কক্সবাজারের টেকনাফে অজ্ঞাতপরিচয় সন্ত্রাসীরা আরও দুইজনকে অপহরণ করেছে। এর দুই দিন আগে আরও পাঁচজনকে অপহরণ করে অজ্ঞাতপরিচয় সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনায় টেকনাফের সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
রবিবার (৩০ এপ্রিল) সকালে টেকনাফের বাহাছড়ার জাহাজপুরা পাহাড়ি এলাকা থেকে অপহরণ করা হয় মো. রহিম (৩২) ও মো. রেদোয়ান (২০) নামে দুজনকে। তারা উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের জাহাজপুরা গ্রামের বাসিন্দা। এ সময় অপহরণকারীদের হাত থেকে পালিয়ে আবদুল আমিন ও আব্দুল্লাহ।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আব্দুল হালিম। তিনি জানান, ৩০ এপ্রিল সকালে দুই কৃষককে অপহরণের কথা শুনেছি। খবর পেয়ে পুলিশের একটি দল সংশ্লিষ্ট এলাকার পাহাড়ে অভিযান শুরু করে।
এর আগে পাঁচ রোহিঙ্গাকে অপহরণের বিষয়ে ওসি বলেন, “পুলিশি তৎপরতার কারণে পাঁচজন উদ্ধার হয়েছে। এসব ঘটনার মূলহোতাদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে।”
স্থানীয় বাহারছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন খোকন বলেন, “সকালে পাঁচ কৃষক পাহাড়ের কাছাকাছি পান বরজে কাজ করতে গেলে ডাকাতদলের হামলার কবলে পড়েন। তাদের মধ্যে তিনজন পালিয়ে এলেও দু'জনকে অস্ত্রের মুখে ধরে নিয়ে যায় অপহরণকারীরা। পালিয়ে আসা দুজনকে দুষ্কৃতিকারীরা কুপিয়ে জখম করেছে।”
তিনি আরও বলেন, “এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে অস্ত্রধারী ডাকাত দল অপহরণ-মুক্তিপণ বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে। এখানকার বাসিন্দারা ভয়-ভীতির মধ্য দিন পার করছে।”
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তথ্যমতে, গত ছয় মাসে ক্যাম্পসহ টেকনাফের পাহাড়ি এলাকায় ৭২ জনকে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ৪০ জন রোহিঙ্গা ও ৩২ জন স্থানীয় বাসিন্দা।
গত ২৬ এপ্রিল নয়াপাড়া ক্যাম্পের তিন শিশু অপহরণের শিকার হয়। মুক্তিপণ দিয়ে তাদের ফিরিয়ে আনা হয়। ৩ মার্চ দুই শিশুকে অপহরণের ৮ ঘণ্টা পর ৭০ হাজার টাকা মুক্তিপণ নিয়ে ছেড়ে দেয় অপহরণকারীরা। এর আগে ৮ জানুয়ারি টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের লেচুয়াপ্রাং এলাকায় ক্ষেতে পাহারারত চার কৃষককে অপহরণ করে পাহাড়ে নিয়ে যাওয়া হয়, ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দিয়ে তারা ফিরে আসেন।
গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের জাহাজপুরা এলাকায় পাহাড়ে ঘেরা খালে মাছ ধরতে গিয়ে অপহরণের শিকার হন আট ব্যক্তি। তারা ৬ লাখ ৪০ হাজার টাকা পণ দিয়ে মুক্ত হন।