শিশু ও কিশোরদের মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ হল পানিতে ডুবে মৃত্যু যা বর্তমানে অবহেলিত জাতীয় সংকট। বাংলাদেশের দ্বিতীয় স্বাস্থ্য ও তথ্য জরিপ অনুযায়ী (২০১৬) বছরে ১৪, ৪৩৮ জন শিশু (১-১৭ বছর বয়সী) পানিতে ডুবে মারা যায়। শিশু মৃত্যুর গবেষণা প্রবন্ধ ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্ট বিশ্লেষণ করে পাঁচটি প্রধান কারণ নির্ধারণ করা যায় যেমন- ১) বয়স্কদের তত্ত্বাবধানের অভাব, ২) গ্রামে শিশু পরিচর্যা কেন্দ্রের অভাব, ৩) অতি দারিদ্র্য, ৪) পুকুর-জলায়ে নিরাপদ বেষ্টনীর অভাব, এবং ৫) সাঁতার না জানা। পনেরটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে সন্দ্বীপ উপজেলা গঠিত। মেঘনা মোহনায় অবস্থিত এ দ্বীপের চারপাশে নদী বেষ্টিত। জলাশয় থেকে রক্ষার জন্য দ্বীপের ভিতরের প্রতিটি বসত বাড়ির ভিটা উঁচু ও পানির সংরক্ষণ করতে পুকুর ও আশপাশে জলাশয় সৃষ্টি করা হয়েছে। এসব পুকুর বা জলাশয়ে কোন ঘেরা বা বেড়া সাধারণত দেওয়া হয় না। এসব এলাকায় শিশুদের প্রতি অভিভাবকদের সঠিক নজরদারি ও সচেতনতার যথেষ্ট অভাব রয়েছে। ফলে শিশুরা সবার অজ্ঞাতে বেষ্টনী বিহীন পুকুরে নেমে যেতে পারে। পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যুগুলো বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, একা-একা অথবা সমবয়সি শিশুদের সাথে খেলা এবং গোসল করার সময় শিশুরা পানিতে নেমে যায়। তখনই দুর্ঘটনা ঘটে। এসব মৃত্যুর বেশিরভাগ ঘটে সকাল আটটা থেকে বিকাল দুইটার মধ্যে। এসময় অভিভাবকরা তাদের কাজে ব্যস্ত থাকে। মারা যাওয়া এসব শিশুদের অধিকাংশের বয়স দুই থেকে ছয় বছরের মধ্যে। সরকার ইতোমধ্যে 'পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যু কমানোকে গুরুত্ব দিয়ে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ শিশু অ্যাকাডেমির অধীনে "ইন্টিগ্রেটেড কমিউনিটি বেইসড সেন্টার ফর চাইল্ড কেয়ার, প্রটেকশন অ্যান্ড সুইম সেফ ফ্যাসিলিটিজ" প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।উপরিউক্ত প্রকল্পে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা সন্দ্বীপে সরকারি উদ্যোগে পানিতে পড়ে শিশু মৃত্যুহার কমানোর জন্য কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও প্রাক্তন সভাপতি এবং ডিজাস্টার এন্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন নির্বাহী ড. মোঃ ইদ্রিস আলম এর উদ্যোগে পানিতে পরে শিশু মৃত্যু প্রতিরোধ করুন দেশব্যাপী নানা কর্মসূচি বাস্তবায়িত হচ্ছে। বিষয়ে জনসচেতনতা বাড়ানো, সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং জাতীয় পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তার জন্য ২৫ জুলাই'২০২৩ ইং বিশ্বে পানিতে ডুবে মৃত্যু নিবারণ দিবস উদ্যাপন সন্দীপ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে কর্মশালা এবং বিভিন্ন জায়গায় পথসভা করা হয়।
উপযুক্ত কর্মসূচির আওতায় সন্দ্বীপে পানিতে পরে শিশু মৃত্যু প্রতিরোধে প্রথম উঠান বৈঠক গত ২২ ডিসেম্বর শুক্রবার সন্দ্বীপের সারিকাইত ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডে বিকাল শেখ বুদায় বড় বাড়িতে অনুষ্ঠিত হয়। উঠান বৈঠকে প্রায় অর্ধ শতাধিক নারী ও ২০ জন শিশু-কিশোর উপস্থিত ছিল। উক্ত উঠান বৈঠকে দাদু প্রধান নির্বাহী বলেন শিশু মৃত্যু প্রথম ও প্রধান অভিভাবকদের সচেতনতা অভাব। তাছাড়া পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যু জনসচেতনতা বৃদ্ধি, শিশুদের সঠিক তত্ত্বাবধান, পুকুর-জলাশয়ে বেষ্টনী দেয়া ও ৪-৫ বছর বয়সে শিশুদের সাঁতার প্রশিক্ষণ ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
দাদু’র উদ্যোগে স্কুল শিক্ষকগণের সহায়তার সন্দ্বীপের সারিকাইত ও মাইটভাংগা ইউনিয়নে পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যু বিষয়ে জরিপ পরিচালনা করা হচ্ছে।উপযুক্ত জরিপে ২০২৩ পানিতে ডুবে মৃত্যুকে বেইজ লাইন বছর ধরা হচ্ছে।তবে মানুষের স্মরণ সময়ের যাবতীয় শিশু মৃত্যু ও পানিতে পড়ে বেচে যাওয়ার ঘটনাও জরিপে গণনা করা হচ্ছে। উক্ত জরিপে পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যুর বয়স-লিঙ্গ , পরিবারের জনমিতি, সামাজিক-অর্থনৈতিক অবস্থা, শিশু মৃত্যু বিষয়ে উত্তর দাতার জ্ঞান এবং নিবারণ কৌশল অধ্যয়ন হচ্ছে। ২০২৪ থেকে ২০২৭ সাল পর্যন্ত উপযুক্ত ইউনিয়নে শিশু মৃত্যু নিবারণের যেমন- ১) বয়স্কদের সচেতনতা সৃষ্টি ২) গ্রামে শিশু পরিচর্যা কেন্দ্রের স্থাপন ৩) পুকুর-জলায়ে নিরাপদ বেষ্টনীর প্রদান , এবং ৫) সাঁতার প্রশিক্ষণ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে। এসব নিবারণ কর্মসূচি বাস্তবায়নের ফলে পানিতে ডুবে শি