আজ শুক্রবার ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

চকরিয়ায় ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন : স্মারকলিপি প্রদান

চকরিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি : | প্রকাশের সময় : বুধবার ৫ জানুয়ারী ২০২২ ০৮:৫৫:০০ অপরাহ্ন | কক্সবাজার প্রতিদিন

কক্সবাজারের চকরিয়া পৌর শহরের প্রতিষ্ঠিত তরুণ ব্যবসায়ী লতিফ উল্লাহকে নির্মম হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে বিক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে সাধারণ ব্যবসায়ী ও শ্রমিক-কর্মচারীরা।

বুধবার (৫ জানুয়ারি) সকালে চকরিয়ার সর্বস্থরের সম্মিলিত ব্যবসায়ী সংগঠনের উদ্যোগে খুনিদের গ্রেপ্তারের দাবীতে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে প্রথমে বিশাল মানববন্ধন পরে বিক্ষোভ মিছিল করেছে।

বুধবার সকাল ৬টা থেকে ১১টা পর্যন্ত চকরিয়া পৌরশহরের সকল মার্কেট, বিপনি বিতান ও দোকানপাট বন্ধ রেখে শামিল হয়েছে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধনে। হাজারো মানুষের প্রতিবাদে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে পৌরশহর। বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন শেষে ব্যবসায়ীরা লতিফ হত্যার খুনিদের চিহ্নিত করে অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবীতে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে। মানববন্ধনে ব্যবসায়ী নেতারা বলেন, আগামী ৪৮ঘন্টার মধ্যে খুনিদের গ্রেফতার করে শাস্তির আওতায় আনা না হলে তারা আগামীতে আরো বৃহত্তর কর্মসুচি দিয়ে ব্যবসায়ীরা রাস্তায় নেমে আসবে বলে হুশিয়ার জানিয়েছেন ব্যবসায়ী মহল।

এসময় চকরিয়া পৌরশহরে সাধারণ জনতা, ব্যবসায়ী সংঘটন, দোকান মালিক সমিতি, দোকানের শ্রমিক-কর্মচারীসহ হাজারো মানুষ একাকার হয়ে মানববন্ধনে মিলিত হয়ে প্রশাসনের কাছে দাবী জানিয়েছেন আমরা বাচঁতে চাই, আমাদের জানমালের নিরাপত্তা চাই। আমরা রাজনীতি করিনা, সামান্য ব্যবসা করে পরিবারের অন্ন যোগাতে সারাদিন ব্যস্থ থাকি।

বক্তারা আরও বলেন, আমরা পৌশহরের চিহ্নিত সন্ত্রাসী, চাদাঁবাজ, মাদক ব্যবসায়ী, ছিনতাইকারী, ইভটিজিংকারী ও কিশোর গ্যাংয়ের অত্যাচার থেকে বাচঁতে চাই। বর্তমানে সাধারণ ব্যবসায়ীরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে। মার্কেট গুলোতে সারাক্ষণ বিচরণ করা কিশোর গ্যাংয়ের ভয়ে শংকিত থাকি। পৌরশহরের অপরাধ প্রবনতারোধে ব্যবসায়ী, উপজেলা প্রশাসন ও পৌরসভার আর্থিক সহয়োগিতায় পুরো শহরে সিসি ক্যামরা লাগানো হলেও তা অনেকদিন ধরে বন্ধ রয়েছে। আমরা জানিনা পৌরশহরের অপরাধ প্রবনতারোধে প্রশাসনের ভুমিকা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে উঠেছে কেন?

পরে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এবং চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবর স্মারকলিপি দেন ব্যবসায়ী সমিতির নেতৃবৃন্দরা।

এসময় ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ব্যবসায়ী লতিফ হত্যাকান্ডে জড়িতদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার আশ্বাস দেন। মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলে নেতৃত্ব দেন চকরিয়া পৌর মেয়র আলমগীর চৌধুরী, কক্সবাজারস্থ সাতকানিয়া লোহাগাড়া সমিতির সাধারণ সম্পাদক জেবর মুল্লুক, সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ সাহাব উদ্দিন, চকরিয়া পৌর ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি রেজাউল হক চৌধুরী, চকরিয়া পৌর কাউন্সিলর মুজিবুল হক, কাউন্সিলর নুরুস শপি প্রমুখ।

মানববন্ধনে কক্সবাজার দোকান মালিক সমিতি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসেম, সহ সাধারণ সম্পাদক খালেদ ওমর রানা, নির্বাহী সদস্য আবুল কালাম, ব্যবসায়ী নেতা লোকমান সওদাগর, বাদশাসহ স্থানীয় ব্যবসায়ীবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন- চকরিয়া পৌরসভার মেয়র আলমগীর চৌধুরী, চকরিয়া কলেজের অধ্যক্ষ আ.ক.ম গিয়াস উদ্দিন, চকরিয়া ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আলহাজ্ব মো.রেজাউল করিম, কাউন্সিলর মুজিবুল হক, উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক কাউছার উদ্দিন কছির, চকরিয়া ওয়েষ্টার্ন প্লাজার সভাপতি যুবনেতা আজিজুল হকসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ী সমিতির নেতৃবৃন্দরা। ব্যবসায়ী লতিফ উল্লাহ হত্যার প্রতিবাদে অনুষ্টিত মানববন্ধনে সংহতি প্রকাশ করেন কক্সবাজার দোকান ব্যবসায়ী ফেডারেশন।

উল্লেখ্য, গত সোমবার রাত সাড়ে দশটার দিকে পৌরশহরের ২নং ওয়ার্ডের হাইস্কুল সড়ক এলাকায় ধারাল অস্ত্র দিয়ে ব্যবসায়ী ও বিকাশের এজেন্ট মোহাম্মদ লতিফ উল্লাহকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ সময় তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের টাকাও লুট করে নেয় দুর্বৃত্তের দল।

ব্যবসায়ী লতিফ উল্লাহ লোহাগাড়া উপজেলার আধুনগর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের সুফী পাড়ার মৃত ইলিয়াছ সওদাগরের পুত্র।

স্থানীয়রা জানান, চকরিয়া পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের হাইস্কুল সড়কের পাশে লতিফ উল্লাহর মালিকাধীন কোমল পানীয়সহ বিভিন্ন পণ্যের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। সোমবার রাত সাড়ে দশটার দিকে ব্যবসার কাজ সেরে দোকান বন্ধ করার সময় ৩-৪ জনের একদল সন্ত্রাসী এসে ধারাল অস্ত্র দিয়ে লতিফ উল্লাহকে কুপিয়ে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে চকরিয়া সরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্মরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে।

পুলিশ তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে হত্যায় ব্যবহৃত ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করেছে।