মিরসরাইয়ে অনুষ্ঠিত হওয়া ১০দিনব্যাপী মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলার শেষ দিন রোববার (১ জানুয়ারী) ভোর রাতে সন্ত্রাসী হামলায় ১৫ জন আহত হয়েছে। আহতরা সবাই যুবলীগ-ছাত্রলীগের কর্মী বলে জানা গেছে। এসময় ভাংচুর করা হয়েছে ৬টি মোটর সাইকেল ও মেলায় বসানো ২টি দোকান। মেলা পরিচালনার দায়িত্বে না রাখায় ক্ষোভ থেকে জোরারগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মাঈন উদ্দিন টিটুর নেতৃত্বে হামলায় করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন আহতরা। হামলায় আহতরা হলেন, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি কাউছার আহমেদ আরিফ, উপ-মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক আমজাদ হোসেন ইমন, ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি সাহেদ বীন কামাল অনিক, সাধারণ সম্পাদ সেফায়েত হোসেন, যুবলীগ নেতা রিয়াজ উদ্দিন, তারেক, ছাত্রলীগ নেতা ইমতিয়াজ উদ্দিন, আব্দুর রহমান, মিরাজ আকবর শাকিব, সাইফ উদ্দিন রিফাত, রাহুল বড়ুয়া, সরোয়ার হাসান। এছাড়া যুবলীগ নেতা মাইনুদ্দিন টিটুর অনুসারীদের আহত ৩ জনের নাম পাওয়া যায়নি। আহতদের মধ্যে কাউছার আহমেদ আরিফ, আমজাদ হোসেন ইমন, সাহেদ বীন কামাল অণিক, ইমতিয়াজ উদ্দিন, আবদুর রহমান, রাহুল বড়–য়াকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। অন্যদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। জোরারগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মানারাত চৌধুরী বাবু জানান, মেলা পরিচালনা কমিটিতে স্থান না পাওয়া সহ বিভিন্ন কারনে মেলা চলাকালিন সময় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মাঈন উদ্দিন টিটু গ্রæপের লোকজন ঝামেলা করতে চেয়েছিল কিন্তু সফল হয়নি। মেলা শেষে আমাদের নেতাকর্মী ও মেলা পরিচালনার কমিটির লোকজনের উপর জোরারগঞ্জ-মুহুরী প্রজেক্ট সড়কের প্রবেশ মুখে টিটুর নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী শর্টগানের গুলি, রকেট ল্যাঞ্জার, ককটেল হামলা, হক স্ট্রিক দিয়ে হামলা করে। তাদের হামলায় আমাদের বেশ কয়েকজন কর্মী আহত হয়েছেন। এছাড়া গুলিবিদ্ধ হয়েছেন কাউছার আহমেদ আরিফ, ইমতিয়াজ উদ্দিন, তারেক, রিফাত, সাকিব ও সরোয়ার হাসান। পিটিয়ে জখম করে পায়ের রগ ছিঁড়ে দেওয়া হয় ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সদ্য নির্বাচিত সভাপতি সাহেদ বিন কামাল অনিকের। এছাড়া ধারালো অস্ত্রের আঘাতে রাহুলের বুকের পাজর ভেঙ্গে গেছে। এদিকে হামলার পর থেকে জোরারগঞ্জ বাজারে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বাজারে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ান রয়েছে। এই বিষয়ে জানতে মাঈন উদ্দিন টিটুর ব্যক্তিগত মোবাইলে একাধিকবার ফোন করেও সংযোগ স্থাপন করা যায়নি। উপজেলার ৩নং জোরারগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও বিজয় মেলা উদযাপন পরিষদের প্রধান সমন্বয়কারী রেজাউল করিম মাষ্টার বলেন, মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা শেষে মেলা পরিচালনা কমিটির লোকজন ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের উপর প্রকাশ্যে মাঈন উদ্দিন টিটুর নেতৃত্বে গুলি করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন হামলায় আহতরা। মেলা শেষে আমরা রাতে বাড়ি চলে গিয়েছিলাম। যারা সন্ত্রাসী কর্মকাÐের মাধ্যমে কিংবা মানুষ হত্যা করে আধিপত্য বিস্তার করতে চায় তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আহŸান জানাচ্ছি। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মিনহাজ উদ্দিন বলেন, রোববার ভোররাত ৪টায় শর্টগানের ছোড়া গুলিবিদ্ধ ও শরীরের একাধিক স্থানে জখম হওয়া ১১ জনকে হাসপাতালে আনা হয়। আহতদের মধ্যে ৭জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। বাকী ৪জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। জোরারগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ জাহিদ হোসেন বলেন, রোববার ভোররাতে জোরারগঞ্জ বাজারে দুটি পক্ষের মধ্যে গোলাগুলির খবর পেয়ে আমাদের ফোর্স সেখানে ছুটে যায়। কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হয়েছে শুনেছি। এখন এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। এ ঘটনায় থানায় রোববার বিকাল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত থানায় কেউ অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ ফেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।