বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত কক্সবাজারে বছরের শেষ সময়ে ভ্রমণে এসেছেন হাজারো মানুষ। এসব পর্যটকদের বেশির ভাগই আসছেন খ্রিষ্টীয় ক্যালেন্ডারে বছরের শেষ রাত ও নতুন বছরের প্রথম প্রহর অর্থাৎ- থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপন করতে। তবে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে বর্ষবিদায় কিংবা বর্ষবরণ নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে পুলিশ।
পর্যটকদের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা টুরিস্ট পুলিশ বলছেন, ২০২২ সালের শেষ সূর্যকে বিদায় জানাতে প্রতিবছর এই সৈকতে সমাগম ঘটে অন্তত তিন লাখ পর্যটকের। এবারও তার ব্যত্যয় ঘটবে না। ইতিমধ্যে দুই লাখের কাছাকাছি পর্যটক কক্সবাজারে এসেছেন। শুক্রবার (৩০ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা নাগাদ আরও ৫০ থেকে ৬০ হাজার আসতে পারে।
এ দিকে থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপনে পুলিশ প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞায় হতাশার কথা জানিয়েছেন সৈকতে ভ্রমণে আসা পর্যটকেরা। পরিবারের সদস্য নিয়ে সৈকত ভ্রমণে আসা পর্যটকেরা বলছেন, হোটেল এবং সমুদ্রসৈকতে বর্ষবিদায় এবং বর্ষবরণের কোনো আয়োজন নেই দেখে অবাক হতে হচ্ছে। ভ্রমণে আসা কমবেশি সবার ইচ্ছে ছিল, সৈকতের বালুচরে দাঁড়িয়ে রাত ১২টা ১ মিনিটে পুরোনো ২০২২ সালকে বিদায় এবং নতুন বছরকে ২০২৩ সালকে বরণ করার।
পর্যটকরা আরও বলেন, আতশবাজি ঝলকানি এবং ফানুসের আলোয় ঝলমল হতো অন্ধকার আকাশ। আগেও তিন চার লাখ মানুষের উপস্থিতিতে থার্টি ফার্স্ট নাইটের উৎসব হয়েছে। তখন নাশকতা, বোমা হামলার চিন্তা কারও মাথায় ছিল না। কিন্তু এখন ভাবতে হচ্ছে।
সি গাল হোটেলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরুল ইসলাম ছিদ্দিকী বলেন, এবারও থার্টি ফার্স্ট নাইটের কোনো আয়োজন হোটেলে রাখা হয়নি। তবে অতিথিদের জন্য হোটেলের খোলা মাঠে (সুইমিংপুলের পাশে) ডিনারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান বলেন, সরকারি নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে সৈকতের উন্মুক্ত স্থানে থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষে কনসার্ট, গান বাজনাসহ সব ধরনের আয়োজন বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে হোটেল কর্তৃপক্ষ চাইলে তাদের অতিথিদের জন্য নববর্ষ উদযাপনের আয়োজন করতে পারে। সে ক্ষেত্রে সেটি বিবেচনা করা হবে।
টুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. জিললুর রহমান বলেন, কক্সবাজারের নাজিরারটেক থেকে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ পর্যন্ত ১২০ কিলোমিটার সৈকতের কোথাও আতশবাজি, ফটকা ফোটানোসহ গান-বাজনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান কিংবা ব্যান্ডসংগীতের আয়োজন করতে পারবে না কেউ। তবে স্বাভাবিক অবস্থায় বালুচরে দাঁড়িয়ে সমুদ্র উপভোগ করা যাবে। বিধিনিষেধ পালনে টুরিস্ট পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কঠোর অবস্থানে থাকবে।