কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থা থেকে পালানো সেই নারী হাজতি রাশেদা বেগম (৩৫) কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) সকালে উখিয়া রাজাপালং উত্তর পুকুরিয়াস্থ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বুধবার বিকালে বাথরুমে যাওয়ার অজুহাতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও কারারক্ষীদের চোখ ফাঁকি দিয়ে পালিয়ে গিয়েছিল রাশেদা বেগম। তিনি উখিয়া উপজেলার রাজাপালং ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের উত্তর পুকুরিয়া এলাকার মৃত নজরুল ইসলামের মেয়ে। গত ১০ অক্টোবর উখিয়া থানার একটি অপহরণ মামলায় কারাগারে রয়েছেন।
গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ মোহাম্মদ আলী।
তিনি বলেন, নারী হাজতি পালানোর খবরটি আমাদের জানানোর পর থেকে তার বাড়িসহ আশপাশের এলাকায় নজরদারি বাড়ানো হয়। নির্ভরযোগ্য সোর্সের তথ্যের ভিত্তিতে অবস্থান নিশ্চিত হওয়ার পর অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
তার বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট মামলায় জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
কক্সবাজার জেলা কারাগারের সুপার মোঃ শাহ আলম খান বলেন, রাশেদা বেগম উখিয়া থানার মামলা নং—৩৪ দন্ডবিধি—৩৬৫/৩৮৬/৩৪ এর আসামি হিসেবে কারাগারে ছিল। হঠাৎ অসুস্থতাবোধ করলে মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে চিকিৎসার জন্য তাকে সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। স্বাভাবিকভাবে তার চিকিৎসা চলছিল।
বুধবার বিকালে হাসপাতালে বিষ পান করা একটা রোগী ঢোকার পর চারিদিকে হৈচৈ পড়ে যায়। এই সুযোগ কাজে লাগায় রাশেদা বেগম। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও কারারক্ষীর ফাঁকি দিয়ে পালিয়ে যায়। এই ঘটনায় তার বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আইনে মামলা হয়েছে।
দায়িত্ব অবহেলার কারণে দুই কারারক্ষী ইশরাত ও ইকবালকে ইতোমধ্যে সাময়িক দরখাস্ত করা হয়েছে বলে জানান জেল সুপার মোঃ শাহ আলম খান।
এদিকে অনুসন্ধান করে জানা গেছে, রাশেদা বেগম অপহরণকারী চক্রের সহযোগী। তিনি খুবই ধূর্ত ও চালাক প্রকৃতির। বিভিন্ন ছেলেকে প্রেমের প্রলোভনে ফেলে টেকনাফসহ বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে গিয়ে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করেন। সর্বশেষ গত ৫ অক্টোবর আব্দুল খালেক ও আব্দুল মালেক নামের দুই ব্যাক্তিকে টেকনাফ উপজেলার সদর ইউনিয়ন মহেশখালীয়া পাড়ায় ৬ দিন আটক রেখে তাদের পরিবারের কাছ থেকে ৮০ হাজার টাকা মুক্তিপণ আদায় করেন। এ ঘটনার পর গত ১০ অক্টোবর উখিয়া কোটবাজার সোনারপাড়া রোডে রুমখা কুলালপাড়া এলাকায় স্থানীয়রা ওই মহিলাকে ধরে উখিয়া থানায় হাতে তুলে দেয়। পুলিশ তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে পরদিন অপহরণ মামলায় আদালতে প্রেরণ করলে আদালত কারাগারে পাঠিয়ে দেন।