- সন্তান অদলবদল করায় থানায় অভিযোগ
- বিক্ষুব্ধ জনতার হাসপাতাল ভাংচুর
- পরিচালক নিজেই করলেন অস্ত্রোপচার
ফটিকছড়ি উপজেলার নাজিরহাটে ভূল চিকিৎসায় এক প্রসূতি মায়ের জীবন সংকটে পড়েছে। গত বুধবার রাতে ভুক্তভোগী রোগীর স্বজন ও স্থানীয়রা বিক্ষুব্ধ হয়ে হাসপাতালে ভাংচুর চালায়েছে। ফটিকছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পাশে অবস্থিত সেন্টাল পার্ক হসপিটাল নামক প্রাইভেট একটি হাসপাতালে এ ঘটনা ঘঠে। এছাড়া একই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার নাজিম উদ্দিন নামে এক ব্যক্তি সন্তান অদলবদলের অভিযোগ তুলে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও থানা প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে।
জানাযায়, উপজেলার ফটিকছড়ি পৌরসভার রাঙ্গামাটিয়ার জামান বেপারীর বাড়ী মৃত ফোরকান আহমেদের স্ত্রী রোকসানা আকতার মুন্নি (৩২) গত ২৪ আগষ্ট (শনিবার) সন্তান প্রসবের জন্য সেন্টাল পার্ক হসপিটালে ভর্তি হয়। একই দিন মুন্নিকে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ছেলে সন্তান প্রসব করায় অভিযুক্ত হাসপাতালের পরিচালক ডা. সোলাইমান। প্রসবের দুই দিন পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রসূতিকে শারীরিক অবস্থা অবনতি হয়েছে জানিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে।
এ ব্যাপারে রোগীর ভাই নুরুদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, সেন্টার্ল পার্ক হসপিটালে অদক্ষ চিকিৎসক ও নার্সের ভুল অপারেশনের কারণে আমার বোনের জীবন সংকটে পড়েছে। তারা সেবার নামে ব্যবসা খুলেছে। অদক্ষদের দিয়ে হাসপাতাল চালায়। তারা অতিরিক্ত টাকা হাতিয়ে নেয়ার জন্য এমন করে থাকে বলে এখন জানতে পারছি। আমরা এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চাই।
এদিকে, রোগীর অবস্থা জানার পর গত বুধবার রাতে রোগীর স্বজন ও এলাকাবাসী বিক্ষুব্ধ হয়ে হাসপাতালে ভাংচুর চালায়। পরে খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও থানা পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। অবস্থার বেগতিক দেখে হাসপাতালটির কার্যক্রম সাময়িক স্থগিত করে প্রশাসন।
অন্যদিকে, একই হাসপাতালের বিরুদ্ধে ভূজপুর হারুয়ালছড়ি এলাকার বাসিন্দা নাজিম উদ্দিন তার স্ত্রী তানজু আকতারের গর্বে জন্ম নেয়া ছেলে সন্তান পরিবর্তনের অভিযোগ তুলেছে। সে বৃহস্পতিবার ভূজপুর ও উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করে। অভিযোগে নাজিম উদ্দিন লেখেন, তার সন্তান জন্ম নেয়ার পর অবস্থা খারাপ বলে আইসিইউতে ভর্তি দেয়। তাদের সন্তানকে কাউকে দেখতে সুযোগ দেয়া হয়নি। কিন্তু তারা ছেলে সন্তান হয়েছে বলে জানায়। বিভিন্ন কাগজপত্রেও ছেলে সন্তান লিখেছে। কিন্তু আমাদের যেদিন ছাড়পত্র দেয় সেদিন বাড়িতে গিয়ে দেখি একটি মেয়ে সন্তান দেয়া হয়েছে। নাজিম উদ্দিন তার মূল সন্তান ফেরত চেয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কঠিন বিচার কামনা করেন।
এ ব্যাপারে জানতে হাসপাতালটির চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর ডা. মোঃ সোলাইমানকে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে ব্যস্থতা দেখিয়ে তিনি ফোন রেখে দেন।
অভিযোগ ও ঘটনার বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আরফিন আজিম বলেন "ঘটনার খবর পেয়ে হাসপাতালটি পরিদর্শন করেছি। সিভিল সার্জন ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে কথা বলে হাসপাতালটি সাময়িক বন্ধ করে দেওয়া হয়। ভুক্তভোগীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঘটনা তদন্তে একটি কমিটি গঠন করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ঘটনার পরে হাসপাতালে গিয়ে তাৎক্ষণিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। রোগির পরবর্তী চিকিৎসা ব্যায় সেন্টার্ল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বহন করার নির্দেশ দেওয়া হয়। এছাড়া পুলিশকে জিডি গ্রহণ,ও তদন্ত কমিটির রিপোর্ট এর বৃত্তিতে মামলা রোজো করার নির্দেশ দেওয়া হয়ছে।