বাংলাদেশের ভৌগলিক বৈচিত্রের কথা মাথায় রেখে বুঝে-শুনে উন্নয়ন কাজের পরিকল্পনা করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রোববার (২২ মে) সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ডেল্টা গভর্ন্যান্স কাউন্সিলের প্রথম সভায় তিনি এ নির্দেশনা দেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশটাকে চিনতে হবে, জানতে হবে। দেশের কিন্তু একেক এলাকা একেক রকম, সেটাও মাথায় রাখতে হবে। সেটা মাথায় রেখেই আপনাদের কাজ করতে হবে।
বাংলাদেশের ভৌগলিক বৈচিত্রের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, পদ্মা ব্রিজটা যখন হয় আমি কিন্তু ব্রিজকে ছোট হতে দেইনি। নদী যতটা ওই জায়গায় চওড়া সেটা মাথায় রেখে তারপর বাফার জোন রেখেই কিন্তু আমরা সেটা করেছি। যেজন্য ব্রিজটা সবচেয়ে দীর্ঘ হয়েছে। যমুনা ব্রিজটা (বঙ্গবন্ধু সেতু) কিন্তু এটাকে চার কিলোমিটারে কমিয়ে আনা হয়। আমি মনে করি, এটা ছিল ভুল সিদ্ধান্ত। কিন্তু ডিজাইন প্ল্যান আগেই হয়ে গিয়েছিল যেটা আমাদের বেশি কিছু করার ছিল না। আমি শুধু রেললাইনটা সংযোজন করতে পেরেছিলাম।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কাজেই আমাদের যে নদীর গতি এবং প্রতি বর্ষার পর নদীর তলদেশে মাটির চরিত্রটা কিন্তু বদলে যায়। যমুনাতে একেবারে চুলের বেণী যেভাবে ওইভাবে হয় এবং প্রতিবারেই বদলায়। ঠিক তেমন হয় আমাদের পদ্মা নদীতেও। কাজেই এগুলো মাথায় রেখেই আমাদের প্ল্যান করতে হবে। আমাদের দেশের অবস্থাটা কিন্তু একটু ভিন্ন। তাই এই ভিন্নতা মাথায় রেখেই আমাদের পরিকল্পনা নেওয়া এবং সেভাবে কাজ করতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, আমি মনে করি যে, ডেল্টা গভর্ন্যান্স কাউন্সিলের সভা থেকে একটা ভালো, যেসব এজেন্ডাগুলো আছে তার বিষয়ে ভালো একটা সুপারিশমালা যাবে, পরিকল্পনা বাস্তবায়নটা কীভাবে আমরা করতে পারি সেটা ত্বরান্বিত হবে এবং বাস্তবমুখী পদক্ষেপ কীভাবে নেব সেটাও আমাদের চিন্তা করতে হবে। সেইভাবে আমাদের এগোতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ডেল্টা প্ল্যানটা যদি আমরা ভালোভাবে একটা গাইডলাইন তৈরি করে বাস্তবায়ন করতে পারি, আর যেহেতু এটা ২১০০ সাল পর্যন্ত, তাই সময়ের সঙ্গে এটা পরিবর্তন, পরিবর্ধন, সংশোধন করতে হবে। সেইভাবেই কিন্তু আমাদের সব প্ল্যান হাতে নিতে হবে, নিয়ে আমরা কাজ করতে পারব।
তিনি বলেন, আমাদের এই অঞ্চলের মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নতি করা সবচেয়ে বড় কথা। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। সেটা মাথায় রেখে আমরা কাজ করবো।
অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক, খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক, প্রধানমন্ত্রীর এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক জুয়েনা আজিজ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া।