নগরের সদরঘাট থানার ধর্ষণের মামলায় দুই জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও প্রত্যেককে ৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। বুধবার (৫ এপ্রিল) চট্টগ্রামের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক ফেরদৌস আরার আদালত এ রায় দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, সাতকানিয়া উপজেলার দক্ষিণ রুপকানিয়া ৯ নম্বর ওয়ার্ড নজির আহম্মেদের বাড়ির মো. জসিমের ছেলে সাইফুল ইসলাম ফারুক (২২) ও পটিয়া উপজেলার আজিমপুর শেখ পাড়া মো. ইসমাইলের ছেলে মো. বদিউল আলম (৪৬)। রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেন আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো কফিল উদ্দীন।
মামলা নথি থেকে জানা যায়, কক্সবাজার জেলার চকরিয়া থানার এক তরুণীকে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ২০১৮ সালের ২৪ জুন নগরের চান্দগাঁও থানার বহদ্দারহাট এলাকায় নিয়ে আসে ফারুক। একইদিন নগরের বহদ্দারহাট থেকে বাসায় নিয়ে যাবে বলে নগরের সদরঘাট থানার পশ্চিম মাদারবাড়ি ডিটি রোড হাজী মঞ্জিলের ৪র্থ তলায় নিয়ে যায়। সেখানে আটক রেখে ফারুক চলে যায়। একই বছরের ২৬ জুন বাসার দরজার তালা খুলে তরুণীকে বিভিন্ন সময় দফায় দফায় জোর পূর্বক ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ষণ করে। পরবর্তীতে পতিতাবৃত্তির জন্য মো. বদিউল আলমের কাছে হস্তান্তর করে। পতিতাবৃত্তিতে রাড়ি না হইলে মেরে ফেলার ভয়ভীতি দেখায় ও মারধর করে। এছাড়াও ঘটনার দিন ফ্ল্যাটে তরুণীর দুই-দিনজন মহিলাদের সঙ্গে দেখা হয়। তারা জানায়, পতিতাবৃত্তির জন্য তকে নিয়ে এসেছে। পরে ওই মহিলাদের সহায়তায় তরুণী তার বাবাকে মোবাইল ফোনে বিষয়টি জানায়। পরে সদরঘাট থানার পুলিশের সহায়তায় তরুণীকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় তরুণী বাদী হয়ে সদরঘাট থানায় মামলা করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তৎকালীন সদরঘাট থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মুহাম্মদ রুহুল আমিন ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর আদালতে অভিযোগ পত্র জমা দেন। ২০২০ সালের ৫ অক্টোবর আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ গঠন করা হয়।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর স্পেশাল পিপি এমএ নাসের চৌধুরী বলেন, ছয়জন সাক্ষীর সাক্ষ্য-প্রমাণে ঘটনা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আদালত আসামি ফারুকে ধর্ষণের দায়ে ও মো. বদিউল আলমকে ধর্ষণের সহযোগিতা করায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, ৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও ২ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন। বর্তমানে আসামি ফারুক পলাতক থাকলেও বদিউল আলম আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে সাজা পরোয়ানা মূলে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। এ ঘটনায় মানবপাচার আইনে আরেকটি মামলা বিচারাধীন আছে।