২৫০ শয্যাবিশিষ্ট কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের নবনির্মিত আধুনিক বহির্বিভাগ (ডা. আব্দুন নুর) ভবন উদ্বোধন হয়েছে। যেটি দেশের কোন সরকারি হাসপাতালে প্রথম। বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) দুপুরে ফিতা কেটে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী ডা. জাহিদ মালেক এমপি। দাতা সংস্থা ইউএনএইচসিআর-এর আর্থিক সহায়তায় নবনির্মিত ভবন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে কক্সবাজার-৩ (সদর-রামু-ঈদগাঁও) আসনের সংসদ সদস্য ও হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি সাইমুম সরওয়ার কমল, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব ড. মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার, জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব হাবিবুর রহমান খান, ইউএনএইচসিআর কক্সবাজারের হেড অফ অপারেশন ইউকো আকাসাকা, স্বাস্থ্য বিভাগের চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক ডাক্তার মোঃ শাখাওয়াত উল্লাহ, কক্সবাজার সরকারি মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডাক্তার মোঃ ফরহাদ হোসেন, অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ সামছু-দ্দৌজা, হাসপাতালের সুপার ডা. মোমিনুর রহমান, সিভিল সার্জন ডাক্তার মাহবুবুর রহমান, জেলা বিএমএ সভাপতি ডাক্তার পু চ নু, সাধারণ সম্পাদক ডাক্তার মাহবুবুর রহমান, হাসপাতালের সহকারি পরিচালক ডাক্তার মোহাম্মদুল হক, আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাক্তার মোঃ আশিকুর রহমান, জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি ফজলুল কাদের চৌধুরী, কক্সবাজার প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মো. মুজিবুল ইসলামসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন। ডা. আব্দুন নুর ভবন উদ্বোধনের পর হাসপাতাল প্রাঙ্গণে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, আমাদের কোয়ালিটি সেবা দিতে হবে। ভালো সেবা দিতে হবে। পাশাপাশি হাসপাতালকে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। কোয়ালিটিপূর্ণ সেবা দিয়ে পুরস্কৃত হওয়ায় হাসপাতালের ডাক্তার, নার্সসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান মন্ত্রী। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, নিয়মনীতির মাধ্যমে বদলি, পদোন্নতি হয়। এটাই চাকুরির নিয়ম। যতদিন যেখানে থাকেন মনোযোগ দিয়ে কাজ করেন। মনোযোগ সহকারে সেবা দিবেন। চাকুরিজীবিদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ট্রান্সপারের চিন্তা মাথায় রেখে ভালো সেবা দিতে পারবেন না। যতদিন থাকবেন ভালো সেবা দিবেন। সময় হলে ট্রান্সপার হবে। প্রমোশনের সময় প্রমোশন পাবেন। মন্ত্রী বলেন, আমরা মধ্যম আয়ের দেশ। রিসোর্সের ঘাটতি আছে। দেশের সীমাবদ্ধতার কথা মাথায় রেখে কাজ করতে হবে। নিজেদের সীমাবদ্ধতার মাঝেও সফলতার কথা তুলে ধরে জাহিদ মালেক এমপি বলেন, আমাদের ১৭ কোটি লোককে চিকিৎসা দিতে হয়, সেটা মনে রাখতে হবে। প্রয়োজনের তুলনায় যোগান নাই। তবু আমরা থেমে নেই। করোনার সময় বিনামূল্যে ৩৪ কোটি টিকা দিয়েছি। তাও সবার আগে। আশেপাশে যখন কেউ টিকা পায়নি তখন আমরা পেয়েছি টিকা। করোনায় আমাদের মৃত্যুও হার বিশ্বে সবচেয়ে কম। অক্সফোর্ড বলছিল, করোনায় প্রতিদিন ১০ হাজার লোক মারা যাবে। অথচ আড়াই বছরে ২৯ হাজার লোক মারা গেছে। বিশ্বের অন্যান্য দেশের হিসেবে তা খুবই কম। যদিওবা একটি লোকও মরুক কামনা করি না। এখন করোনায় একটি লোকও মারা যাচ্ছে না। আপানারা জানেন না, হার্টঅ্যটাকে প্রায় দুইশ লোক মারা যায়। কিডনি রোগে অনেক লোকের মৃত্যু হচ্ছে। আমাদের সেবার ক্ষেত্রে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। #আধুনিক বহির্বিভাগে যেসব সেবা মিলবে: হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আধুনিক বহির্বিভাগে মেডিসিন, অর্থোপেডিক, সার্জারী, গাইনি, চক্ষু, নাক কান গলা, দন্ত, চর্মরোগ, হৃদরোগ বিভাগসহ সরকারি সব ধরণের স্বাস্থ্যসেবা মিলবে। বিশেষ সেবা হিসেবে রয়েছে শিশু বিকাশকেন্দ্র, ফিজিওথেরাপি ইউনিট, নিয়মিত ভেকসিন কার্যক্রম, এইচআইভি/এইডস সেবা, প্রতিবন্ধী সেবা, মানসিক স্বাস্থ্য বিভাগ। কিশোরদের এডোলেসন কর্ণার, গর্ভবতী ও প্রসব পরবর্তী মা-দের এএনসি/পিএনসি সেবা, জরায়ু মুখের ক্যান্সার স্ক্রিনিং করতে ভায়া সেন্টার, ব্রেস্ট ক্লিনিকে দেওয়া হবে মা-দের স্তন ক্যান্সারের চিকিৎসা। আধুনিক বহির্বিভাগে যুক্ত আছে পুস্টি ও ব্রেস্ট ফিডিং সেন্টার। ব্রেইন, লিভার, কিডনি, পরিপাকতন্ত্র বিভাগের ডাক্তার নিয়মিত থাকবেন। শিশু বিকাশকেন্দ্রে প্রতিবন্ধী ও বিকলাঙ্গ শিশু রোগীদের থেরাপি নিশ্চিত করা হবে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকসহ সংশ্লিষ্ট মেডিকেল অফিসারগণ নিয়মিত রোগি দেখবেন। পাশাপাশি ইসিজি, ইকো কার্ডিওগ্রাফি, এনসিডি কর্ণার, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিসসহ নানাবিধ অসংক্রামক রোগ ব্যাধির পরিপূর্ণ চিকিৎসা ও রোগ নির্ণয়ের ব্যবস্থা আছে বহির্বিভাগে। নীচ তলায় টিকিট কাউন্টার। তার পাশেই মহিলাদের পৃথক নামাজঘর। স্বাস্থ্য শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের জন্য আধুনিক কনফারেন্স রুমও রাখা হয়েছে।