মিরসরাই-সীতাকুন্ডে বৃষ্টির পাহাড়ি পানি সংরক্ষণ করে পরিবেশবান্ধব জলধারা নির্মাণে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার ( ১১ মার্চ) সকালে চট্টগ্রামের পেনিনসুলা জিনিয়া হলে অনুষ্ঠিত সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন সাবেক মন্ত্রী, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি। পানি উন্নয়ন বোর্ড চট্টগ্রামের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী শিবেন্দু খাস্তগীর।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী (পুর) পরিকল্পনা ও পরিচালক ড. শ্যামল চন্দ্র দাস।
গেস্ট অব অনারের বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম- ৪ ( সীতাকুন্ড) আসনের সাংসদ দিদারুল আলম
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. আমিনুর রহমান পানি উন্নয়ন বোর্ডের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ( পরিকল্পনা, নকশা ও গবেষণা) মো. আমিরুল হক ভূঁইয়া, চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান।
জানা গেছে, চট্টগ্রাম জেলার পূর্ব দিকে পাহাড় এবং পশ্চিম দিকে সমুদ্র পরিবেষ্টিত মিরসরাই ও সীতাকুণ্ড উপজেলায় পাহাড়ি এলাকা হতে উৎপন্ন অসংখ্য ছোট বড় ছড়া পূর্ব-পশ্চিমে প্রবাহিত হয়ে বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়েছে । বৃষ্টি প্রবন এ অঞ্চলে বর্ষা মৌসুমে পানির প্রাপ্যতা বেশ ভালো হলেও শুষ্ক মৌসুমে পানির সংকট চরম আকার ধারণ করে। বন্দরনগরী চট্টগ্রামের সন্নিকটবর্তী বিধায় এ অঞ্চলটিতে দ্রুত শিল্পায়ন ঘটছে, ফলে পানির সংকট দিনে দিনে তীব্রতর হচ্ছে। স্থানীয় জনগণ ছোট ছোট পাহাড়ি ছড়া সমূহে মাটি দিয়ে বাঁধ নির্মাণ করে পানির চাহিদা পূরণ করার চেষ্টা করছে । বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ এবং বাঁধ নির্মাণসহ প্রয়োজনীয় জলাধার স্থাপন করা হলে সংরক্ষিত পানি কৃষিকাজ, গৃহস্থালি কাজ, এবং শিল্প কারখানা সহ বিভিন্ন প্রয়োজনে ব্যবহার করা সম্ভব হবে। উল্লিখিত প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (বাপাউবো) "চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুণ্ড উপজেলার কুমিরা ছড়া এবং মিরসরাই উপজেলার খৈয়াছড়া ও গোভানিয়া ছড়ায় বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ ও ব্যবহারে পরিবেশ বান্ধব জলাধার নির্মাণের সম্ভাব্যতা সমীক্ষা" শীর্ষক প্রকল্পটি হাতে নেয়। ২০২১ সালের ২৫ নভেম্বর পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রকল্পটির প্রশাসনিক অনুমোদন লাভ করে । প্রকল্পটির প্রাক্কলিত ব্যয় ৪৮৯.০০ লক্ষ টাকা (জিওবি) এবং বাস্তবায়নকাল ২০২১ সালের নভেম্বর, থেকে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত।
খৈয়াছড়া ও গোভানিয়া ছড়ায় বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ ও ব্যবহারে পরিবেশ বান্ধব জলাধার নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচাই, পরিবেশগত ও সামাজিক প্রভাব মূল্যায়ন করা। সমীক্ষাটি কম্পোনেন্ট-১ (হাইড্রোলজিক্যাল ও মরফোলজিক্যাল মডেলিং) ও কম্পোনেন্ট-২ (পরিবেশ ও সামাজিক প্রভাব বিশ্লেষণ) এ দুটি অংশে সম্পাদন করা হচ্ছে। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (বাপাউবো) এর উদ্যোগে প্রকল্পটির উপর সম্ভাব্যতা সমীক্ষা এই কর্মশালা সম্পন্ন হয়। বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারি প্রকল্প সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞগণ এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সুবিধাভোগীগণ কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন। আলোচনায় উপস্থিতগণ এর মতামতের ভিত্তিতে প্রকল্প এলাকার চারটি ছড়া যেমনঃ গোভানিয়া ছড়া, খৈয়া ছড়া, কুমিরা ছড়া এবং জোরামতল খালে বর্ষা মৌসুমে পানি সং রক্ষণের মাধ্যমে শুকনা মৌসুমে পানির প্রাপ্যতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এই প্রকল্পটি প্রণয়ন করা হয়েছে। প্রকল্পটি কারিগরিভাবে বাস্তবায়নযোগ্য ও অর্থনৈতিক ভাবে লাভজনক এবং পরিবেশগত ভাবে টেকসই