দেশে এই প্রথম চিংড়ি পোনা উৎপাদনের লাইভফিড তথা 'জীবন্ত খাবার' উৎপাদন হচ্ছে কক্সবাজারে। বিভিন্ন দেশ থেকে উচ্চমূল্যে মাইক্রোএলজি আর আমদানি করতে হবে না। চিংড়ি হ্যাচারিগুলোর মালিকদের ভোগান্তি ও উৎপাদন খরচ কমবে। পাশাপাশি দেশের অর্থনীতি সমৃদ্ধ হবে। আসবে বৈদেশিক মুদ্রা। এতেকরে হ্যাচারী মালিকরা নতুন স্বপ্ন দেখছে।
বৃহস্পতিবার (৩ ফেব্রুয়ারী) বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইন্সটিটিউটের সম্মেলন কক্ষে 'চিংড়ি হ্যাচারিতে ব্যবহৃত মাইক্রোএলজি চাষ ব্যবস্থাপনা' শীর্ষক প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে এসব তথ্য উঠে আসে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কক্সবাজার-২ (মহেশখালী-কুতুবদিয়া) আসনের সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক।
বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইন্সটিটিউটের সামুদ্রিক মৎস্য ও প্রযুক্তি কেন্দ্র কক্সবাজারের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. শফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে প্রশিক্ষণে দেয়া তথ্য হলো, বিগত বছরগুলোতে হ্যাচারিতে চিংড়ির পোনা উৎপাদনের জন্য থাইল্যান্ড, আমেরিকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে উচ্চমূল্যে মাইক্রোএলজি আমদানি করে ব্যবহার করতে হতো। ২০১৪ সাল নাগাদ হ্যাচারী মালিকগণ মাইক্রোএলজির উৎস হিসেবে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের ওপর নির্ভরশীল ছিল। প্রক্রিয়াগত জটিলতার কারণে মাইক্রোএলজি আমদানি করতে নানাবিধ সমস্যার সম্মুখীন হতো ব্যবসায়ীরা। প্রজাতিভেদে এই মাইক্রোএলজির প্রতি ৫-১০ মিলিলিটার এর জন্য ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত ব্যয় করতে হয়। ভিন দেশের প্রজাতি হওয়ায় এই প্রজাতিগুলো চাষের পর্যায়ে আনার ক্ষেত্রে হ্যাচারিতে বিভিন্ন জটিলতার সৃষ্টি হয়। চিংড়ির পোনা উৎপাদন পরবর্তী ব্যবহারকৃত মাইক্রোএলজির সামান্য মজুদ ফ্রিজে সংরক্ষণ করে, পরবর্তী বছর ব্যবহার করা হয়। যার দরুন মাইক্রোএলজি চাষে বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়াল দূষণ পরিলক্ষিত হয়। কক্সবাজারে মাইক্রোএলজি উৎপাদনের মাধ্যমে দীর্ঘদিনের সেই চিংড়ি হ্যাচারির জটিলতা ও সমস্যা দূরীভূত হবে।
সিনিয়র বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা জাকিয়া হাসানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উর্ধতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মোঃ আশরাফুল হক, শাহিনুর জাহিদুল হাসান, আহমেদ ফজলে রাব্বি, সিনিয়র বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মোঃ রায়হান হোসাইন, জাহিদুল ইসলাম, তুরাবুর রহমানসহ বিভিন্ন মৎস্য হ্যাচারি সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান শেষে হ্যাচারী সংশ্লিষ্ট প্রশিক্ষণার্থীদের সনদ দেয়া হয়।