সাতকানিয়া পৌর সদরে শতবর্ষী গেদার পুকুর ভরাট করে মার্কেট নির্মাণের সংবাদ প্রকাশের জের ধরে সাতকানিয়া প্রেসক্লাব সভাপতি ও প্রবীণ সাংবাদিক সৈয়দ মাহফুজ-উন নবী খোকনের ওপর হামলা চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে। গত সোমবার ২৪ জুলাই রাতে পৌর সদরের কলেজ রোড ও থানার সম্মুখে দফায় দফায় এ চেষ্টা চালানো হয় বলে জানান ভুক্তভোগী সাংবাদিক।
পরে পুলিশ ধাওয়া দিলে তারা পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় মঙ্গলবার ২৫ জুলাই সাতকানিয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন সাংবাদিক সৈয়দ মাহফুজ উন নবী খোকন। সাংবাদিক খোকন দৈনিক পূর্বকোণ, দৈনিক যুগান্তর ও দ্যা ডেইলি অবজারবার'র সাতকানিয়া প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
জিডি সুত্রে জানা যায়, গত ১২ এপ্রিল থেকে সাতকানিয়া পৌরসদরের জনতা ব্যাংকের পেছনে শতবর্ষী গেদার পুকুর ভরাট কার্যক্রম শুরু হয়। পুকুরটির একাংশের মালিক মৃত কবির আহমদের ওয়ারিশ কবির মোহাম্মদ মহসিন। তিনি তার মালিকানাধীন "স্ট্যান্ডার্ড বিল্ডার্স" এর সঙ্গে অন্য উপজেলার কিছু ব্যবসায়ীকে সঙ্গে নিয়ে পুকুরটি ভরাট কার্যক্রম চালান।
সেসময় দৈনিক যুগান্তরে পুকুর ভরাট নিয়ে ধারাবাহিক সংবাদ প্রকাশ হয়। সবশেষ সংবাদ প্রকাশের জের ধরে পরিবেশ অধিদপ্তরের একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এলে তারা ‘বিশেষ প্রহরা’ বসিয়ে অর্ধশত বছর আগে পুকুরটি ভরাট হয় মর্মে ভাড়াটে সাক্ষ্য দেন। এ নিয়ে যুগান্তরে পূণরায় সংবাদ প্রকাশিত হলে ক্ষিপ্ত হয়ে কবির মোহাম্মদ মহসিন তার চাচাত ভাই কবির মোহাম্মদ জুয়েলকে দিয়ে সাংবাদিক খোকনের উপর হামলার পরিকল্পনা করেন।
জুয়েল স্থানীয় কিশোর-গ্যাংদের সঙ্গে নিয়ে বিভিন্ন সময়ে প্রতিবেদককে অনুসরণ করতে থাকেন। সবশেষ সোমবার রাতে ডাক্তার দেখিয়ে অসুস্থ আবস্থায় কলেজ রোডের একটি হোটেলে রাতের খাবার খেতে গেলে সেখানে ঢুকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করে প্রাণনাশের হুমকি দিতে থাকেন। এসময় দ্রুত দোকান থেকে বের হয়ে রিকশায় উঠতে চাইলে বাধা দেন হামলাকারীরা। পরে কৌশলে কয়েক গজ দূরে থানার ভেতর আশ্রয় নিলে তারা থানার বাইরেই দেশিয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে পাহারা বসায়। বিষয়টি সাতকানিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও অফিসার ইনচার্জকে জানালে পুলিশের একটি টিম বের হয়ে তাদের ধাওয়া দিলে তারা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।
সাংবাদিক সৈয়দ মাহফুজ-উন নবী খোকন বলেন, পুকুর ভরাট নিয়ে আমি শুরু থেকে ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে আসছি। এর আগে তারা আমাকে টাকা দিয়ে ম্যানেজ করার চেষ্টা চালায়। তাতে সফল না হয়ে কবির মোহাম্মদ মহসিন জুয়েলসহ একাধিক জনকে দিয়ে তদবির শুরু করে।
তাতেও আমি থামিনি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মহসিনের পরিকল্পনায় জুয়েল সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে আমার উপর হামলার চেষ্টা চালিয়ে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। এমনকি থানার বাইরে দেশিয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে পাহারা বসাতেও তারা ভয় পায়নি। এ ঘটনায় আমি পেশাগত দায়িত্ব পালনে আরও বড় ধরনের কোন ঘটনার শঙ্কাবোধ করছি। তবে কবির মোহাম্মদ মহসিন বলেন, আমি ৩ দিন যাবত চট্টগ্রাম শহরে অবস্থান করছি। আমাকে তিনি (খোকন) অহেতুক এ ঘটনায় জড়াচ্ছেন।
আর যতটুকু জানি জুয়েলের সাথে তার হৃদ্যতা আছে। কিন্তু কোন চিন্তা থেকে তিনি এসব করছেন আমার বোধগম্য নয়। সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়াসির আরাফাত বলেন, এ ঘটনায় থানায় সাধারণ ডায়েরি হয়েছে। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি তদন্ত পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে