ফটিকছড়িতে সংঘবদ্ধ চাঁদাবাজ চক্র কর্তৃক অপহরন চেষ্টা, হুমকি ও হয়রানির প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে হেয়াকোঁ বাজারের ব্যবসায়ী ডা.মহিমুজ্জামান মজনু নামের ভুক্তভোগি এক ব্যবসায়ী। মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার সদর বিবিরহাট বাজারের একটি রেস্টুরেন্টে এই সংবাদ সম্মেলনে অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ডা.মজনু বলেন, হেয়াকোঁ বাজারে পল্লি চিকিৎসা সেবার পাশাপাশি দীর্ঘদিন ধরে ঔষধ ব্যবসা ও বীমা ব্যবসাসহ জায়গা জমি ক্রয় বিক্রয়ের ব্যবসা করে আসছেন তিনি। ব্যবসায়িক জীবনের সফলতা দেখে স্থানীয় সংঘবদ্ধ চাঁদাবাজ সিন্ডিকেটের প্রধান সেলিম সরকারের গা জ্বালা শুরু হয়ে যায়। কিছুদিন পূর্বে একটি জায়গা ক্রয় করার জন্য জায়গার প্রকৃত মালিকের সাথে আলোচনা করে মৌখিক ভাবে জায়গা ক্রয়ের বিষয়টি নিশ্চিত করি। সেলিম সরকার গং বিষয়টি জানতে পেরে গত বেশ কিছুদিন যাবত জায়গাটি ক্রয় করতে হলে তাদেরকে ৪ লাখ টাকা চাঁদা দিতে হবে বলে হুমকি প্রদান করে। তাদের এমন প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় গত ১ এপ্রিল রাত অনুমান ৮টার দিকে সেলিমসরকার গং দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্রে সজ্জিত হয়ে মজনুর ব্যবসায়িক অফিসে গিয়ে তাঁকে খোঁজতে থাকে। সেখানে না পেয়ে রাত অনুমান সাড়ে ১০ টার দিকে নামাজ শেষে মসজিদ থেকে বের হলে সেলিম সরকারের নেতৃত্বে সংঘবদ্ধ একটি গ্রুপ পথরোধ করে চার লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করেন। তাদের দাবিকৃত চাঁদা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে সেলিম সরকার ক্ষিপ্ত হয়ে লোহার রড দিয়ে মাথায় আঘাত করতে থাকে। এসময় রফিকুল ইসলাম নামের আরেকজন তার হাতে থাকা কাঠের লাঠি দ্বারা এলোপাতাড়ি আঘাত করে। এসময় ১ টি স্মার্টফোন ও নগদ সাড়ে পাঁচ হাজার ছিনিয়ে নেয় । পরবর্তীতে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে তারা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে যাওয়ার সময় চাঁদার ৪ লক্ষ টাকা না দিলে ব্যবসা করতে দিবেনা এবং এ ঘটনায় কোন প্রকার মামলা মোকদ্দমা করলে হত্যার পর লাশ গুম করার হুমকি প্রদান করে। পরে গত ৬ এপ্রিল বৃহস্পতিবার রাতে সেলিম সরকার ও তার ছোট ভাই ছাত্রলীগ নেতা হানিফ সরকারের নেতৃত্বে তার পোষ্য চাঁদাবাজ সিন্ডিকেটের ক্যাডারদের নিয়ে ডা.মজনুকে তুলে নেয়ার চেষ্টা করে। এসময় তিনি স্থানীয় দাঁতমারা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে ফোন দিলে তাৎক্ষনিক পুলিশ উপস্থিত হওয়ায় হামলাকারীরা সটকে পড়ে। বর্তমানে সেলিম সরকার গং নানাভাবে হুমকি প্রদানসহ অপহরন করার পরিকল্পনা করছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চট্টগ্রাম আদালতে একটি মামলা দায়ের করি যা বর্তমানে ট্যুরিষ্ট পুলিশের হাতে তদন্তাধীন আছে। লিখিত বক্তব্যে মজনু আরোও বলেন, বর্তমানে তাঁর পুরো পরিবার আতংকিত হয়ে উৎকণ্ঠায় দিনাতিপাত করছে। তাদের অব্যাহত হুমকির কারণে রীতিমত দৈনন্দিন ব্যবসায়ীক কর্মকান্ডও পরিচালনা করতে পারছেননা তিনি। সেলিম সরকার গংদের এহেন কর্মকান্ডে এলাকার অনেক ব্যবসায়ী ও প্রবাসী পরিবার এখন সর্বশান্ত। এদিকে সংবাদ সম্মেলন চলাকালীন সময়ে সেলিম সরকার নামের কথিত অই আওয়ামীলীগ নেতার নেতৃত্বে একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ সেখানে হানা দিয়ে ব্যানার ছিড়ে ফেলাসহ সাংবাদিকদেরকে নানা অকথ্যভাষায় গালিগালাজ করে। এসময় সংবাদ সম্মেলনের আয়োজনকারী ভুক্তভোগি ব্যবসায়ী ডা. মজনুকেও শাসিয়ে যান এ আওয়ামীলীগ নেতা। উপজেলার সুন্দরপুর ইউনিয়নের সাবেক মেম্বার জানে আলমসহ ১০/১২ জন সরকার দলীয় সমর্থক গনমাধ্যম কর্মীদের উপর চড়াও হন। এক পর্যায়ে সংবাদ সম্মেলন বন্ধ করতে চাইলে উপস্থিত গনমাধ্যমকর্মীদের তোপের মুখে পড়েন সেলিম সরকার। পরবর্তীতে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক নাজিম উদ্দিন মুহুরীর মধ্যস্ততায় পূনরায় সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। তবে একটি সংবাদ সম্মেলন চলাকালীন সময়ে সরকারী দলের নেতা পরিচয়ে সেলিম সরকারের এমন অচরনে হতবাক স্থানীয় এবং চট্টগ্রাম থেকে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত সাংবাদিকরা। সংবাদ সম্মেলনে জোর পূর্বক ঢুকে বিশৃংখলা সৃষ্টিকারী কথিত আওয়ামীলীগ নেতা সেলিম সরকারের বিরুদ্ধেই চাঁদাবাজি ও অপহরনের চেষ্টার অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেন উপজেলার হেয়াকোঁ বাজারের ব্যবসায়ী মহিমুজ্জামান মজনু।