করোনা মহামারি কাটিয়ে তিন বছর পর পূর্ণাঙ্গ সিলেবাসে অনুষ্ঠেয় এবারের এসএসসি পরীক্ষার সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ড। সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা নিতে একটি কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলার পাশাপাশি চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের পক্ষ থেকে ৭২টি ভিজিল্যান্স টিম গঠন করা হয়েছে।
আগামী ৩০ এপ্রিল সারাদেশে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এবার চট্টগ্রামে এসএসসি পরীক্ষার্থী গতবছরের চেয়ে ৫ হাজার ৫৭ জন বেড়েছে।
চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক নারায়ন চন্দ্র নাথ সারাবাংলাকে জানিয়েছেন, চট্টগ্রামে এবার ১ হাজার ১০৭টি বিদ্যালয় থেকে ১ লাখ ৫৪ হাজার ৭৬৯ জন পরীক্ষার্থী অংশ নেয়ার কথা রয়েছে। এর মধ্যে ছাত্রী ৮৬ হাজার ৪৯৯ জন এবং ছাত্র ৬৮ হাজার ২৭০ জন। গত বছর ১ হাজার ৯২ টি বিদ্যালয়ের ১ লাখ ৪৯ হাজার ৭১২ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় বসেছিল।
এবার সবচেয়ে বেশি পরীক্ষার্থী ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের। এ বিভাগ থেকে ৬১ হাজার ২০৪ জন, মানবিক বিভাগ থেকে ৫৯ হাজার ৫৩৩ জন এবং বিজ্ঞান বিভাগে সবচেয়ে কম ৩৪ হাজার ৩২ জন পরীক্ষায় অংশ নেয়ার কথা রয়েছে।
চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটি জেলা পরীক্ষার্থীরা চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের অধীন ২১৬ কেন্দ্রে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অংশ নেবেন।
পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক জানান, জেলাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি পরীক্ষার্থী চট্টগ্রাম জেলার, ১ লাখ ৬ হাজার ৮৮৫ জন। ছাত্রী ৬০ হাজার ৯৩ জন এবং ছাত্র ৪৬ হাজার ৭৯২ জন। পরীক্ষাকেন্দ্র মহানগর ও জেলা মিলিয়ে ১২৭টি।
কক্সবাজার জেলায় ২৪ হাজার ৩৩০ জন পরীক্ষার্থী আছেন। এর মধ্যে ছাত্র ১০হাজার ৮২২ এবং ছাত্রী ১৩ হাজার ৫০৮ জন। পরীক্ষাকেন্দ্র ৩০টি।
খাগড়াছড়ির ২৩ কেন্দ্রে ৪ হাজার ৪৬২ জন ছাত্র ও ৫ হাজার ৪০৪ জন ছাত্রী মিলিয়ে মোট ৯ হাজার ৮৬৬ জন পরীক্ষায় অংশ নেয়ার কথা রয়েছে।
রাঙ্গামাটির ২১টি কেন্দ্রে ৪ হাজার ৬৩ জন ছাত্র ও ৪ হাজার ৬৭৯ জন ছাত্রী মিলিয়ে মোট ৮ হাজার ৭৪২ জন এবং বান্দরবানের ১৫টি কেন্দ্রে ২ হাজার ১৩১ জন ছাত্র ও ২ হাজার ৮১৪ জন ছাত্রী মিলিয়ে মোট ৪ হাজার ৯৪৫ জন পরীক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়ার কথা রয়েছে।
কেন্দ্রগুলোতে ৬০টি সাধারণ ভিজিল্যান্স টিম এবং ১২টি বিশেষ ভিজিল্যান্স টিম দায়িত্ব পালন করবে। এছাড়া পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, উপ পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (মাধ্যমিক) ও সহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রককে দায়িত্ব দিয়ে তিন সদস্যের একটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে বলে জানান পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক নারায়ন চন্দ্র নাথ।
এক দশক ধরে প্রতিবছর ফেব্রুয়ারিতে এসএসসি পরীক্ষার নিয়মে ছেদ পড়ে ২০২১ সালে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতিতে। সেবার করোনার সঙ্গে বন্যার কারণে নয় মাস পিছিয়ে ২০২১ সালের ১৪ নভেম্বর থেকে এসএসসি পরীক্ষা শুরু হয়েছিল। একই পরিস্থিতিতে পরের বছর সাত মাস পিছিয়ে ২০২২ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে পরীক্ষা শুরু হয়েছিল। উভয় পরীক্ষা বিষয়, সিলেবাস, পূর্ণমান ও সময় কমিয়ে সংক্ষিপ্তভাবে নিয়ে ফল প্রকাশ করা হয়েছিল।
তবে কোভিড পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় ২০২৩ সালের এসএসসি পরীক্ষায় এপ্রিলে এগিয়ে আনা হয়েছে। এবার আগের মতো সব বিষয়ে পরীক্ষা নেওয়া হবে।