সদ্য অনুষ্ঠিত হওয়া দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-২(ফটিকছড়ি) আসনে নানা গুঞ্জন, ষড়যন্ত্র, শঙ্কা উপেক্ষা করে বাবার আসনটি পুনরুদ্ধার করেছেন উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সংরক্ষিত মহিলা সংসদ সদস্য খাদিজাতুল আনোয়ার সনি।
গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনে হ্যাভিওয়েট (স্বতন্ত্র) প্রার্থী পদত্যাগী উপজেলা চেয়ারম্যান হোসাইন মো: আবু তৈয়বকে ৬৩ হাজার ৭৮৩ ভোটে পরাজিত করে নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। এতে তিনি নৌকা প্রতীকে ভোট পেয়েছেন ১ লাখ ৬৮৫ ভোট। আবু তৈয়ব পেয়েছেন (তরমুজ) ৩৬ হাজার ৫৬৬ ভোট। এছাড়া বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির চেয়ারম্যান শাহজাদা সাইফুদ্দিন আহমদ মাইজভান্ডারি (একতারা) পেয়েছেন ৩ হাজার ১৩৮ ভোট। এই আসনে চৌদ্দ দলীয় জোট নেতা তরিকতের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব নজিবুল বশর মাইজভান্ডারি আওয়ামী লীগের মনোনয়নে টানা দু'বার এমপি ছিলেন। তাঁর দলীয় প্রতীক ফুলের মালা নিয়ে এবার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলেও শেষ মুহুর্তে এসে নৌকা প্রতীকের সনিকে সমর্থন দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে যান।
এই আসনে দু'বারের সংসদ সদস্য ছিলেন সদ্য নির্বাচিত সাংসদ খাদিজাতুল আনোয়ার সনির বাবা প্রয়াত আলহাজ্ব রফিকুল আনোয়ার। ১৯৯৬ সালে ১২ জুন রফিকুল আনোয়ার আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়ে সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন। ওই সময় ফটিকছড়ির মানুষের কাছে ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক হিসেবে পরিচিত রফিকুল আনোয়ারের গ্রহণযোগ্যতা ছিল তুঙ্গে। ২০০১ সালে আওয়ামী লীগের প্রতিকূল সময়েও ফটিকছড়ি থেকে বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়েছিলেন রফিকুল আনোয়ার। ওয়ান ইলেভেন পরবর্তী সময়ে অনেক রাজনীতিকের মতো রফিকুল আনোয়ারের ওপরও খড়্গ নেমে আসে। ফলে ২০০৮ সালের নির্বাচনে আর অংশ নিতে পারেননি তিনি। ২০১২ সালের ২৫ অক্টোবর মৃত্যুবরণ করেন রফিক।
এবার দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নৌকার মনোনয়ন পেয়ে তারই মেয়ে খাদিজাতুল আনোয়ার সনি ১৭ বছর পর বাবার আসনটি পুনরুদ্ধার করেন। ফটিকছড়ির জনগনের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে সনি বলেন, ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী আমাকে নৌকা প্রতীকের নমিনেশন দিয়েছিলেন। সেবার জোটের কারণে আমি নমিনেশন প্রত্যাহার করেছিলাম। ২০১৮ সালে আমাকে মহিলা সাংসদ মনোনীত করে বিশেষভাবে ফটিকছড়িতে দায়িত্ব দিয়েছিলেন। আমি সেই দায়িত্ব সততা, নিষ্ঠার সাথে পালন করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি বলে প্রধানমন্ত্রী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমাকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ হতে নৌকা প্রতীকের নমিনেশন উপহার দেয়। ফটিকছড়িবাসী নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এই আসনটি উপহার দিতে পেরে খুশী লাগছে। আমি ফটিকছড়িবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞ। তিনি বলেন, আমার বাবার মতো ফটিকছড়ির গরীব দুঃখী মেহনতি মানুষের আজীবন সেবা করে যাব। তিনি মাদক, সন্ত্রাস নির্মূল করে শান্তি প্রতিষ্ঠা ও আধুনিক ফটিকছড়ি গড়ে তুলতে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।