কক্সবাজারের চকরিয়া পৌরশহরে পথচারী ও যানজট থেকে মানুষ পরিত্রাণ পেতে পরিচ্ছন্ন শহর হিসেবে গড়ে তুলতে এবং যানজটমুক্ত রাখার জন্য উপজেলা প্রশাসন ও পৌরসভার যৌথ উদ্যোগে অভিযান চালানো হয়েছে। এসময় পৌরশহরের চিরিঙ্গা মহাসড়কের ধারে ও অভ্যন্তরীণ সড়কগুলোতে ফুটপাত দখল করে গড়ে উঠা অবৈধ ৪ শতাধিক ভাসমান দোকান উচ্ছেদ করা হয়।
সোমবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত এ অভিযান চালায় প্রশাসন ও পৌর কর্তৃপক্ষ। উচ্ছেদ অভিযানে নেতৃত্বে ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট) জেপি দেওয়ান ও চকরিয়া পৌরসভার মেয়র আলমগীর চৌধুরী।
জানা গেছে,চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের চকরিয়ায় পৌরশহরে ত্রি-লাইন বিশিষ্ট সড়ক রয়েছে। দুরপাল্লার গাড়িগুলো বক্স রোড দিয়ে চলাচল করলেও লোকাল গাড়ি চলাচল করে বক্স রোড়ের দু'পাশের সড়ক দিয়ে। এতে দু’পাশের সড়কের উপরে কয়েকশত ভাসমান দোকানের পাশাপাশি বিভিন্ন শপিংমল ও মার্কেট ঘেষে ফুটপাতের উপর স্থায়ী দোকান নির্মাণ করা হয়। এছাড়াও যত্রতত্রে বিভিন্ন পরিবহণের গাড়ি পার্কিং করায় যানজট নিত্যকার ঘটনা হয়ে উঠে। এতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় যাত্রী, পথচারী, শিক্ষার্থী ও বিপনী কেন্দ্রে বাজার করতে আসা নারী-পুরুষদের।
সরেজমিন দেখা যায়, চিরিংগা নিউ মার্কেট, হাসেম মার্কেট, সমিতি মার্কেট, সুপার মার্কেট ও আনোয়ার শপিং কমপ্লক্সসহ বিভিন্ন মার্কেটের সামনে এবং সড়কের উপরে টমটম, সিএনজি চালিত টেক্সি, ম্যাজিকসহ বিভিন্ন ছোট গাড়ি পার্কিং করে রাখা হয়। পৌরসভার কমিউনিটি পুলিশের সদস্যরা ওইসব গাড়ি সরাতে চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হন।
এছাড়াও দীর্ঘদিন ধরে পৌরশহরের চিরিঙ্গায় মহাসড়কের পাশে ও অভ্যন্তরীণ সড়কসমুহে ফুটপাত দখল করে ব্যবসা পরিচালনা করায় যানজট ও পথচারীদের যাতায়াতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়। কোন একজন মুমূর্ষু রোগীকে যানজটের কারণে সঠিক সময়ে হাসপাতালে নিয়ে যেতে কষ্টকর হয়ে যেতো। তাছাড়া সড়কজুড়ে সিএনজি অটোরিকশা ও টমটম গাড়ি গুলো স্টেশনের রাস্তা দখল করায় যানজট নিত্যই লেগে থাকতো। যার কারণে উপজেলা প্রশাসনের মাসিক আইন শৃংখলা কমিটির সভার সিদ্ধান্তের আলোকে সোমবার সকালে উপজেলা প্রশাসন ও পৌরসভার যৌথ উদ্যোগে অভিযান চালায়। অভিযানকালে অন্তত ৪ শতাধিক ভাসমান দোকান উচ্ছেদ করা হয়। দোকানগুলোর মধ্যে ফলের দোকান, স্টেশনারী, পানের দোকান ও বিভিন্ন কাপড়ের দোকান রয়েছে।
অভিযানের ব্যাপারে জানতে চাইলে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জেপি দেওয়ান বলেন, উপজেলা পরিষদের মাসিক আইন শৃংখলা কমিটির সভার সিদ্ধান্তের আলোকে উপজেলা প্রশাসন ও পৌরসভার যৌথ উদ্যোগে পৌরশহরকে যানজটমুক্ত রাখতে অভিযান পরিচালনা করা হয়। উপজেলা প্রশাসন ও পৌরসভার সমন্বয়ে অভিযান চালিয়ে অন্তত চার শতাধিক বিভিন্ন ভাসমান দোকান উচ্ছেদ করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, এসব দোকান উচ্ছেদ অভিযান করার অন্তত তিনদিন পূর্বে মাইকিংয়ের মাধ্যমে সতর্ক করার পরও ভাসমান দোকান ব্যবসায়িরা দোকান সরিয়ে না ফেলায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। উপজেলা প্রশাসনের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে তিনি জানান।
অভিযানের সময় উপস্থিত ছিলেন, চকরিয়া পৌরসভার সচিব মাসউদ মোর্শেদ প্যানেল মেয়র ফোরকানুল ইসলাম তিতু, কাউন্সিলর নুরুস শফি, কাউন্সিলর হানিফ, কাউন্সিলর সাইফুল ইসলাম, বিভিন্ন কাউন্সিলর, থানা পুলিশসহ পৌরসভার কর্মকর্তা ও কমিউনিটি পুলিশের সদস্যরা।
চকরিয়া পৌরসভার মেয়র আলমগীর চৌধুরী বলেন, যেকোন উপায়ে চকরিয়া
পৌরশহরকে যানজট মুক্ত রাখা হবে। প্রয়োজনে প্রতিদিনই অভিযান অব্যাহত রাখব।