একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ক্লিনিক চালু করতে গেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের যে ১২ টি শর্ত পূরণ করতে হয় তার একটিও নেই, তবু প্রতিদিন শতশত মানুষের সাথে প্রতারণা করে কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে আনোয়ারার বটতলী ইউনিয়নের রুস্তমহাটে ছৈয়দ শপিং মলের ২য় তলায় এসএমএ পপুলার ডায়াগনষ্টিক সেন্টার নামে একটি প্রতিষ্ঠান। তাদের ভুল রিপোর্টে এক দম্পতির চার মাসের শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতির অবসান ঘটে এ মাসের শুরুতে। এভাবে দীর্ঘ দিন ধরেই ডায়াগনষ্টিক সেন্টারটি সেবা নিতে আসা লোকজনের সাথে প্রতারিত করে আসছে বলে জানাযায়। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর জানায়,ডায়াগনষ্টিক সেন্টারটির কোন অনুমোদন নেই। ভুল রিপোর্টের বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।
ভুক্তভোগী বারশত ইউনিয়নের বোয়ালিয়া গ্রামের বাসিন্দা মো. ইউসুফ বলেন, আমার স্ত্রী রহিমা বেগম অসুস্থতা বোধ করলে ১০ মার্চ এসএমএ পপুলার ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের নিয়মিত চিকিৎসক ডাক্তার শ্রাবনী বড়–য়ার কাছে নিয়ে যায়। চিকিৎসক আল্ট্রাসনোগ্রাফি করাতে বললে আমি দ্রুত তাদের ল্যাবে আল্ট্রাসনোগ্রাফি করি। তারা রিপোর্ট দেখে জানান আমার স্ত্রীর একটি বাচ্চা গর্ভধারণ করেছে। পরে ৩০ শে জুন আবারো চিকিৎসকের কাছে গেলে তারা আবারো আল্ট্রাসনোগ্রাফি করে রিপোর্ট দেয় আমার স্ত্রীর গর্ভে জমজ বাচ্চা। দুইবার দুই ধরণের রিপোর্ট আসায় বিষয়টি নিয়ে আমরা চিন্তিত হয়ে পড়ি। কিন্তু তারা বলেছে তাদের রিপোর্টে কোন সমস্যা নেই। পরে আমি অন্য একটি ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে গিয়ে পুনরাই আল্ট্রাসনোগ্রাফি করলে আমার স্ত্রীর একটি বাচ্চার রিপোর্ট আসে। এবং গত ৬ জুলাই আমার একটি কন্যা সন্তান জন্ম হয়। তাদের ভুল রিপোর্টে আমি আর্থিক ও মানসিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি।
জানাযায়, একটি ডায়াগনষ্টি সেন্টার অনুমোদনের জন্য হেলথ লাইসেন্স, পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র,অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থা ,বায়ু ক্যামিস্ট্রি, এক্স-রে টেকনেশিয়ান সনদ,প্যাথলজি টেকনেশিয়ান সনদ, ট্রেড লাইসেন্স, সিভিল সার্জনের অনুমোদন সনদ, ফায়ার সার্ভিসের অনুমোদন,ইনকাম টেক্স সনদ,পর্যাপ্ত পার্কিং জায়গা ও রেড়িয়েশন নিয়ন্ত্রক ব্যাজসহ প্রয়োজনীয় কার্যাদি নিশ্চিত করে আবেদন করতে হবে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর উল্লেখিত বিষয়াদি নিশ্চিত করে লাইসেন্স প্রদান করে। কিন্তু এসএমএ পপুলার ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের উল্লেখিত কোন কাগজপত্রও নেই।
চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন অফিসের তথ্যমতে আনোয়ারার এসএমএ পুপুলার ডায়াগনষ্টিক সেন্টার লাইসেন্সের জন্য কোন আবেদনই করেনি।
এসএমএ পপুলার ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের পরিচালক হাসান আলীকে রিপোর্টের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, এরকম রিপোর্ট মাঝে মধ্যে হয়ে থাকে, যান্ত্রিক কারনে অনেক সময় গর্ভের বাচ্চা দুইটা দেখাযায়।
এবিষয়ে জানতে চাইলে আনোয়ারা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মামুনুর রশিদ বলেন, ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের অদক্ষ টেকনেশিয়ান দ্বারা আল্ট্রাসনোগ্রাফি রিপোর্ট তৈরী করার করানেই এ সমস্যা। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।
