্রাম ক্রিস্টাল মেথ আইস এবং এক'শ ১৮ বোতল মিয়ানমারের মদ উদ্ধার করে। উদ্ধারকৃত মালিকবিহীন ক্রিস্টাল মেথ আইস এবং মদ ব্যাটালিয়ন সদরের জমা রাখা হয়েছে। পরে আইনী কার্যক্রম শেষে তা উর্দ্ধতন কর্মকর্তা , চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট , মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধি , স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও মিডিয়া কর্মীদের উপস্থিতিতে ধ্বংস করা হবে।
বিজিবির ওই কর্মকর্তা আরো জানান, পাচারকারীদের সনাক্ত করার জন্য ব্যাটালিয়নের গোয়েন্দা কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এছাড়া সীমান্ত সুরক্ষা, চোরাচালান , মাদকদ্রব্য , অবৈধ অনুপ্রবেশ এবং আন্তঃ রাষ্ট্রীয় সীমান্ত অপরাধ দমনে বিজিবি জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করে যথাযথ ও কার্যকরীভাবে পেশাদারিত্বের সাথে দায়িত্ব পালন করে আসছে। তিনি সকলের সহযোগীতা কামনা করেন।