কক্সবাজারের চকরিয়ায় চরণদ্বীপ মৌজায় ২০০ একর চিংড়িঘের দখল, লুটপাট ও পঞ্চাশ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম ও সাবেক সংসদ সদস্য উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাফর আলমসহ ৩৯ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করা হয়েছে। দায়েরকৃত মামলায় ৬০ থেকে ৭০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।
বুধবার চকরিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নালিশী মামলাটি দায়ের করেন উপজেলার ফাঁসিয়াখালী পশ্চিম পুকপুকুরিয়া এলাকার বাসিন্দা আলী হায়দার।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন বাদীর আইনজীবী মিফতাহ্ উদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, আদালতের বিচারক প্রবাল চক্রবর্তী বাদীর আবেদনটি আমলে নিয়ে
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কে তদন্তের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।
আদালতে দায়েরকৃত মামলায় সাবেক এমপি জাফর আলমকে ১ নম্বর ও সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিমকে ২ নম্বর আসামি করা হয়েছে। তৎমধ্যে সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান এবং জাফর আলম চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। এছাড়াও মামলায় অন্যদের মধ্যে রয়েছেন চিরিংগা ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিন, সাবেক চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন, বিএমচর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান বদিউল আলম, চকরিয়া উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক কাউছার উদ্দিন কছিরসহ ৩৯ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
মামলার আরজিতে বাদী উল্লেখ করেছেন, দলিলমূলে ২০০৫ সালে বিভিন্ন ইজারাপ্রাপ্ত ব্যক্তির থেকে ২০০ একর চিংড়িঘের নিয়ে মাছ চাষ ও অন্যান্য কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছিলেন আলী হায়দার। আসামিরা ইজারার চিংড়িঘের থেকে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা না দিলে ঘের দখলসহ নানা হুমকি দেন। ২০০৯ সালের ১ জানুয়ারি সকাল ১০টায় সাবেক সংসদ সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাফর আলমের নেতৃত্বে অন্য আসামিরা ফাঁকা গুলি করতে করতে ইজারা করা চিংড়িঘের দখল করে নেন। ঘেরে থাকা ১৫ লাখ টাকা দামের দুটি ইঞ্জিনচালিত বোট, ৫টি নৌকা, ৫ লাখ টাকার ১০০টি ছাগল, ১০ লাখ টাকার ২০টি মহিষ ও চিংড়িঘেরে থাকা পাঁচটি টংঘর, ১০টি জালসহ বিভিন্ন মালামাল লুটপাট করে নেওয়ার কথা উল্লেখ করা হয় বাদীর এজাহারে।
মামলার ব্যাপারে চকরিয়া-পেকুয়া আসনের সাবেক এমপি ও কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব:) সৈয়দ মোহাম্মদ ইবরাহিম জানান, যে সময়ে ঘটনা দেখানো হয়েছে ওই সময়ের আগে বা পরে চকরিয়াতে যায়নি। ঘটনার বিষয়েও জানিনা এবং আমি অবগত নয়।
শুধুমাত্র হয়রানি ও সম্মান ক্ষুন্ন করতে আমাকে মামলায় জড়ানো হয়েছে।
মামলার বাদী আলী হায়দার বলেন, আসামিরা রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী ও ডাকাত প্রকৃতির লোক হওয়ায় এত দিন মামলা করতে আমি সাহস পাইনি। এখন তাঁদের ক্ষমতাও চলে গেছে, প্রভাবও নেই। আশাকরি আদালতে কাছে সুবিচার পাব।