দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইনের কাজ শেষ হলে চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারে যাওয়ার পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে পুরোনো কালুরঘাট সেতু। ৯১ বছরের জরাজীর্ণ সেতু সংস্কার করে ট্রেনের গতি বৃদ্ধি করতে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সহযোগিতা নিচ্ছে রেলওয়ে।
এজন্য বুয়েট সমীক্ষা ফি হিসেবে প্রথমে ১২ কোটি ৬৫ লাখ টাকা দর দিলেও বেশ কয়েক দফা রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকের পর ৮ কোটি টাকায় রাজি হয়েছে।
গত বছরের ৯ অক্টোবর কালুরঘাট সেতু পরিদর্শন করেন বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ও পর্যবেক্ষক দলের প্রধান এ এফ এম সাইফুল আমিন, অধ্যাপক খান মাহমুদ আমানত ও আবদুল জব্বার খান। তাঁরা সেতু পরিদর্শন করে রেলওয়ের কাছে প্রতিবেদন জমা দেন। ওই প্রতিবেদন পাওয়ার পর সেতুর সক্ষমতা বৃদ্ধির বিষয়ে বুয়েটের কাছ থেকে কারিগরি সহায়তা নিচ্ছে রেলওয়ে।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী আবু জাফর মিয়া জানান, পুরনো কালুরঘাট সেতু সংস্কারের জন্য বুয়েটের সাথে সমঝোতা হয়েছে। আগামী সপ্তাহে চুক্তি হবে। বুয়েট প্রতিনিধিদের ফিল্ড ভিজিটের পর সমীক্ষার কাজ শুরু হবে।
রেলওয়ের প্রকৌশলীরা জানান, বর্তমানে কালুরঘাট সেতুর ওপর দিয়ে চট্টগ্রাম-দোহাজারী রেললাইনে ১০ টন ভারী ট্রেনের ইঞ্জিন চলাচল করে। এ সময় গতি থাকে সর্বোচ্চ ১০ কিলোমিটার। কিন্তু কক্সবাজারগামী ট্রেনের ইঞ্জিনের ওজন হবে ১২ থেকে ১৫ টন। ট্রেনের গতি সর্বোচ্চ ৮০ থেকে ১০০ কিলোমিটার। কালুরঘাট সেতুর জরাজীর্ণ অবস্থার কারণে এই গতিতে ট্রেন চালানো সম্ভব হবে না। ৪০-৫০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চালানোর পরিকল্পনা আছে। তাই বুয়েটের পরামর্শক দলের পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে। তাদের পরামর্শ অনুযায়ী সেতু সংস্কার করা হবে।
কালুরঘাটে কর্ণফুলী নদীর ওপর রেল ও সড়ক সেতুর জন্য ২০১৮ সালে প্রণয়নকৃত নকশায় নদী থেকে সেতুর উচ্চতা ধরা হয় ৭ দশমিক ৬ মিটার। প্রস্তাবিত এই প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয় ১ হাজার ১৫১ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। এই উচ্চতায় সেতু করার ব্যাপারে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) আপত্তি জানিয়ে ১২ দশমিক ২ মিটার উঁচুতে সেতু নির্মাণের অনুরোধ জানায়। বর্তমানে এই উচ্চতার ওপর ভিত্তি করে সেতুর নকশা প্রণয়নের কাজ চলছে।