আজ সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

কক্সবাজারে হজ্ব কাফেলার নামে প্রতারণা, মূল হোতাসহ ধরা পড়লো ২ জন

নিজস্ব প্রতিবেদক, কক্সবাজার : | প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার ১৯ অক্টোবর ২০২৩ ১১:৩৯:০০ অপরাহ্ন | কক্সবাজার প্রতিদিন

কক্সবাজারের বিভিন্ন এলাকা থেকে হজ্ব, ওমরাহ যাত্রী নেওয়ার নামে প্রতারণা ও বিপুল পরিমাণ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলায় দুই আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। 

 

তারা হলেন, মোঃ ওমর ফারুক (৪০) ও এইচ এম আব্দুল গনি (৪০)। 

 

বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) দুপুরে শহরের বিমানবন্দর সড়ক এলাকা থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। 

 

মোঃ ওমর ফারুক চট্টগ্রামের বাঁশখালী দক্ষিণ শেখের বিল সুন্নিয়া দক্ষিণ বাড়ির আব্দুল জব্বার এর ছেলে। তিনি নিজেকে শাহ আবদুল মালেক হজ্ব কাফেলার চেয়ারম্যান পরিচয় দেন। 

 

এইচ এম আব্দুল গনি শহরের কস্তুরাঘাট এলাকার রহমান রিসোর্ট এর পেছনের ভাড়াটিয়া বাসিন্দা। 

 

কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি রকিবুজ্জামান সংবাদের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। 

 

তিনি জানান, হজ্ব ও ওমরার কথা বলে সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা করে আসছেন মোঃ ওমর ফারুক ও এইচ এম আব্দুল গনিসহ একটি চক্র। হজ্ব কাফেলার নামে তারা ইতোমধ্যে হাতিয়ে নিয়েছেন কয়েক কোটি টাকা। এ বিষয়ে মোহাম্মদ ইসমাইল নামের একজন ভুক্তভোগী থানায় মামলা করেছেন। যার থানা মামলা নম্বর ৩৬/২৩। এ মামলার এজাহারভুক্ত ৪ আসামির মধ্যে দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। 

 

প্রতারকচক্রের বিরুদ্ধে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে বলে জানিয়েছেন ওসি রকিবুজ্জামান।

 

এদিকে, গ্রেফতারের পর দুই প্রতারককে ছাড়িয়ে নিতে শক্তিশালীচক্র কাজ করছে। তদবির করছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। 

 

সদর থানার পেছনের সড়কে হোটেল তাজসেবার ৩য় তলায় একটি কক্ষে শাহ আবদুল মালেক হজ্ব কাফেলা নামে অফিস খুলেছেন মোঃ ওমর ফারুকের নেতৃত্বে একটি চক্র। জেলার বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে তাদের দালাল সিন্ডিকেট। 

 

তারা ট্রাভেল এজেন্সির সাইনবোর্ড টাঙিয়ে হজ্ব, ওমরাহ, ভিসা প্রসেসিং, বিমানের টিকিট বিক্রি ইত্যাদি সেবা প্রদানের নামে বিজ্ঞাপন প্রচার করে।

 

ভুক্তভোগী মোঃ ইসমাইল বলেন, প্রচারণায় আকৃষ্ট হয়ে আমিসহ এলাকার ৫ পরিবারের ১১ জনের ওমরাহ ভিসা বাবদ আমার মা, স্ত্রী, ছেলেসহ চারজনের জন্য ৬ লক্ষ টাকা প্রদান করি। 

 

একইভাবে আমার প্রতিবেশি মো. ইছহাক আড়াই লক্ষ টাকা, আবদুর রহিম ৩ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা, এখতিয়ার উদ্দিন ২ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা, মমতাজ উদ্দিন ১ লক্ষ ৪৫ হাজার টাকা প্রদান করেন। 

 

সাইনবোর্ডে শাহ আবদুল মালেক হজ্ব কাফেলা উল্লেখ করলেও আমাদের নিকট থেকে গ্রহণকৃত টাকার বিপরীতে রশিদ দিয়েছে পিসফুল হজ্ব কাফেলর নামে। যে প্রতিষ্ঠানটির হেড অফিস চট্টগ্রাম বলে আমাদের জানায়। 

 

ভুক্তভোগি মো. ইছহাক বলেন, ১৭ অক্টোবর সৌদিয়ার ফ্লাইট দেখিয়ে আমাদের বরাবর টিকিট সরবরাহ করে মো. ওমর ফারুক। কিন্তু ১৫ অক্টোবর হঠাৎ ওই টিকিট বাতিল করে। তাতে সন্দেহ হলে ১৬ অক্টোবর অফিসে গিয়ে আমাদের প্রদানকৃত ১৬ লক্ষ ৩৫ হাজার টাকা ফেরত চাই। সে টাকা ফেরত দিতে অস্বীকৃতি জানায়। বিভিন্ন তালবাহানা শুরু করে। প্রতারণার অভিযোগে পুলিশে সোপর্দ করার উদ্যোগ নিলে তার পাশের অফিস ইসলামি ইউনিক্স মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লি. এর প্রধান আবু ছৈয়দ কিছুক্ষণের জন্য জিম্মাদার হন। 

 

প্রতারকচক্রের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তি চান ভুক্তভোগী জনগণ।