সারাদেশের উদ্যোক্তাদের সুসংগঠিত করে পর্যটন নগরী কক্সবাজারে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হলো জাতীয় উদ্যোক্তা সম্মিলন। “স্বপ্ন আমার প্রচেষ্টা সবার, স্বনির্ভর জাতি গঠনে দুর্দম পদক্ষেপ" স্লাগানকে সামনে রেখে ১৮-১৯ জানুয়ারি দুইদিন ব্যাপী এই সম্মিলন বসে। বাংলাদেশ উদ্যোক্তা ফাউন্ডেশনের আয়োজনে কক্সবাজার সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার। তিনি বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ তৈরি করতে স্মার্ট জনশক্তি তৈরি করার বিকল্প নেই। জনগণের সম্পৃক্ততা ছাড়া সরকারের পক্ষে দেশকে আধুনিক রাষ্ট্রে পরিণত করা সম্ভব নয়। সময়ে প্রয়োজনে সৃজনশীল উদ্যোক্তাদের ভূমিকা দেশের অর্থনৈতির চাকা গতিশীল করতে পারে এবং বেকারত্ব দূরীকরণে বিশেষ অবদান রাখবে। বাংলাদেশ উদ্যোক্তা ফাউন্ডেশনসহ সকল কল্যাণমূখী সংগঠনের পারস্পরিক এগিয়ে গেলেই বদলে যাবে সমাজ, বদলাবে দেশ। বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশন এবং এসএমই ফাউন্ডেশন হতে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত সারাদেশের নিবন্ধিত উদ্যোক্তাদের মানোন্নয়নের ধারাবাহিকতায় বাছাইকৃত তরুণ উদ্যোক্তাদের নিয়ে কক্সবাজার সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে সম্মিলনের আয়োজন হয়। ১৮জানুয়ারি অনুষ্ঠানের শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন কক্সবাজার চেম্বার এন্ড কমার্সের সভাপতি আবু মোরশেদ চৌধুরী খোকা। দ্বিতীয় দিবসের প্রধান আলোচক ছিলেন ইউএনডিপির ফিউচারনেশন এন্টারপ্রেনারশিপ ইকো-সিস্টেম প্রোগ্রাম স্পেশালিস্ট ও ন্যাশনাল কনসালটেন্ট আবুল খায়ের মোহাম্মদ হাফিজুল্লাহ খান (উপসচিব)। তিনি বলেন, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) থেকে উদ্যোক্তা উন্নয়নের বিশেষ প্রকল্প ইএসডিপি'র মাধ্যমে হাজারো উদ্যোক্তা তৈরি করা হয়েছে। আগামীতে লাখো উদ্যোক্তা তৈরির মাস্টার প্ল্যান সম্পন্ন হয়েছে। যার মাধ্যমে লাখ লাখ উদ্যোক্তা পাবে সকল প্রকার সহযোগিতা ও ব্যবস্থাপনা। আবুল খায়ের মোহাম্মদ হাফিজুল্লাহ খান বলেন, বাংলাদেশ উদ্যোক্তা ফাউন্ডেশনের আয়োজিত সম্মিলনকে নিজের বলে দাবি করতে হবে, এই সংগঠনকে এগিয়ে নিতে হবে। যাতে এর মাধ্যমে লাখো উদ্যোক্তার জীবন বদলে যায়। সরকারি প্রতিটি পরিকল্পনা জনবান্ধন ও উন্নয়ন মূলক। এরসাথে উদ্ভাবনীয় ক্ষমতা সম্পন্ন ব্যক্তির পারস্পরিক এগিয়ে চলার ধারাবাহিকতা থাকলে স্বনির্ভর জাতিতে পরিণত হওয়া কিছু সময়ে মাত্র। উদ্যোক্তাদের পথচলায় সকল সহযোগিতা প্রদানে আমরা প্রস্তুত। ফাউন্ডেশনের সফলতা কামনা করে তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের তরুণ উদ্যোক্তারের সৃজনশীল সংগঠন হিসেবে বাংলাদেশ উদ্যোক্তা ফাউন্ডেশনের জেলা, বিভাগ ও জাতীয় পর্যায়ের সকল আয়োজন সত্যিই প্রশংসার দাবীদার। এই পথচলায় এগিয়ে যেতে হবে ঐকান্তিক প্রচেষ্টায়। প্রথম দিবসের প্রধান আলোচক নিজের বলার মতো একটা গল্প ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি ইকবাল বাহার জাহিদ বলেন, উদ্যোক্তা হওয়ার আগে সৎ মানুষ হতে হবে। যা আপনি শুরু করার পরিকল্পনা করেছেন, তা আজই শুরু করতে হবে। লেগে থাকতে হবে। সাহসীক পদক্ষেপ থাকতে হবে প্রতিটি পরিকল্পনা বাস্তবায়নের শুরুতে। ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা কাজকে সহজ ও সুন্দর করে। তাই নিজের নিজনিজ জায়গা থেকে সমষ্টিগত এগিয়ে চলার প্রয়াস থাকতে হবে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ উদ্যোক্তা ফাউন্ডেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মোহাম্মদ আদহাম বিন ইব্রাহিম। সার্বিক তত্বাবধানে ছিলেন ফাউন্ডেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ও সম্মিলনের আহ্বায়ক এম. সাইমুন কামাল প্রিন্স। সঞ্চালনা করেন ফাউন্ডেশনের প্রেসিডিয়াম সদস্য মাহবুব রহমান ও সাজিন জামান। দেশের উদ্যোক্তাবান্ধব সংস্থা ও ব্যক্তিবর্গ বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। সম্মিলনে উদ্যোক্তাদের পণ্য স্টলের পদর্শনী ও তরুণ উদ্যোক্তাবৃন্দ তাদের পণ্য প্রতিষ্ঠানের প্রদর্শন করছে। এতে সফল উদ্যোক্তাদের সম্মাননা প্রদান করা হয়।