খড় আর ভাঙাচোরা কিছু টিনে জোড়াতালি দেওয়া ঘরের বেড়া। মরিচা ধরা টিনের চালায় পলিথিনের ছাউনি। জীর্ণ এ ঘরে স্ত্রী রোকেয়া বেগম (৪৫) , মেয়ে নুর নাহার পলি (২২) মহিমা (১৪) কে নিয়ে বসবাস মোঃ গফুর (৫২)। বৃষ্টি এলেই দুর্ভোগ বাড়ে। টিনের ছিদ্র দিয়ে পানি পড়ে ভেসে যায় ঘর। একটু কোনাও ফাঁকা পাওয়া যায় না, যেখানে শুয়ে ঘুমাবেন সেখানে ও পানি পড়ে।
সন্দ্বীপ উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নে ১ নং ওয়ার্ডের আমন্দের গো বাড়িতে জরাজীর্ণ বসতঘরে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন অসহায় মোঃ আব্দুল গফুরের পরিবার । বসবাস উপযোগী ঘর নেই। আছে একট ভাঙা ছাপড়াঘর। এই ঘরে শুয়ে রাতে আকাশের তারার ছোটাছুটি দেখা যায়। কখন যে ঝড়-তুফান আসে, এমন আতঙ্কে নির্ঘুম রাত পোহাতে হয় তাদের। তার স্ত্রীসহ পরিবার একটি ভালো আশ্রয়স্থলের অভাবে বহু বছর ধরে জরাজীর্ণ বসতঘরে মানবেতর জীবনযাপন করে আসছেন। আব্দুল গফুর একজন অসহায় লোক। অন্যর কামলা কাজ করে পরিবার চালান, কিন্তু শারীরিক সমস্যার কারণে এখন কাজ করতে পারেন না। তার নিজের কোনও জমিজমা নেই। নেই কোন ছেলে সন্তান ২ মেয়ের মধ্যে বড় মেয়ে নুর নাহার সন্দ্বীপ সরকারি হাজী আবদুল বাতেন কলেজের স্নাতক ১ বর্ষের মেধাবী ছাত্রী। ছোট মেয়ে মুছাপুর হাজী আবদুল বাতেন উচ্চ বিদ্যালয়ে ৮ম শ্রণীতে পড়ছেন।
অর্থের অভাবে মেয়েদের পড়ালেখার খরচ চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন গফুর ।তবুও ২ মেয়েকে নিয়ে একবুক স্বপ্ন দেখছে তিনি । বড় হয়ে চাকরি করে পরিবারের দুঃখ দূর করবে।
শনিবার ২০ জানুয়ারী মুছাপুর ১ নং ওয়ার্ডে আমন্দের গৌ বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় গফুরের পরিবারের এ চিত্র। জরাজীর্ণ ছাড়পা টিনের ঘরটি বহু আগের তৈরি, ভিতরে গিয়ে দেখা যায়, দুই রুমে বাঁশের জরাজীর্ণ পুরাতন বেড়া, দুটি ভাঙা চকি একটিতে স্ত্রী নিযে থাকেন গফুর, অন্যটিতে দুই বোন শুন। ঘরে নেই কোন বাথরুম , পাকের ঘরটি ও গাছের পাতা মোড়ানো, কথা হয় গফুরের সাথে তিনি জানান আমাদের পূর্ব পুরুষ থেকে আমরা অনেক অবহেলিত, বাবার সামান্য ঘরের এ অংশ থেকে আমি এখানে বসবাস করছি, আগে খরের ঘর ছিল, নিজে অন্যর বদলা দিয়ে ২০০৯ সালে ছোট্ট এ ছাড়পা ঘরটি করছি, মেয়েদের নিয়ে এ ঘরে এখন বসবাসের অনুপযোগী। আমি সরকার অথবা সমাজের বিত্তবানদের থেকে সামান্য সহযোগিতা চাচ্ছি যাতে একটি ঘর পাই।
গফুরের স্ত্রী রোকেয়া বেগম জানান, আমরা এক গরীব অসহায় পরিবার, জমি জমা কিছুই নেই। পেটের তাগিদে সারাদিন অপরের বাড়িতে পরিশ্রম শেষে ঘরে এসে আরামে ঘুমাব তাও পারি না। কখন যে ঝড়-বাতাসে ঘরটি ভেঙে পড়ে এ জন্য রাত জেগে থাকতে হয়। ২ জন মেয়ের মধ্যে প্রথম মেয়ের জন্য পাত্র আসে কিন্তু ভাঙা ছোড়া ঘর বিধায় পাত্র ফেরত যায়। তাই প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটি দুর্যোগ সহনীয় ঘর পাওয়ার আকুতি করছি।
গফুরের মেয়ে এবি কলেজের স্নাতক ডিগ্রীর ছাত্রী নুর নাহার পলি বলেন আমার বাবার একজন অসহায় মানুষ আমার কোন ভাই নেই বর্তমানে বাবার শারীরিক সমস্যার কারণে কাজ করতে পারে না, এ স্মার্ট ডিজিটাল যুগে মানুষ যখন দালান কোঠায় বসবাস করে আমরা সেখানে অসহায়। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট একটি ঘর চাচ্ছি যাতে আমরা ও সুন্দর ভাবতে ভাবে বসবাস করতে পারি।